পুরভোটে লাগামহীন ‘সন্ত্রাস’ আগরতলায় পুনর্নির্বাচনের দাবি সিপিএমেরও
অশান্তি ঠেকাতে আগরতলার সব বুথকেই ‘স্পর্শকাতর’ ঘোষণা করেছিল ত্রিপুরা রাজ্য নির্বাচন কমিশন। বুথে বুথে মোতায়েন হয়েছিল কেন্দ্রীয় বাহিনী। কিন্তু ভোটের দিন তার ‘ফল’ চোখে পড়ল না। কোথাও ভাঙা হল সিপিএমের ‘ক্যাম্প অফিস’! কোথাও রাস্তায় ফেলে পেটান হল তৃণমূল প্রার্থীকে!
রাজধানী আগরতলার পাশাপাশি রাজ্যের অন্য কয়েকটি পুর এলাকাতেও বৃহস্পতিবার ভোট-সন্ত্রাসের অভিযোগ উঠেছে প্রতিটি ক্ষেত্রেই অভিযোগের তির শাসকদল বিজেপি-র দিকে। সব মিলিয়ে বৃহস্পতিবার পুননির্বাচনে প্রায় ৭৫ শতাংশ ভোট পড়েছে।
শুধু তৃণমূল, সিপিএম, কংগ্রেসের মতো বিরোধীরা নয়, আগরতলার বিজেপি বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মণের গলাতেও শোনা গিয়েছে সন্ত্রাসের অভিযোগ। নিজের দল বিজেপি-কেই দুষেছেন তিনি। প্রাক্তন মন্ত্রী সুদীপ বলেছেন, ‘‘বহিরাগতদের এনে ভোট করানো হয়েছে। বাধা দেওয়া হয়েছে ভোটারদের।’’ সেই সঙ্গেই মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের উদ্দেশে তাঁর কটাক্ষ, ‘‘ভয় দেখিয়ে ভোট না করালেও পারতেন মুখ্যমন্ত্রী। নেতৃত্বের শিশুসুলভ আচরণের জন্য দলের বদনাম হচ্ছে। মানুষের অভিশাপ কুড়োতে হচ্ছে।’’
ভোটপর্ব শেষের আগেই সিপিএমের তরফে আগরতলার সব বুথে পুনর্নির্বাচন দাবি করা হয়েছে। বাম প্রার্থীদের উপর হামলা এবং ভোট লুঠের অভিযোগ আগরতলা পশ্চিম থানার সামনে বিক্ষোভও শুরু করেন বাম কর্মী-সমর্থকেরা। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক জিতেন্দ্র চৌধুরীর অভিযোগ, কেন্দ্রীয় বাহিনীয় সামনের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে বুথ দখল করে ছাপ্পা ভোট দিয়েছে বিজেপি। ৮ নম্বর ওয়ার্ডে হামলার শিকার বিরোধীরা।
বিলোনিয়া এবং আমবাসার মত পুরসভাতেও সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলেছে বামেরা। যদিও বিজেপি-র দাবি, সুষ্ঠু এবং অবাধ ভোট হয়েছে। দলের তরফে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ত্রিপুরার মানুষ বিরোধীদের যাবতীয় প্ররোচনা এবং ষড়যন্ত্রের জবাব দিয়েছেন। প্রতিরোধ গড়ে তুলেছেন। ভোটকর্মী এবং পুলিশকর্মীরাও সুষ্ঠু এবং অবাধ ভোট কারতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছেন। তাঁদের ধন্যবাদ জানাই।’’
অন্যদিকে, ভোট-সন্ত্রাসের অভিযোগে বৃহস্পতিবার বিকেলে আগরতলা পশ্চিম থানার সামনে অবস্থান বিক্ষোভে বসেন তৃণমূলের রাজ্য আহ্বায়ক সুবল ভৌমিক-সহ দলের নেতা-কর্মীরা। সুবল বলেন, ‘‘শাসকদল গণতন্ত্রকে প্রহসনে পরিণত করেছে।’’ তাঁর অভিযোগ, ৫১ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী তপন বিশ্বাস বিজেপি-র হামলায় জখম হয়েছেন। বিদায়ী কাউন্সিলর তথা ১০ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী পান্না দেবের এক পোলিং এজেন্টকে মেরে বার করে দিয়েছে বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। একই ঘটনা ঘটেছে ৫ নম্বর ওয়ার্ডেও।