কীভাবে প্রতিরোধ করা সম্ভব ওমিক্রনকে? জানালেন হু প্রধান
ওমিক্রন অনেক বেশি সংক্রামক, আগেই জানিয়েছিল বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা WHO। যদিও তারা বার বারই বলেছিল, আরও বেশ কিছুদিন পর্যবেক্ষণের পর এ বিষয়ে খানিকটা হলেও সঠিক তথ্য পাওয়া সম্ভব হবে। বুধবার সে প্রসঙ্গেই WHO জানাল, ওমিক্রনে সংক্রমিত ব্যক্তির দেহে উপসর্গ তুলনামূলক ভাবে কম হতে পারে। অন্তত প্রাথমিক পরিসংখ্যান এখনও পর্যন্ত তেমনটাই ইঙ্গিত করছে। ওমিক্রনকে ঠেকানো সম্ভব, জানান WHO প্রধান। সংক্রমণ চেন ভাঙলেই এই ভ্যারিয়্যান্টের দাপট ঠেকানো সম্ভব বলে জানিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি Delta-র থেকে এই ভ্যারিয়্যান্ট কম ভয়াবহ বলে প্রাথমিক দাবি বিশেষজ্ঞদের। যদিও এই বিষয়ে আরও তথ্যের প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন WHO প্রধান।
গত নভেম্বরে পৃথিবীর প্রায় সব দেশকেই হুঁশিয়ারি দিয়ে WHO বলেছিল ওমিক্রনের সংক্রামক ক্ষমতা অনেক বেশি হতে পারে। এমনকী, এর আগে অন্য প্রজাতির করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত বা টিকা নেওয়া ব্যক্তিকেও সংক্রমিত করার ক্ষমতা রাখে ওমিক্রন। তবে সে ক্ষেত্রে উপসর্গ বেশ খানিকটা কম হবে। বুধবার বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেড্রস আধানোম ঘেব্রেইসাস বলেন, ‘দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে পাওয়া পরিসংখ্যান বলছে ওমিক্রন সংক্রমণের ভয় থেকে যাচ্ছে যে কোনও মানুষের। তিনি কোভিড-জয়ী হোন বা টিকা প্রাপ্ত। কিন্তু, সেই পরিসংখ্যান থেকেই এমন প্রমাণও মিলছে, যাতে মনে করা যেতে পারে ওমিক্রন সংক্রমিতদের উপসর্গ খানিকটা কম হবে। কিন্তু এখনি কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছনো ঠিক হবে না। এ জন্য আরও তথ্য পরিসংখ্যান যাচাই করা প্রয়োজন।’ পাশাপাশি তিনি পৃথিবীর সব দেশের ওমিক্রন চিত্রটা পরিষ্কার করে তুলে ধরতে অনুরোধ করেন।
WHO-এর তরফে দেওয়া এ দিনের বার্তাকে আশাব্যঞ্জক বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। নভেম্বরে ওমিক্রন সংক্রমণের ক্ষেত্রে হুঁশিয়ারি দেওয়ায় প্রায় ১২টি দেশের সীমান্ত বন্ধ হয়ে যায়। ফলে শুধু সেই দেশগুলিই নয়, সারা বিশ্বজুড়েই ফের লকডাউনের আশঙ্কা তৈরি হয়। সেই আশঙ্কায় খানিকটা স্বস্তির হাওয়া বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার এ দিনের বার্তা। যদিও ওমিক্রন নিয়ে সতর্কবার্তা জারি রেখেছেন টেড্রস। তিন বলেছেন, কোনও রকম আত্মতুষ্টিই প্রাণঘাতী হতে পারে। আমাদের সতর্কতা বজায় রাখতে হবে। করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কোনও ভাবেই কোনও ঢিলেমি চলবে না।
বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার তরফে মাইকেল রায়ান জানান, এখনও পর্যন্ত পাওয়া তথ্য থেকে বোঝা যাচ্ছে ওমিক্রন অনেক বেশি সংক্রামক, ডেল্টার তুলনায় তো বটেই। ‘কিন্তু তার মানে এটা নয়, যে এই ভাইরাসকে রোখা সম্ভব নয়। মানুষের মধ্যে অনেক সহজে ছড়িয়ে পড়ছে ওমিক্রন। ফলে আমাদের দ্বিগুণ সতর্কতার সঙ্গে সেই সংক্রমণ শৃঙ্খলকে ভেঙে দিতে হবে’, বলেন রায়ান।
চিকিৎসকেরা মনে করছেন, যদি ধরে নেওয়া যায় যে ওমিক্রনের মারণ ক্ষমতা কম, তা হলেও গাফিলতির কোনও জায়গা নেই। কারণ ওমিক্রনের সংক্রামক ক্ষমতা এত বেশি যে তা অনেক বেশি মানুষকে তাড়াতাড়ি আক্রমণ করছে। আর অনেক বেশি সংক্রমণ হলে দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়তে পারে। তার ফলে মৃত্যু বাড়তে পারে। সে ক্ষেত্রে টিকাকরণের উপরও জোর দিতে হবে বলে মনে করছেন তাঁরা।
বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান বিজ্ঞানী সৌম্যা স্বামীনাথন বলেন, সামান্য তথ্যের উপর ভিত্তি করে এমনটা ভাবার কোনও কারণ ঘটেনি যে, টিকাকরণ আর কাজে দেবে না। এখনও অনেক পরীক্ষা বাকি রয়েছে। ফলে এত সহজে কিছু বলা সম্ভব না।