রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

গত অর্থবর্ষের তুলনায় এবার প্রায় ৫০০০ কোটি টাকা বেশি জিএসটি আদায় রাজ্যে

December 15, 2021 | 2 min read

করোনা পরিস্থিতিতেও জিএসটি আদায় বাড়ল রাজ্যে। গত অর্থবর্ষের তুলনায় এবার প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকা বেশি জিএসটি আদায় হয়েছে। আপাতত এতেই সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে বাংলাকে। কারণ, কথা দিয়েও জিএসটি ক্ষতিপূরণের টাকা কেন্দ্র এখনও মেটায়নি। ডিসেম্বর চলে এলেও যেমন চলতি অর্থবর্ষের বকেয়া টাকা তারা মেটায়নি, তেমনই গত অর্থবর্ষের টাকাও এখনও পাওনা আছে। সব মিলিয়ে বকেয়া প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকা। সেই টাকা কবে মেটাবে মোদী সরকার, তার কোনও উত্তর নেই নবান্নের কাছে।

যে এলাকায় পণ্য বা পরিষেবা বিক্রি হয়, জিএসটি আদায় হয় সেখানেই। অর্থাৎ পণ্যের উৎপাদন যেখানেই হোক না কেন, ক্রেতারা তার দাম যে রাজ্যে মেটান, সেই রাজ্যের ভাঁড়ারে আসে জিএসটি বাবদ করের টাকা। রাজ্য অর্থদপ্তরের তথ্য প্রমাণ করছে, এখানে করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও আর্থিক কর্মকাণ্ড চাঙ্গা আছে। সেই কারণেই জিএসটি আদায় ভালো। সূত্রের খবর, এরাজ্যে গত এপ্রিল থেকে নভেম্বর পর্যন্ত জিএসটি আদায় হয়েছে প্রায় ১৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে শুধু নভেম্বরেই আদায়ের পরিমাণ প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা। অথচ গত অর্থবর্ষের এপ্রিল থেকে নভেম্বর পর্যন্ত এরাজ্যে জিএসটি আদায় হয়েছিল প্রায় ১৪ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। অর্থাৎ এবছর প্রথম আটমাসে আদায় বেড়েছে প্রায় ৪ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। আদায় বৃদ্ধির হার প্রায় ৩৩ শতাংশ। অর্থদপ্তরের কর্তারা বলছেন, করোনা সংক্রমণ গত অর্থবর্ষের তুলনায় এবছর অনেক বেশি ছিল। এবার লকডাউন হয়নি ঠিকই। কিন্তু প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ কোনও অংশেই আলগা ছিল না। তার সামগ্রিক প্রভাব পড়েছে অর্থনীতিতে। এরপরও জিএসটি আদায় প্রায় ৩৩ শতাংশ বৃদ্ধি পাওয়া মোটেই সহজ কথা নয়। এক্ষেত্রে রাজ্য জিএসটি কর্তা ও কর্মীদের প্রচেষ্টাকে মোটেই অবহেলা করার নয়, বলছেন দপ্তরের কর্তারা। অন্যদিকে, মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা অমিত মিত্রের ব্যাখ্যা, এই সাফল্যের অনেকগুলি কারণ আছে। তার মধ্যে অন্যতম বিভিন্ন সরকারি প্রকল্প চালু করে বাজারে চাহিদা বাড়ানো। রাজ্যের অর্থমন্ত্রী থাকাকালীন স্টেট লেভেল ব্যাঙ্কার্স কমিটির বৈঠকে গত অর্থবর্ষের জন্য ৯০ হাজার কোটি টাকার ঋণ দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেন অমিতবাবু। তাঁর দাবি, ৮৭ হাজার কোটি টাকার ঋণ মঞ্জুর হয়েছে। ঋণ নেওয়ার পর, বাজারে তার সুফল পেতে কিছুটা সময় লাগে। সেই সুফল বাজারে মিলতে শুরু করেছে বলে দাবি করেছেন অমিতবাবু। তিনি বলেন, চর্ম, সিমেন্ট বা ইস্পাতের মতো কয়েকটি শিল্প খুব ভালো ব্যবসা করছে। সার্কেল রেট ও স্ট্যাম্প ডিউটির আর্থিক ছাড় চাঙ্গা করেছে আবাসন শিল্পকে। এই সবেরই প্রভাব পড়েছে জিএসটি আদায়ে।

এ তো গেল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের সাফল্যের কথা। কিন্তু মোদী সরকার কী করছে? জিএসটি চালু হলে রাজ্যগুলির নিজস্ব আয় কমবে, এমন আশঙ্কা ছিল। ঠিক হয়, রাজ্যগুলিকে জিএসটি বাবদ ক্ষতিপূরণ দেবে কেন্দ্র। জিএসটি প্রথা চালু হওয়ায় যে রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে, তা সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলিকে পুষিয়ে দেবে কেন্দ্র। এটি রাজ্যগুলির সাংবিধানিক অধিকার। কিন্তু সেই অধিকারকে থোড়াই কেয়ার করছে কেন্দ্র, অভিযোগ এমনই। অমিতবাবু বলেন, গত অর্থবর্ষের জিএসটি ক্ষতিপূরণ বাবদ পশ্চিমবঙ্গের প্রাপ্য টাকা থেকে এখনও পর্যন্ত ২০৮০ কোটি টাকা কম দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। এমনকী চলতি বছরে ৩ হাজার ৪৩৬ কোটি টাকা তারা দেয়নি। এটি শুধু সংবিধানকে অগ্রাহ্য করা নয়, রাজ্যের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতাও বটে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#GST, #West Bengal, #Mamata Banerjee

আরো দেখুন