আরও বেসরকারি ব্যাঙ্ককে লাইসেন্স দেওয়ার পথে কেন্দ্র
আরও বেশি করে ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থার চালিকাশক্তি হতে চলেছে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা। ক্রমশ এই সিদ্ধান্তের দিকেই অগ্রসর হচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার। ইতিমধ্যেই সিদ্ধান্ত হয়েছে সরকারি ব্যাঙ্ক বিক্রি করা হবে। এতকাল ধরে পৃথক অস্তিত্ব থাকা ব্যাঙ্কগুলিকে ২০১৭ সাল থেকে সংযুক্ত করে ধীরে ধীরে সরকারি ব্যাঙ্কের সংখ্যা ও পরিধি কমিয়ে দেওয়া হচ্ছে। সরাসরি অর্থমন্ত্রক জানিয়েও দিয়েছে, মাত্র কয়েকটি হাতে গোনা ব্যাঙ্ককে বাদ দিয়ে অধিকাংশেরই বেসরকারিকরণ হবে। এই ঘোষণা আগেই হয়েছে। এরই পাশাপাশি এবার একের পর এক নতুন বেসরকারি ব্যাঙ্ককে লাইসেন্স দেওয়ার সিদ্ধান্তও বাস্তবায়িত হতে চলেছে।
দেশের বৃহৎ কর্পোরেট সংস্থাগুলি ব্যাঙ্ক স্থাপনের লাইসেন্স পাওয়ার আবেদন অনেকদিন ধরেই করে চলেছে। গত এপ্রিল মাসেই মোট ৮টি বেসরকারি সংস্থার পক্ষ থেকে লাইসেন্স চেয়ে আবেদন করা হয়েছিল। জুন মাসে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক একটি কমিটি গঠন করেছিল। ওই কমিটির উপর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল নতুন লাইসেন্স দেওয়ার সিদ্ধান্তকে চূড়ান্ত করে সুপারিশ করা যে, কোন কোন সংস্থা ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থায় প্রবেশ করার যোগ্যতামান পূরণ করছে। গত মাসেই ওই কমিটি (ইন্টারনাল ওয়ার্কিং গ্রুপ) তাদের রিপোর্ট জমা দিয়েছে। জানা যাচ্ছে, আসন্ন নতুন বছরেই একঝাঁক নতুন বেসরকারি ব্যাঙ্ক পেতে চলেছে ভারত। এই কমিটি মোট ৩৩টি সুপারিশ দিয়েছিল। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ২১ টি সুপারিশ গ্রহণ করেছে। বৃহৎ কর্পোরেট সংস্থাগুলিকে ব্যাঙ্ক নির্মাণের প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে দেওয়া হোক এই সুপারিশই করেছে সংশ্লিষ্ট কমিটি।
জানা যাচ্ছে, সেই সুপারিশের সবটাই এখনই মেনে নেওয়া হবে না। অর্থাৎ বৃহৎ কর্পোরেটকে ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্রে প্রবেশাধিকার দেওয়া হবে না। তবে বাকি যে ৮টি সংস্থা এপ্রিল মাসে আবেদন করেছিল তাদের মধ্যে সম্ভবত অনেকেই পেতে চলেছে লাইসেন্স। তবে নতুন লাইসেন্স পেতে হলে অনেক বেশি কড়া নিয়মকানুনের মধ্যে দিয়ে যেতে হবে বেসরকারি সংস্থাকে। ইউনিভার্সাল ব্যাঙ্ক ব্যবস্থায় লাইসেন্স পেতে হলে এখন থেকে ১ হাজার কোটি টাকার প্রাথমিক পুঁজি থাকতে হবে। যা আগে ছিল মাত্র ৫০০ কোটি টাকা। আরও নতুন নতুন আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে ব্যাঙ্কিং সেক্টরে প্রবেশ করতে দেওয়া উচিত কি না তা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই চলছে বিতর্ক।
বর্তমানে যে ব্যাঙ্কগুলি আছে সেগুলির পারফরম্যান্স থেকেই স্পষ্ট, এখনও বহু বেসরকারি ব্যাঙ্ক নিয়মকানুন মেনে ব্যাঙ্ক পরিচালনা করতে অক্ষম। ইয়েস ব্যাঙ্ক থেকে পিএমসি, একের পর এক অনিয়মের ঘটনাও সামনে আসছে। প্রতিটি ক্ষেত্রেই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক এগিয়ে আসছে সঙ্কট নিরসনে। সেই কারণেই বর্তমানে চালু থাকা সরকারি ও বেসরকারি ব্যাঙ্ক ব্যবস্থাকেই আরও শক্তিশালী করা হোক, এই দাবি তোলা হয়েছে কয়েকটি মহল থেকে।