দেশ বিভাগে ফিরে যান

বাংলায় আম্পান, ডেঙ্গু মোকাবিলায় ব্যবহৃত ড্রোন উড়ল অসমের প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে

January 27, 2022 | 2 min read

মহামতি গোখলে বলেছিলেন, “বাংলা যা আজ ভাবে, আগামীকাল ভারত তা ভাববে।” মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে সেই কথারই বাস্তবায়ন ঘটেছে। মুখ্যমন্ত্রীর এগিয়ে বাংলার স্বপ্ন এখন সর্বন্তকরণে সফল এবং বাস্তবায়িত হয়েছে। বাংলায় বিপর্যয় মোকাবিলায় এবং রোগ প্রতিরোধে ব্যবহৃত হওয়া ড্রোন এবার উড়ল অসমে । আজ অসম সরকার যে প্রযুক্তির প্রচলনের জন্য প্রচার চালাচ্ছে, অর্ধ দশক ধরে বাংলা সেই প্রযুক্তিই ব্যবহার করে চলেছে।


গতকাল অসমের কামরূপ জেলায় প্রজাতন্ত্র দিবসে উড়ল বিশেষ ক্ষমতাসম্পন্ন ড্রোন, উত্তর-পূর্ব ভারত এই প্রথমবারের জন্য এমন অনুষ্ঠানের সাক্ষী থাকল। ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলোজি, গৌহাটির পর্যবেক্ষণে ড্রোনস টেক ল্যাব নামের একটি স্টার্ট আপ কোম্পানি এই ড্রোনগুলি নির্মাণ করেছে। 


দেবজিৎ দেকা, বিশ্বজিৎ দে এবং রীতেশ কানু তিনজন বন্ধু মিলে ২০১৬ সালে এই স্টার্ট আপ কোম্পানির প্রতিষ্ঠা করেন। তারাই ড্রোনের উদ্ভাবক। আই আই টি গোয়ার রিসার্চ পার্কে, আই আই এম কলকাতার ইনকিউবেশানে তারা কাজ করছেন।


নির্মাতাদের তরফে জানা গিয়েছে, বিপর্যয় মোকাবিলা, কৃষি কাজের বিভিন্ন অনুসন্ধান, মানচিত্র নির্মাণ এবং বিভিন্ন সমীক্ষা করতেই এই ড্রোনগুলি নির্মাণ করা হয়েছে। 


২০১৮ সালে কলকাতা পৌর সংস্থা প্রথম এই বিশেষ ড্রোন প্রযুক্তি ব্যবহার করেছিল। ড্রোন টেক ল্যাবের তৈরি করা ড্রোন কলকাতায় ডেঙ্গু মোকাবিলায় ব্যবহৃত হয়েছিল। ম্যাপিং ড্রোন এবং হেভি প্লেলোড ড্রোন ৬-৭ একর এলাকা জুড়ে ৯-১০ মিনিটের মধ্যে ১০- ১৬ লিটার তরল ছড়িয়ে দিতে পারে। ডেঙ্গু মোকাবিলায় এই বিশেষ ক্ষমতাসম্পন্ন ড্রোনকেই হাতিয়ার করেছিল কলকাতা পৌরসভা। যার ফলে ২০১৮ সালে প্রায় ৩০ শতাংশ ডেঙ্গুর প্রকোপ কমে গিয়েছিল।


২০২০ সালে ঘূর্ণিঝড় আম্পানের পরেও বাংলায় উদ্ধারকার্যে এই ড্রোন ব্যবহার করা হয়েছিল। ড্রোন টেক ল্যাবের বানানো ড্রোনগুলি উদ্ধারকার্যে নিযুক্ত দলগুলির পথ প্রদর্শকের ভূমিকা পালন করেছিল। সঠিক সময়ে সঠিক তথ্য পেলে বিপর্যয় মোকাবিলা অনেক সহজ হয়ে যায়। ড্রোনের মাধ্যমে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী ঘূর্ণিঝড় বিধ্বস্ত এলাকার প্রতি মুহূর্তের খবর পেয়েছিল। ড্রোনের দ্বারা পরিস্থিতির প্রকৃত অবস্থা সম্পর্কে সম্যক ধারণা পেয়ে, পরিকাঠামোর ক্ষয়-ক্ষতি খতিয়ে দেখে সেই অনুযায়ী পরিকল্পনা করতে অনেক সুবিধা হয়েছিল। কোথায় কী দরকার তাও দ্রুত জানা গিয়েছিল, ড্রোন থাকার ফলে আটকে পরা লোকেদের চিহ্নিত করাও অনেক সহজ হয়েছিল। 


সেই ড্রোনগুলোকেই গতকাল কামরূপের ডেপুটি কমিশনারের অফিসের পার্শ্ববর্তী কুমার ভাস্কর বর্মন ক্ষেত্র মাঠে প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে ব্যবহৃত হতে দেখা গেল। প্রায় কুড়ি মিনিটের ড্রোন শো চলে। ড্রোনের মাধ্যমে আকাশে জাতীয় পতাকা উন্মোচন করা হয়, গোটা ঘটনা ড্রোনের মাধ্যমেই রেকর্ড করা হয়েছে। আয়োজকদের দাবি, বিপর্যয় মোকাবিলা এবং রোগ প্রতিরোধে ড্রোন প্রযুক্তি ব্যবহারের প্রচলনের জন্য মানুষকে জানাতে, প্রচার করতেই এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। যে প্রযুক্তি প্রচলনের জন্য আজ আসামে প্রচার চালানো হচ্ছে, সেই প্রযুক্তি গত চার-পাঁচ বছর যাবৎ বাংলায় ব্যবহৃত হচ্ছে।


এখানেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের দুরদর্শিতার পরিচয় পাওয়া যায়। 

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#assam, #dengue, #Drone, #amphan, #Assam republic day

আরো দেখুন