কঠোর বিধি নিষেধের মধ্যেও চাঙ্গা বাংলার অর্থনীতি, জানুয়ারিতে জিএসটি আদায়ের পরিমাণ ২৭০০ কোটি টাকা
সঙ্কটেও সচল অর্থনীতি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাংলার এটাই এখন ক্যাচলাইন। আর তার প্রমাণও বারবার দিয়েছে এরাজ্য। এমনকী চলতি অর্থবর্ষে দু’বার। প্রথম ধাক্কাটা এসেছিল মে মাসে—করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। আর চলতি ঢেউ গত মাসে। উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, তার মধ্যেও শুধু জানুয়ারিতে জিএসটি আদায় বাবদ রাজ্যের কোষাগারে এসেছে ২ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। গত বছর মার্চ মাসে ৩ হাজার ১০০ কোটি টাকার রেকর্ড আদায়ের পর জিএসটি খাতে এটাই নজির বাংলার। একইসঙ্গে ২০২১-২২ অর্থবর্ষে এ পর্যন্ত সর্বাধিকও বটে।
সরকারি মহলের বক্তব্য, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের জীবন-জীবিকার সঙ্গে কোনওরকম আপস না করাতেই এই সাফল্য। সেই কারণেই কঠোর বিধি-নিষেধ সত্ত্বেও এসজিএসটি ও আইজিএসটি মিলিয়ে ২ হাজার ৭০০ কোটি টাকা আদায় হয়েছে বাংলায়। শুধু তাই নয়, চলতি অর্থবর্ষে মাসে গড়ে এসজিএসটি ও আইজিএসটি বাবদ আদায় হয়েছে প্রায় ২ হাজার ৫৫০ কোটি টাকা। আর অর্থদপ্তরের কর্তারা বলছেন, জিএসটি বাবদ লক্ষ্মীলাভে অন্যতম ভূমিকা নিয়েছে লটারি ব্যবসা।
জানুয়ারিতে শুধুমাত্র লটারির টিকিট বিক্রির জন্য রাজ্যে জিএসটি আদায় হয়েছে ৪০০ কোটি টাকার উপর। এরাজ্যে আবগারির পরে লটারিই এখন রাজস্ব আদায়ে দ্বিতীয় স্থানে। আবগারি শুল্ক বাবদ বছরে বাংলার রাজস্ব আদায় হয় প্রায় ১৩ হাজার কোটি টাকা। আর লটারি থেকে জিএসটি আসে প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি। মাসে অন্তত ৩০০ কোটি টাকার রাজস্ব আসে লটারি ব্যবসা থেকে। রাজ্য সরকারের নিজস্ব লটারি গত দু’বছর যাবৎ বন্ধ রয়েছে। সেই জায়গা নিয়েছে বেসরকারি লটারি সংস্থা। পাশাপাশি নাগাল্যান্ডের মতো অন্য রাজ্যের লটারিও চলছে রমরমিয়ে। মূলত তার থেকেই রাজস্ব আদায় বেড়েছে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের। এরাজ্যে সর্বাধিক জিএসটি আদায় হচ্ছে তামিলনাড়ুর একটি সংস্থা থেকে—ফিউচার গেমিং অ্যান্ড হোটেল সার্ভিসেস প্রাইভেট লিমিটেড। ভারত তথা বিশ্বের কাছে ‘লটারি কিং’ নামে পরিচিত সান্তিয়াগো মার্টিনের সংস্থা এটি। শুধু পশ্চিমবঙ্গে নয়, দেশের পয়লা নম্বর জিএসটি প্রদানকারী সংস্থা হিসেবেও উঠে এসেছে এই ফিউচার গেমিংয়ের নাম। ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে বাংলায় এই সংস্থার হাত ধরে জিএসটি এসেছিল ১ হাজার ৮৮২ কোটি টাকার। পরের বছর তা দাঁড়ায় ২ হাজার ৮১৬ কোটি টাকায়। ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে এই অঙ্ক ছিল ৩ হাজার ১৫৮ কোটি। গত অর্থবর্ষে তা আরও বেড়ে পৌঁছয় ৩ হাজার ৩৯৩ কোটি টাকায়।
অর্থদপ্তরের আধিকারিকরা বলছেন, চলতি মাসে করোনার দাপট অনেকটাই কমেছে। আগামী মাসে তা আরও কমবে এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বাড়বে। তাই আগামী মার্চেও এরাজ্যের জিএসটি আদায় গত মার্চের অঙ্ককে ছাড়িয়ে যাবে বলে আশায় আছে অর্থদপ্তর। এই মুহূর্তে