বিনোদন বিভাগে ফিরে যান

প্রয়াত প্রিয় বন্ধু লতা, জানানো হয়নি অসুস্থ সন্ধ্যাকে

February 7, 2022 | 2 min read

১৯২৯ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর আর ১৯৩১ সালের ৪ অক্টোবরের মধ্যে ফারাক কত? দু’বছর বড়জোর। বয়স বাড়তে থাকলে, অভিজ্ঞতার সমুদ্র পেরতে থাকলে দু’বছরের ফারাক কিছুই নয়। আসলে যে তাঁরা ‘বন্ধু’। হ্যাঁ, কে পর্বতপ্রমাণ প্রতিষ্ঠা পেয়েছেন, কে শেষ ল্যাপ অবধি তাঁকে ছুঁতে পারেননি, ছুঁতে দেওয়া হয়নি—এনিয়ে তর্কের শেষ নেই। তারপরও আসলে তাঁরা বন্ধুই। বছর কয়েক আগেও যখন ফোনে কথা হয়, লতা তাঁকে শুনিয়েছিলেন, ‘আকাশ প্রদীপ জ্বলে…’। আর উনি শোনান ‘ঘুম ঘুম চাঁদ, ঝিকিমিকি তারা’। তার আগেও কত কত স্মৃতি।
কঠিন দিনগুলিতে শচীনকর্তার আমন্ত্রণে মুম্বইয়ে গিয়ে গান গাওয়ার সময় বান্দ্রার এক হোটেলে থাকার সময়ে বন্ধু লতা চলে আসতেন তাঁর কাছে। সুখ-দুঃখের গল্প হতো, একসঙ্গে খাওয়া-দাওয়া হতো। পেশাদারি জগতে একসঙ্গে গান—তাও কত হয়েছে। যেমন ‘তারানা’ ছবিতে লতা গেয়েছেন মধুবালার লিপে, উনি গেয়েছিলেন সেসময়ের উঠতি নায়িকার শ্যামার লিপে। কলকাতায় ওঁর ঢাকুরিয়ার পৈতৃক বাড়িতেও গিয়েছেন লতা।

সেই ‘বন্ধু’, সেই সখীর মৃত্যুসংবাদ যদি খারাপ শরীরে উথালপাথাল আনে, যদি সদ্য কোভিডের মারাত্মক বিপদ থেকে একটু সুস্থ হয়ে ওঠা শরীরকে কাহিল করে দেয়, তাই গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়কে রবিবার জানানোই হয়নি লতার মৃত্যুসংবাদ। রবিবার গীতশ্রীর কন্যা সৌমী সেনগুপ্ত বলেন, আমরা হাসপাতালে বলে রেখেছি যেন লতাজির মৃত্যুসংবাদ কোনওওভাবেই তাঁকে না দেওয়া হয়। মা আঘাত পেতে পারেন। আশা করি, হাসপাতাল কথা রাখবে। বাইপাসের সেই হাসপাতালের শীর্ষকর্তা রানা দাশগুপ্ত বলেন, গীতশ্রীর পরিবারের বার্তা পেয়েছি। চিকিৎসকদের জানানোও হয়েছে সেই কথা। এখনও পর্যন্ত আমাদের তরফ থেকে কেউ ওঁকে ওই দুঃখের খবর দেননি। দু’জনেই কিংবদন্তি শিল্পী। বন্ধু। একজনের খারাপ খবর অন্যজনের মনে কী উথালপাথাল আনবে, কেউ জানেন না।

হাসপাতাল সূত্রের খবর, প্রায় দেড় সপ্তাহ হল এখানে ভর্তি আছেন গীতশ্রী। কোভিড নিউমোনিয়া, হার্টের জটিল অসুখ, পায়ের সমস্যা, কিডনির কাহিল অবস্থা—অসুখে জর্জরিত ছিলেন বাংলা গানের সম্রাজ্ঞী। ‘এখন অনেকটাই ভালো আছেন। সম্পূর্ণ জ্ঞান আছে। ধীরে ধীরে কথা বলছেন। রাইলস টিউব খুলে দেওয়া হয়েছে। নিজে খেতে পারছেন। রিপোর্ট পজিটিভ থাকলেও কোভিডের প্রকোপ নেই। অ্যান্টিবডি পর্যাপ্ত আছে। ফুসফুসও ভালো কাজ করছে। হার্ট-কিডনি দু’টিই আগের থেকে অনেকটা ভালো।’ গানের জগৎকে দুঃসংবাদে রুদ্ধ করে দেওয়া দিনে অন্তত কিছুটা স্বস্তি দিলেন হাসপাতালে ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটের চিকিৎসক ডাঃ সুরেশ।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Lata Mangeshkar, #Sandhya Mukherjee

আরো দেখুন