স্কুল পড়ুয়াদের জুতো-ব্যাগ তৈরি করেই সাড়ে তিন লক্ষ কর্মদিবস সৃষ্টি রাজ্যে
স্কুল ইউনিফর্মের পাশাপাশি পড়ুয়াদের জুতো ও ব্যাগ দেয় রাজ্য। পড়ুয়াদের পোশাক তৈরি হচ্ছে রাজ্যেই। এবার প্রয়োজনীয় সংখ্যক জুতো ও ব্যাগও রাজ্যের ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র প্রস্তুতকারকদের দিয়ে তৈরি করানোর উদ্যোগ নিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। আর এতে কাজ পাবেন রাজ্যের বহু মানুষ। সৃষ্টি হবে ৩ লক্ষ ৫০ হাজার কর্মদিবস।
এবছর রাজ্য কিনবে প্রায় ১০ লক্ষ ৭৪ হাজার জুতো ও ১৪ লক্ষ ব্যাগ। যা বিতরণ করা হবে রাজ্যের অধীনে থাকা স্কুলের পড়ুয়াদের মধ্যে। এপ্রিলেই অধিকাংশ ছাত্রছাত্রী পেয়ে যাবে ব্যাগ ও জুতো।
বিগত বছরগুলিতে স্কুল শিক্ষাদপ্তর সরাসরি এই জুতো ও ব্যাগ কিনত। তাতে মূলত বড় বড় প্রস্তুতকারকরাই জুতো ও ব্যাগ সরবরাহ করতে পারত। তৃতীয়বার সরকার গঠনের পর মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দেন স্কুলপড়ুয়াদের পোশাক, ব্যাগ ও জুতো রাজ্যেই তৈরির উদ্যোগ নিতে হবে। এতে উন্নতি হবে রাজ্যের অর্থনীতির এবং কাজ পাবেন রাজ্যের কারিগররাই। পোশাক তৈরির জন্য একগুচ্ছ পদক্ষেপ আগেই নেওয়া হয়েছে। এবার চলতি সপ্তাহেই নতুন নিয়মে জুতো ও ব্যাগ কেনার পদক্ষেপ নেওয়া হল। এই কাজের জন্য এবার স্কুল শিক্ষাদপ্তর দায়িত্ব দিয়েছে ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি এবং বস্ত্র শিল্পদপ্তরকে। যার হয়ে ব্যাগ কিনছে বিশ্ব বাংলা মার্কেটিং কর্পোরেশন। আর জুতোর কেনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে মঞ্জুষাকে।
রাজ্যের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক জানান, কোনও সরবরাহকারী বা মধ্যস্থতাকারী এবার আর জুতো বা ব্যাগ কোনওটাই সরবরাহ করতে পারবেন না। একজন প্রস্তুতকারক যদি বছরে মাত্র ২৫ লক্ষ টাকার বেচাকেনা করেন আর ৫০ হাজার জুতো বা ব্যাগ তৈরি করার ক্ষমতা থাকে, তাহলেই তিনি আবেদন করতে পারেন। এই সহজ শর্তের কারণেই আবেদন করার দরজা খুলে গিয়েছে রাজ্যের ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র জুতো ও ব্যাগ প্রস্তুতকারকদের জন্য।
অন্যদিকে, মোট কাজের ২০ শতাংশ সংরক্ষিত রাখা হয়েছে রাজ্যের একেবারে ছোট ছোট জুতো ও ব্যাগ প্রস্তুতকারকদের এই কাজে যুক্ত করার জন্য। এঁদের ক্ষেত্রে বছরে ২৫ লক্ষ টাকার ব্যবসা ও ৫০ হাজার জুতো তৈরির মানদণ্ড কার্যকর হবে না। এঁরা আবেদন করলে, সংশ্লিষ্ট দপ্তরের আধিকারিকরা পরিদর্শন করে দেখে নেবেন প্রয়োজনীয় গুণমানের জুতো বা ব্যাগ প্রস্তুত করতে পারবেন কি না। যদি পারেন, তাহলে এঁদের থেকেও কেনা হবে জুতো ও ব্যাগ।
এক আধিকারিক জানান, একটি জুতো তৈরি করতে তিন থেকে চারজন কর্মচারীর প্রয়োজন। আবার ১১জন কর্মচারী দিনে পাঁচটি করে ব্যাগ সেলাই করতে পারেন। সেই নিরিখে ১০ লক্ষ ৭৪ হাজার জুতো ও ১৪ লক্ষ ব্যাগ তৈরি করতে রাজ্যে সৃষ্টি হবে প্রায় ৩ লক্ষ ৫০ হাজার কর্মদিবস।
ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি এবং বস্ত্র শিল্প দপ্তরের মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা জানান, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে আমরা রাজ্যের যুবক-যুবতীরা যাতে কাজ পায় সেই লক্ষ্যেই এগোচ্ছি। উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে রাজ্যে প্রয়োজনীয় জুতো ও ব্যাগ তৈরি করার জন্য। আগামী দিনে পুলিশের পোশাক ও সরকারি হাসপাতালের ডাক্তার ও নার্সদের পোশাকও যাতে রাজ্যেই তৈরি করা যায় এই নিয়ে প্রস্তাব দেওয়া হবে নবান্নের কাছে।এই মুহূর্তে•