অগ্নিগর্ভ ইউক্রেন, রুশ চপারের বোমাবর্ষণে নিহত তিনশোরও বেশি সাধারণ নাগরিক
সময় যত যাচ্ছে, ইউক্রেনের (Ukraine) উপর আক্রমণের পরিধিও বাড়াচ্ছে রাশিয়া (Russia)। সীমান্তবর্তী শহরগুলি পেরিয়ে রাজধানী কিয়েভেও রুশ সেনার হামলা চলেছে। তবে বৃহস্পতিবার সবচেয়ে বড় হামলা চলল গোস্টমল শহরে। এখানে একসঙ্গে অন্তত ২০ টি রুশ চপার থেকে মুহূর্মুহূ বোমাবর্ষণে প্রাণ হারালেন তিনশোরও বেশি সাধারণ নাগরিক। পাশাপাশি ওডেসা বিমানবন্দরে হামলায় ১৮ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। তছনছ হয়ে গিয়েছে বিমানবন্দরটি। এছাড়া কিয়েভগামী একটি রুশ বিমান ভেঙে পড়েছে, তাতে ১৪ জন ছিলেন। সকলের মৃত্যুর আশঙ্কা করা হচ্ছে। যদিও রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের দাবি, ইউক্রেনের কোনও অঞ্চল দখল করা লক্ষ্য নয় রাশিয়ার।
পরিস্থিতির দিকে কড়া নজর রয়েছে ভারতের (India)। প্রধানমন্ত্রী মোদি এ নিয়ে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেছেন নিজের বাসভবনে। জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা (NSA) অজিত ডোভালের সঙ্গে তিনি বিশেষ পরামর্শ করেন বলে খবর। সূত্রের খবর, ইউক্রেনের আহ্বানে সাড়া দিয়ে মোদি (PM Modi) রাতে পুতিনকে ফোন করতে পারেন। বৃহস্পতিবার দুপুরেই দিল্লির ইউক্রেন দূতাবাসের তরফে মোদির কাছে যুদ্ধ নিয়ে হস্তক্ষেপের আবেদন জানিয়েছিলেন।
বৃহস্পতিবার সাতসকালেই সরাসরি যুদ্ধের ময়দানে অবতীর্ণ হয় ইউক্রেন-রাশিয়া। সঙ্গে সঙ্গেই দেশজুড়ে নেমে আসে অন্ধকার। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সাঁড়াশি আক্রমণ শানায় রুশ বাহিনী। তিনদিক থেকে আক্রমণ ধেয়ে আসে। রুশ চপার, যুদ্ধবিমান থেকে গোলাগুলি চলতে থাকে। বন্ধ করে দেওয়া হয় ইউক্রেনের আকাশপথ। ইউক্রেনে আটকে থাকা ভারতীয়দের উদ্ধার করতে গিয়েও মাঝপথ থেকে ফিরে আসে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান। পিছু হঠা কিংবা আত্মসমর্পণ নয়, পালটা যুদ্ধের হুঙ্কার দিয়ে ইউক্রেন সেনাও হামলা চালায়। দু’দেশের যুদ্ধের মাঝে পড়ে প্রাণ হারান ইউক্রেনের সাধারণ নাগরিকরাও। প্রাণভয়ে ভিনদেশে পাড়ি দেওয়ার পালা শুরু হয়েছে। পোল্যান্ডমুখী ইউক্রেনীয় নাগরিকরা।
দফায় দফায় হামলা চলতে থাকায় আতঙ্কিত ইউক্রেনের ভারতীয় পড়ুয়ারা। রাজধানী কিয়েভে দূতাবাসের বাইরে দলে দলে ভিড় করছেন তাঁরা। সকলেই দূতাবাসের নিরাপদ আশ্রয় চাইছেন। সন্ধের দিকে দেখা গেল, দূতাবাসের ভিতরে আর ঠাঁই দেওয়ার মতো জায়গা নেই। আকাশপথ বন্ধ হওয়ায় কীভাবে ভারতীয়দের উদ্ধার করা হবে, তাও ভাবনার বিষয়। ঘুরপথে আনা হতে পারে বলে খবর।
সন্ধের পর থেকে কিয়েভের দিকে আরও অগ্রসর হয়েছেন রুশ সেনা। আন্তোনভ বিমানবন্দর কার্যত দখল করে নেয় তারা। বেলারুশের দিক থেকে রাশিয়া আক্রমণ করায় বেলারুশকে সাবধান করেছে ন্যাটো (NATO)। তবে রাশিয়াও ন্যাটোকে পালটা হুঁশিয়ারি দিয়েছে।