রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

রেকর্ড সংখ্যক পরীক্ষার্থী নিয়ে সোমবার শুরু মাধ্যমিক

March 6, 2022 | 2 min read

গত বছর অতিমারি পরিস্থিতিতে মাধ্যমিক পরীক্ষা হয়নি। ২০২০ সালের পর, আগামিকাল, সোমবার থেকে রাজ্যে ফের মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হবে। শেষ হবে ১৬ মার্চ। শনিবার মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় জানান, এ বার মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১১,২৬,৮৬৩ জন। যা সর্বকালীন রেকর্ড। গত বারের (২০২১) তুলনায় এ বার প্রায় ৫০ হাজার বেশি পরীক্ষার্থী মাধ্যমিক দিচ্ছে। পরীক্ষা না-হলেও রেজিস্ট্রেশনের হিসেবে গত বছরের সংখ্যা নির্ধারণ করেছে পর্ষদ। এ বার পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ছেলেদের অনুপাতে মেয়েদের সংখ্যা বেশি। পর্ষদের সভাপতি জানান, অতিমারি পরিস্থিতি শেষ না হওয়ায় এ বার মাস্ক পরে পরীক্ষা দেওয়া বাধ্যতামূলক।

গত প্রায় দু’বছর ধরে অতিমারির জন্য স্কুল বন্ধ ছিল। অনলাইনে পড়াশোনা হলেও অনেক পড়ুয়াই সেই সুযোগ পায়নি। বিভিন্ন সমীক্ষায় স্কুল ছুটের ছবিও উঠে এসেছে। তা সত্ত্বেও এ বার পরীক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়ল কী ভাবে?

কোনও নির্দিষ্ট উত্তর না-থাকলেও পর্ষদের মতে, পড়াশোনার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে, এমন পড়ুয়ারাও এ বার মাধ্যমিক পরীক্ষার ফর্ম পূরণ করে থাকতে পারে। পর্ষদের কেউ কেউ মনে করছেন, গত বছর অভ্যন্তরীণ মূল্যায়নের ভিত্তিতে পাশের হার ১০০ শতাংশ ছিল। অন্যান্য বছর নবম শ্রেণিতে রেজিস্ট্রেশনের পরে অনেকে অকৃতকার্য হওয়ার ভয়ে পরীক্ষা দেয় না। কিন্তু পরীক্ষা না-হলে ফাঁকতালে পাশ করা যাবে, এই ভেবে অনেকে ফর্ম পূরণ করেছে। এমনকি, আগে যারা অকৃতকার্য হয়েছে তারাও এই সুযোগ নিতে চেয়েছে। যদিও এই ধারণার সপক্ষেও জোরালো তথ্য মেলেনি। তবে পর্ষদ কর্তারা বলছেন, পরীক্ষা হবে, এই ঘোষণার পর কত জন পরীক্ষায় বসল তা যাচাই করলে এই ধারণাগুলির সত্যতা প্রমাণ করা যেতে পারে।

পরীক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়েছে। তার উপরে অতিমারি পরিস্থিতি। তাই এ বার পরীক্ষা কেন্দ্রের সংখ্যাও বেশি। ২০২০ সালে পরীক্ষা কেন্দ্র সংখ্যা ছিল ২৮৩৯টি। এ বার তা বেড়ে হয়েছে ৪১৯৪টি। এ বার মোট পরীক্ষকের সংখ্যা ৫৩,১৭৩ জন। গত বার ছিল তা ৫০,৫৫৮ জন। এ বারও স্পর্শকাতর এলাকাগুলিতে পরীক্ষার সময়ে ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছে পর্ষদ। মোবাইল, ক্যালকুলেটর, স্মার্ট ঘড়ি নিয়ে পরীক্ষা দেওয়া নিষিদ্ধ। পরীক্ষার হলে মোবাইল নিয়ে ধরা পড়লে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে পর্ষদ। শিক্ষকদেরও মোবাইল জমা রাখতে হবে। শুধুমাত্র সেন্টার সেক্রেটারি, অফিসার-ইন চার্জ, ভেনু সুপারভাইজ়ার,অ্যাডিশনাল ভেনু সুপারভাইজ়ার, পর্ষদ প্রতিনিধি তাঁদের মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারবেন। প্রথম পরীক্ষার দিন পরীক্ষার্থীর সঙ্গে এক জন অভিভাবক পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢুকতে পারবেন। তবে পরীক্ষা শুরুর আধ ঘণ্টা আগে তাঁকে বেরিয়ে আসতে হবে। পরীক্ষার্থীরা খাতা রাখার জন্য স্বচ্ছ ‘ক্লিপ বোর্ড’ ব্যবহার করতে পারবে। সঙ্গে রাখতে পারবে স্যানিটাইজ়ারের ছোট শিশি। পরীক্ষা কেন্দ্রে ‘আইসোলেশন’ কক্ষও রাখা হবে।

পরীক্ষা শুরু হবে বেলা ১২টায়। প্রশ্নপত্র দেওয়া হবে বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটে। পরীক্ষা শুরুর ১ ঘণ্টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত পরীক্ষার ঘরের বাইরে পরীক্ষার্থীরা বেরোতে পারবেন না। তার পরেও শৌচাগারে যেতে হলে ঘরের দায়িত্বে থাকা পরীক্ষকের কাছে প্রশ্নপত্র ও উত্তরপত্র জমা রেখে যেতে হবে এবং যত দ্রুত সম্ভব ফিরে আসতে হবে। কোনও পড়ুয়া পরীক্ষা শুরুর ন্যূনতম ১ ঘণ্টা ১৫ মিনিট পরেই খাতা জমা দিতে পারবে। তবে সে ক্ষেত্রে তাকে প্রশ্নপত্রও জমা দিতে হবে। পরীক্ষা শেষের পরে সে এসে প্রশ্নপত্রটি সংগ্রহ করতে পারবে। পরীক্ষা চলাকালীন প্রশ্ন ফাঁস রুখতেই এই পদক্ষেপ বলে পর্ষদ সূত্রের দাবি।

পর্ষদের নির্দেশ, স্কুলের প্রত্যেক শিক্ষককে পরীক্ষা কেন্দ্রে উপস্থিত থাকতে হবে। তবে কোনও শিক্ষকের সন্তান বা নিকটাত্মীয় ওই কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী হয়, তা হলে সে যে ঘরে বসে পরীক্ষা দিচ্ছে সেই ঘরে তিনি যেতে পারবেন না। প্রশ্নপত্রের প্যাকেট খোলা থেকে শুরু করে পরীক্ষা শেষ হওয়া পর্যন্ত শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীরাও পরীক্ষাকেন্দ্রের বাইরে যেতে পারবেন না।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Madhyamik Exam, #covid19

আরো দেখুন