ইউক্রেনের প্রথম মহিলা এভারেস্ট জয়ী দেশের হয়ে যুদ্ধে সামিল হলেন
প্রবল পরাক্রমশালী শত্রুপক্ষের সামনে ভয়ে গুটিয়ে যাওয়া নয়, জান লড়িয়ে যুদ্ধ করছে ইউক্রেন। ধারেভারে অনেকটাই শক্তিশালী রাশিয়া দিন দুয়েকের মধ্যে ইউক্রেন দখল সম্পূর্ণ করে ফেলবে বলে ভেবেছিলেন অনেক প্রাজ্ঞ যুদ্ধবিশারদই। কিন্তু সেই সব ভাবনাকে ভুল প্রমাণিত করে এখনও লড়ে যাচ্ছে ইউক্রেন। দেশ বাঁচানোর লড়াই সেখানে আর শুধু সামরিক ও প্রতিরক্ষা বিভাগের মধ্যে আটকে নেই। নানা ক্ষেত্রের বিশিষ্ট মানুষ থেকে সেলিব্রিটি, এমনকী সাধারণ মানুষও শামিল হয়েছেন যুদ্ধে। এই তালিকায় এবার নাম লেখালেন প্রথম ইউক্রেনীয় মহিলা হিসেবে মাউন্ট এভারেস্ট এবং কে ২ শৃঙ্গ জয়ী পর্বতারোহী ইরিনা গালয়। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক মহিলা দিবসের প্রাক্কালে তিনি নিজেই ইনস্টাগ্রামে নিজের দেশের হয়ে যুদ্ধে যোগদানের কথা ঘোষণা করে পোস্ট দিয়েছেন। সেখানে তিনি রাশিয়ার শাসকদের ‘অসুস্থ সন্ত্রাসবাদী’ বলে তোপ দেগেছেন। এভারেস্টজয়ী ইরিনা লিখেছেন, ‘একজন অসুস্থ সন্ত্রাসবাদী একটি রাষ্ট্র শাসন করছে, যাদের সঙ্গে আমাদের ইউক্রেনের সীমান্ত রয়েছে। এখন ভয়ে সিঁটিয়ে থাকার সময় নয়। যে কোনও পরিস্থিতিতে দেশকে রক্ষা করার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।’ নিজে যুদ্ধে নামার পাশাপাশি এই ভাষাতেই তিনি দেশবাসীকেও রুশ সেনার বিরুদ্ধে রুখে দাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন।
২০১৬ সালের মে মাসে ইউক্রেনের প্রথম মহিলা হিসেবে মাউন্ট এভারেস্ট জয় করেছিলেন তিনি। সর্বোচ্চ শৃঙ্গ জয়ের পর তিনি সবচেয়ে দুর্গম কে ২ শৃঙ্গও জয় করেন। শুধু তাই নয়, ৮০০০ মিটার উচ্চতা পর্যন্ত তিনি বিনা অক্সিজেনে পর্বতারোহণ করেও নজির সৃষ্টি করেছিলেন। পশ্চিম ইউক্রেনের মিউকাসেভের বাসিন্দা ইরিনার দীর্ঘদিনের লক্ষ্য পূর্বতন সোভিয়েতের একাধিক দুর্গম শৃঙ্গ জয় করা। সেই মতো প্রস্তুতিও চলছিল। কিন্তু যুদ্ধ এসে সব হিসেব এলোমেলো করে দিয়েছে। দেশকে বাঁচাতে এখন বহুজনের সঙ্গে তিনিও শামিল হয়েছেন রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে। তার এই সিদ্ধান্তকে বিশ্বজুড়ে বহু মানুষ কুর্নিস জানিয়েছেন। দুর্গম শৃঙ্গে পাড়ি দিতে গিয়ে তিনি আগেই ভয় জয় করেছেন। দেশ যখন বিদেশি শত্রুদের হাতে আক্রান্ত, তখন সহ নাগরিকদেরকেও ভয়কে হেলায় হারিয়ে রাস্তায় নেমে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।