রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

বাজেটে চা চাষীদের কর ছাড়ের মেয়াদ বাড়াল রাজ্য

March 12, 2022 | 2 min read

রাজ্য সরকারের বাজেটে আলাদা করে উল্লেখ করা হল ক্ষুদ্র চা চাষিদের কথা। পাশাপাশি চা বাগান ও বিশেষ করে ক্ষুদ্র চা চাষিদের কৃষি আয়কর থেকে অব্যহতি দেওয়া হবে আগামী অর্থ বর্ষেও। পাহাড়ে আন্দোলন। তার বছর তিনেক পরে অতিমারি। আর মাঝে মধ্যেই আবহাওয়ার বদল— এই ধারাবাহিক ঝড়-ঝাপটায় বারবার বিপর্যস্ত হয়েছে উত্তরবঙ্গের চা শিল্প। সমস্যার তালিকায় নতুন সংযোজন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং তার ফলে রফতানি বাজারে চরম অনিশ্চয়তা। এই পরিস্থিতিতে চা শিল্পকে দেওয়া পুরনো ছাড়ের মেয়াদ বাজেটে আরও এক বছর বাড়িয়েছে রাজ্য। বাজেটের আগে করা এই সংক্রান্ত আর্জি মঞ্জুর হওয়ায় কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে সংশ্লিষ্ট মহলে।

গ্রামীণ কর্মসংস্থান ও শিক্ষা সেস মিলিয়ে প্রতি কেজি কাঁচা চা পাতায় ১২ পয়সা করে গুনতে হত বাগান মালিকদের। এ ছাড়াও মুনাফায় ৩০%-৬০% কৃষি আয়কর ধার্য হত। গত তিন বছর ধরে এই সমস্ত ক্ষেত্রেই ছাড় দিয়ে আসছে রাজ্য। এ বার বাজেটে নতুন কোনও কর তো চাপেইনি, বরং আগামী অর্থবর্ষের জন্যও ওই সব কর ও সেস মকুবের কথা জানিয়েছে রাজ্য। চা বাগান মালিকদের সংগঠন ইন্ডিয়ান টি অ্যাসোসিয়েশনের (আইটিএ) চেয়ারপার্সন নয়নতারা পালচৌধুরী এবং সেক্রেটারি জেনারেল অরিজিৎ রাহা জানান, উৎপাদন খরচ বেড়েছে। চা শিল্প ইদানীং কার্যত লোকসানেই চলছে। এই অবস্থায় ওই সেস ছাড় ও কর মকুবের জন্য তাঁরা আগেই আর্জি জানিয়েছিলেন। রাজ্যের এই সিদ্ধান্তে বাগানগুলির খরচের বোঝা কমবে।

ক্ষুদ্র চা চাষিদের সংগঠন সিস্টা-র প্রেসিডেন্ট বিজয়গোপাল চক্রবর্তীর দাবি, এই প্রথম আলাদা করে তাঁদের কথা উল্লেখ করা হয়েছে বাজেটে। ২০১৯-২০ থেকে সেসে ছাড় ও কর মকুবের সুবিধা দিচ্ছে রাজ্য। এতে বিশেষত উপকৃত হবেন উত্তরবঙ্গের ক্ষুদ্র চা চাষিরা। যাঁদের বড় অংশ করোনায় ধাক্কা খেয়েছেন। উৎপাদন খরচ বৃদ্ধির কথা বলেছে সিস্টাও। সঙ্গে বিজয়গোপাল জানান, এ বারে শীত বেশি দিন চলায় মরসুমের প্রথম ভাল মানের চায়ের (ফার্স্ট ফ্লাশ) উৎপাদন স্বাভাবিকের চেয়ে প্রায় ৫০% কম হয়েছে। অথচ এই চায়ের দামই সব চেয়ে বেশি ওঠে। ফলে উৎপাদন কমায় ব্যবসা কমবে বলে আশঙ্কা। সেস ও কর মকুবে সুবিধা হবে চা চাষিদের।

চা শিল্পের একাংশের অবশ্য মত, এই ছাড় আরও এক বছর বাড়ানোর পিছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যও থাকতে পারে। প্রথমত, সামনে জিটিএ-র ভোট। তার আগে ছাড় বজায় রাখার বার্তার আলাদা তাৎপর্য আছে। দ্বিতীয়ত, এই সিদ্ধান্তে তরাই-ডুয়ার্সের ছোট বাগান ও বটলিফ প্লান্টগুলিও সুবিধা পাবে। ডুয়ার্সের শহর এলাকায় তৃণমূলের আধিপত্য বাড়লেও বাগানে তেমন সুবিধা করতে পারেনি তারা। ছাড়ের সুবিধায় সেখানকার জনগোষ্ঠীর উপরে প্রভাবের সম্ভাবনা ওড়ানো যায় না।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Tea Estates, #Tax, #Tea Garden Workers

আরো দেখুন