কিভের দিকে অগ্রসর হচ্ছে ডেথ কনভয়? উইক্রেনের পতন আসন্ন?
সামনে ক্ষেপণাস্ত্রবাহী সাঁজোয়া গাড়ি। যে কোনও মুহূর্তে আঘাত হানার পজিশনে। পিছনে সারি সারি ট্যাঙ্ক, সেনার গাড়ি। ইউক্রেনের রাজধানীর দিকে আবারও এগতে শুরু করেছে ৪০ মাইল দীর্ঘ রুশ সামরিক বহর। গোটা বিশ্ব যাকে এখন ‘ডেথ কনভয়’ নামে চেনে। ইউক্রেনের প্রতিরোধের মুখে পিছু হটা রুশ বাহিনীও ফের জড়ো হচ্ছে কিভের উত্তর-পূর্বে। উপগ্রহ চিত্রে ধরা পড়েছে সেই ছবি। সব মিলিয়ে একটা বিষয় স্পষ্ট—কয়েক দিনের মধ্যেই কিয়েভে চূড়ান্ত আঘাত হানতে প্রস্তুত রাশিয়া। শুক্রবার ব্রিটেনের তরফে তেমনই আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। মার্কিন স্যাটেলাইট ফার্ম ম্যাক্সরের প্রকাশ করা ছবি অনুযায়ী, রুশ আর্মার্ড ইউনিট চলে এসেছে কিভের উত্তর-পূর্বের শহর হোস্তোমেলের আন্তোনভ বিমানবন্দরের কাছে।
যুদ্ধের প্রথম দিন থেকেই সেখানে প্যারাট্রুপার নামিয়েছে মস্কো। আবার উত্তরে লুবিয়াঙ্কার কাছে একাধিক রুশ হাউইৎজারকে ফায়ারিং পজিশনে দেখা গিয়েছে, দাবি ম্যাক্সরের। এর মধ্যেই ভয়ঙ্কর ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত দিয়েছে ইউক্রেনের ইন্টেলিজেন্স সার্ভিস। কিভের গুপ্তচরদের দাবি, চেরনোবিল পরমাণু কেন্দ্রে ‘ম্যানমেড বিপর্যয়ে’র ষড়যন্ত্র করছেন পুতিন। বেলারুশ থেকে আসা এক দল ‘স্পেশালিস্ট’কে সেখানে জঙ্গি হামলা চালাতে পাঠানো হয়েছে। বৃহস্পতিবারই পরমাণু কেন্দ্রে প্রবেশ করেছে তারা। কিভের উত্তর, পশ্চিম ও পূর্ব দিক থেকে হামলা শুরু করেছে পুতিন-বাহিনী। তার অংশ হিসেবেই এগচ্ছে ‘ডেথ কনভয়’।
গত দু’সপ্তাহ ধরে জ্বালানি সহ অন্যান্য কারণে সেটি বেশি দূর এগতে পারেনি। ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ওলেক্সি রেজনিকোভ জানিয়েছেন, রাশিয়ার আক্রমণে এখন অনেক বেশি সাধারণ নাগরিকের মৃত্যু হচ্ছে। কারণ রুশ জেনারেলরা মার্কিন কৌশলের পরিবর্তে মধ্যযুগীয় যুদ্ধরীতির দিকে ঝুঁকেছেন। যেমনটা সিরিয়ায় করেছিল মস্কো।
এদিন সকালেই মধ্য ইউক্রেনের নিপ্রো, পশ্চিমে লুৎস্ক এবং ইভানো-ফ্র্যাঙ্কিভস্কে বিমান হানা চলেছে। এর মধ্যে নিপ্রোয় একটি জুতোর কারখানা সহ জনবসতি এলাকায় বোমাবর্ষণ হয়। লুৎস্কে ইউক্রেন সেনার বিমানঘাঁটিতে আক্রমণে মৃত্যু হয়েছে দুই জওয়ানের। খারকিভে নিউক্লিয়ার রি-অ্যাক্টরযুক্ত ফিজিক্স ইনস্টিটিউটে হামলা করেছে মস্কো বাহিনী। এমন আশঙ্কা আগেই করেছিলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদামির জেলেনস্কি। সেই আশঙ্কা সত্যি করেই আঘাত হানা হয়েছে খারকিভের একটি প্রতিবন্ধী হোমে। সেখানে আটকে ছিলেন প্রায় আড়াইশো জন। তাঁদের খবর পাওয়া যায়নি। অন্যদিকে, রাশিয়ার দখলে থাকা মারিউপোল থেকে বাসিন্দাদের সরানোর উপর অগ্রাধিকার দিচ্ছে ইউক্রেন। যদিও উদ্ধারকাজ শুরুর ব্যাপারে ক্রেমলিনের তরফে কোনও বার্তা আসেনি।