চার রাজ্যে বিজেপির জয়ের জেরে ত্রিপুরায় হামলা চলল বিরোধীদের ওপর
উত্তরপ্রদেশ-সহ চার রাজ্যে জয়ের আনন্দে মেতে ত্রিপুরায় বিরোধীদের উপর হামলার অভিযোগ উঠল বিজেপির বিরুদ্ধে৷ বৃহস্পতিবার ফলপ্রকাশের পরই রাতে বেশ কয়েকটি জায়গায় হিংসা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে৷ বিরোধীদের অভিযোগ, বিজেপি আশ্রিত গুন্ডাদের হাতে আক্রান্ত হয়েছে দলের কর্মীরা৷ বিশেষ করে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের বেছে বেছে মারধর করা হয়েছে৷ প্রতিবাদ জানিয়েছেন ত্রিপুরা তৃণমূল কংগ্রেসের আহ্বায়ক সুবল ভৌমিক৷ অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তিনি৷
সুবল ভৌমিক বলেন, ‘জয়ের নামে বিজেপি সমর্থকরা রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় সন্ত্রাস ও হিংসা ছড়িয়েছে৷ বৃহস্পতিবার রাতে তারা বিরোধী দলের কর্মীদের বাড়িঘর এবং দলীয় কার্যালয়ে হামলা চালায়৷ তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী রাজীব বর্মনের বাড়িতে ঢুকে তাঁর বাবা মঙ্গল বর্মনকে শারীরিক নিগ্রহ করে৷ মারধর করা হয় রাজীব বর্মনকে৷ এরপর ওদের বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়৷ গুরুতর জখম অবস্থায় তাদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়৷’ রাজীব বর্মন ও তাঁর পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে তৃণমূল৷ সুবল ভৌমিক জানান, আরও বেশ কয়েকজন তৃণমূল কর্মী বিজেপি সমর্থকদের হিংসার শিকার হয়েছেন৷
বাংলার মানুষ বিজেপিকে প্রত্যাখ্যান করায়, অন্য রাজ্যে ক্ষমতায় থাকার জন্য হিংসা ও সন্ত্রাসের পথ বেছে নিয়েছে৷ পুলিস কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে বলে অভিযোগ৷ সুবল ভৌমিক বলেন, ‘যখন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজ্যে এসেছিলেন তখন হাজার হাজার পুলিস কর্মী শহরে মোতায়েন করা হয়েছিল৷ কিন্তু গত রাতে হিংসার পরেও পুলিসকে কোথাও দেখা যায়নি৷’
ত্রিপুরা তৃণমূলের রাজ্য ইন-চার্জ রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ও বৃহস্পতিবারের হিংসার নিন্দা করেছেন৷ তিনি বলেন, ‘অন্য রাজ্যে নির্বাচন হয়েছে৷ কিন্তু ফলপ্রকাশের পর বিরোধী কর্মীদের উপর হিংসা শুরু হয়৷ বিশেষ করে তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরা ওদের লক্ষ্য ছিল। বাড়িঘর লুঠ করা হয়৷ পুড়িয়ে দেওয়া হয়৷ আমাদের কর্মীদের নিষ্ঠুরভাবে আক্রমণ করা হয়৷ বড় আকারের হিংসা সত্ত্বেও রাজ্য প্রশাসন নীরব দর্শকের ভূমিকায় অভিনয় করে চলেছে৷’
বিজেপি কর্মীদের রাজনৈতিক হিংসা থেকে স্থানীয়রাও রেহাই পাননি৷ অভিযোগ, বিশালগড়ে দুলাল হোসেন ও তাঁর পরিবারের আট সদস্যকে বিজেপি কর্মীরা নির্মমভাবে মারধর করে। দুলাল হোসেন বলেন, ‘কয়েকজন বিজেপি কর্মী বাড়িতে এসে আমাদের মারধর করে৷’
বিশালগড়ের চেলিখোলা বাজারে দোকান ও অফিসে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়৷ এক দোকান মালিক বলেন, গত কয়েকদিন ধরে আমরা হুমকি পাচ্ছিলাম এবং এখন তারা আমাদের দোকান পুড়িয়ে দেয়৷’ মহারাজগঞ্জের স্থানীয়রা জানান, বৃহস্পতিবার রাতে এলাকায় হামলা করে কয়েকজন৷ পুলিসে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে৷ অভিযোগকারী বলেন, ‘একদল লোক কোথা থেকে এসে আমার পরিবারকে লাঠি ও অস্ত্র দিয়ে ভয় দেখায়। মারধরও করে৷ আমাদের সঙ্গে শিশু, বৃদ্ধ এবং একজন গর্ভবতী মহিলা ছিল৷ কিন্তু দুর্বৃত্তরা কাউকেই রেহাই দেয়নি কেন এমনটা করা হল জানি না৷ আমাদের পরিবার কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নয়৷’