ইউক্রেন যুদ্ধে ১৪ দিনের মধ্যে ফুরাবে রসদ, চাপে রুশ প্রেসিডেন্ট
রুশ সেনার হাতে সময় ক্রমশ কমে আসছে। খুব বেশি হলে আর ১০ থেকে ১৪ দিন। তারপরেই টান পড়বে রসদে। ইউক্রেনের প্রতিরোধের মুখে জমি হারাতে শুরু করবে পুতিন-বাহিনী। সেটা বুঝতে পেরেই কিভ দখলে মরিয়া হয়ে উঠেছে ক্রেমলিন। তথ্য-পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে এমনই ইঙ্গিত ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রের। তাহলে কি যুদ্ধের মেয়াদ শেষ? মঙ্গলবার সকাল থেকে অন্তত তেমনই আভাস আসতে শুরু করেছে অন্যান্য মহল থেকেও। গতকাল রুশ-ইউক্রেনের শান্তি বৈঠক স্থগিত হয়ে গিয়েছিল। এদিন ফের তা শুরু হয়। আর তার মধ্যেই আন্তর্জাতিক বাজারে আচমকা কমতে শুরু করেছে অপরিশোধিত তেলের দাম। দু’সপ্তাহ পর এই প্রথম। সোমবার দাম কমেছিল প্রায় ৫ শতাংশ। আর এদিন ৭ শতাংশেরও বেশি নেমে গিয়েছে ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের দর। ব্যারেলে প্রতি মূল্য ১০০ ডলারের নীচে (৯৯.০১) চলে এসেছে। মার্কিন ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টার মিডিয়েটের অশোধিত তেলের দামও কমে হয়েছে ব্যারেল প্রতি ৯৪.৯০ ডলার। যুযুধান দু’দেশ টানা শান্তি আলোচনা চালিয়ে যাওয়ায় তেলের দামে প্রভাব পড়ছে বলে ধারণা বাজার বিশেষজ্ঞদের।
ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা সূত্রের খবরেও তার প্রতিফলন স্পষ্ট। তাদের দাবি, মস্কোকে রীতিমতো তাড়া করছে কিভ। রোজই ক্রেমলিনের সামরিক বহরে আঘাত হানছে ইউক্রেনীয় সেনা। ওই সূত্রের দাবি, চূড়ান্ত ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার মুহূর্ত থেকে মাত্র দু’সপ্তাহ দূরে রুশ বাহিনী। তারপরেই সামরিক শক্তিতে তাদের ছাড়িয়ে যাবে ইউক্রেন। কিভের প্রতিরোধের সামনে পিছিয়ে আসা ছাড়া মস্কোর হাতে কোনও উপায় থাকবে না। ইতিমধ্যে থমকে গিয়েছে রুশ সেনার কনভয়ের গতি। তাদের সেনা সংখ্যাও কমে আসছে। সেই কারণে বিদেশি ভাড়াটে যোদ্ধা নামাতে হয়েছে ক্রেমলিনকে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদামির জেলেনস্কির গলাতেও শোনা গিয়েছে সেই প্রত্যয়। রুশ সেনাকে আত্মসমর্পণের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। তাঁর দাবি, ইউক্রেনীয় সেনার হাতে ধ্বংস হওয়া রুশ হেলিকপ্টারের সংখ্যা একশ ছুঁতে চলেছে। গত ১৯ দিনে ৮০টি যুদ্ধবিমান, শয়ে শয়ে ট্যাঙ্ক এবং হাজার হাজার অন্যান্য সামরিক সরঞ্জাম হারিয়েছে মস্কো। চেচনিয়ার বিরুদ্ধে দু’-দু’টি লড়াইতেও তাদের এত ক্ষতি হয়নি।
যদিও যতদিন যাচ্ছে আরও আগ্রাসী হয়ে উঠেছে রুশ সেনা। টানা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চলছে কিভ সহ অন্যান্য শহর লক্ষ্য করে। এদিন শান্তি বৈঠকে যুদ্ধবিরতি এবং উদ্ধারকাজের বিষয়ে দাবি জানায় কিভ। এদিন রাত পর্যন্ত সেই বৈঠক শেষ হয়নি। এর মধ্যে অবশ্য একটি বিষয় আত্মস্থ করেছেন জেলেনস্কি। তিনি বুঝতে পেরেছেন, ইউক্রেন ন্যাটোর সদস্য হতে পারবে না।