ইমরান খানের ইস্তফা শুধুই সময়ের অপেক্ষা? সেনাশাসন ফিরছে পাকিস্তানে?
প্রধানমন্ত্রী পদে ইমরান খানের ইস্তফা এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা। পাকিস্তানের রাজনৈতিক মহলের ধারণা, ইসলামাবাদে অনুষ্ঠিত ওআইসি বৈঠকের পরেই তাঁর ভাগ্য নির্ধারিত হয়ে যাবে। আগামী শুক্রবার পাকিস্তান সংসদে ইমরানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আসতে চলেছে।
পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) এবং পাকিস্তান পিপলস’ পার্টির (পিপিপি) প্রায় ১০০ জন সাংসদ জাতীয় আইনসভার সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে দু’টি পৃথক অনাস্থা প্রস্তাবের নোটিস দিয়েছে। অভিযোগ, দেশের অর্থনৈতিক সমস্যা ও প্রচণ্ডভাবে মুদ্রাস্ফীতির জন্য দায়ী পিটিআই সরকার। জানা গিয়েছে, ক্ষমতাসীন পিটিআইয়ের ২৫ জন বিক্ষুব্ধ সাংসদ ইমরানের বিরুদ্ধে ভোট দেবেন।
কুর্সি বাঁচাতে রবিবারও তিনি বলেন, দলের ২৪ জন বিক্ষুব্ধ সাংসদ যদি ফিরে আসেন, তিনি তাঁদের ‘করুণাময় ইশ্বরের মতো’ ক্ষমা করে দেবেন। কিন্তু, তাঁদের মন পরিবর্তনের আপাতত কোনও ইঙ্গিত মিলছে না। ফলে সংসদে অনাস্থা ভোটে ইমরানের পরাজয় নিশ্চিত।
তবে, হার নিশ্চিত জেনেও তিনি অনাস্থা ভোটে যাবেন, নাকি তার আগেই প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেবেন সেটাই দেখার। আর, সেই সঙ্গে পাকিস্তানে ফের সেনা শাসন ফেরার সম্ভাবনা বাড়ছে। স্বাধীনতার পর থেকে বেশিরভাগ সময়েই সামরিক শাসকের হাতে থেকেছে পাকিস্তান।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ইমরান দ্বিতীয় পথটিই বেছে নেবেন। ২২ ও ২৩ মার্চ (অর্গানাইজেশন অফ ইসলামিক কোঅপারেশন) ওআইসি-র বৈঠক রয়েছে। তার পরেই তিনি প্রধানমন্ত্রী পদ ছাড়বেন। তাঁর ইস্তফার দিন স্থির করে দিয়েছে পাক সেনাবাহিনী।
সে দেশের সাংবাদমাধ্যমগুলি জানিয়েছে, ইমরানকে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে অপসারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পাক সেনাপ্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়া এবং অন্য তিন লেফটেন্যান্ট জেনারেল। শুক্রবার ইমরান দেখা করেন সেনাপ্রধানের সঙ্গে।
সেই বৈঠকে লেফটেন্যান্ট জেনারেলরাও উপস্থিত ছিলেন। সেনার তরফে জানানো হয়, ওই বৈঠকে ওআইসি সম্মেলন নিয়ে আলোচনা ছাড়াও ইমরানের বিরুদ্ধে সংসদে অনাস্থা প্রস্তাবের বিষয়টি নিয়েও কথা হয়েছে। তখনই ইমরানকে ইস্তফা দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
বেশ কিছুদিন ধরেই সেনাবাহিনীর ‘অপছন্দের’ প্রধানমন্ত্রী হয়ে গিয়েছেন ইমরান। ইউক্রেন সংকটের জন্য ইমরান অকারণে আমেরিকা ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নকে চটানোয় প্রধানমন্ত্রী ইমরান পাক সেনাবাহিনীর চক্ষুশূল হয়েছেন।