অগ্নিগর্ভ শ্রীলঙ্কায় কারফিউ উপেক্ষা করেই রাজপথে বিক্ষোভে নেমে পড়ল পড়ুয়ারা
বিক্ষোভ রুখতে মরিয়া শ্রীলঙ্কা (Sri Lanka) সরকার। ইতিমধ্যেই সেদেশে জারি জরুরি অবস্থা। কার্যকর হয়েছে কারফিউ। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়াও। কিন্তু এত কিছুর পরও ধিকি ধিকি জ্বলতে থাকা গণবিক্ষোভের ঢেউকে পুরোপুরি যেন নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। রবিবার কারফিউ উপেক্ষা করেই রাজপথে নেমে পড়তে দেখা গেল বিক্ষোভকারীদের। তাঁদের অধিকাংশই পড়ুয়া। জলকামান কিংবা কাঁদানে গ্যাসেও তাঁদের বাগে আনতে পারছে না পুলিশ।
এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে, শ্রীলঙ্কার পেরাদানিয়া বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরের বাইরের রাস্তায় দল বেঁধে হাঁটতে দেখা গিয়েছে পড়ুয়াদের। যে করেই হোক তাঁদের রুখতে জলকামান, কাঁদানে গ্যাস, লাঠির ব্যবহার করছে পুলিশ। এমনকী আকাশে গুলি ছুঁড়েও ভয় দেখানো হয়েছে। কিন্তু তাঁরা সেসব অগ্রাহ্য করেই আন্দোলন জারি রেখেছেন। লাগাতার সমবেত স্লোগানের ধ্বনিতে মুখরিত চারপাশ।
এদিকে শতাধিক মানুষের এক মিছিলকে আটকানো হয়েছে কলম্বোয়। সেখানেই এক বিরোধী নেতার বাড়ি। তার সামনেই পুলিশ ও সেনার ভিড়। তাদের হাতে ছিল আগ্নেয়াস্ত্র। যদিও কোনও গুলি চালানোর ঘটনা সেখানে ঘটেনি।
মুদ্রাস্ফীতির ধাক্কায় শ্রীলঙ্কার বাজারে রীতিমতো দাবানল। এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যাচ্ছে, সেদেশে চাল ও গম বিক্রি হচ্ছে মোটামুটি ২২০ টাকা ও ১৯০ টাকা কেজি দরে। এদিকে চিনি বিকোচ্ছে ২৪০ টাকা কেজিতে। নারকেল তেলের দর ৮৫০ টাকা প্রতি কেজি। একটি ডিমের দাম ৩০ টাকা। এর চেয়েও অবিশ্বাস্য গুঁড়ো দুধের দাম। তার দাম পৌঁছেছে কেজি প্রতি ১৯০০ টাকায়। ফলে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ চরমে।
উল্লেখ্য, গত সাত দশকে সবচেয়ে বড় আর্থিক সংকটের মুখে পড়েছে দ্বীপরাষ্ট্র। বিদ্যুতের অভাবে ব্ল্যাক আউট চলছে দেশে। এমনকী মিলছে না প্রতিদিনের প্রয়োজনের রান্নার গ্যাস। আগেও ক্ষুব্ধ নাগরিকদের কলম্বোর প্রধান সড়ক অবরোধ করতে দেখা গিয়েছে। অবরোধকারীদের বক্তব্য, রান্নার গ্যাসের অভাবে তাঁরা কেরোসিন তেল সংগ্রহ করতে বেরিয়েছিলেন, কিন্তু তাও পাওয়া যাচ্ছে না। উত্তেজিত জনতাকে সামলাতে অস্ত্রহীন সেনা মোতায়েন করে লঙ্কা সরকার। কিন্তু যত সময় যাচ্ছে, ততই পরিস্থিতি আরও অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠছে।