দেশ বিভাগে ফিরে যান

পেট্রল ডিজেলের লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধিতে ক্ষোভ বাড়ছে বিজেপির নিচুতলার কর্মীদের মধ্যে

April 4, 2022 | 2 min read

ফের বাড়ল পেট্রল-ডিজেলের দাম। এবার পেট্রল ৪২ ও ডিজেল ৪০ পয়সা। পেট্রপণ্যের লাগামছাড়া এই মূল্যবৃদ্ধির জেরে বিজেপির অন্দরেই জ্বলছে ক্ষোভের আগুন। নিচুতলার অনেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ উগরে গায়ের জ্বালা মেটাচ্ছেন। বাংলায় বিধানসভা নির্বাচনের আগে থেকেই বিজেপিতে আদি-নব্যের দ্বন্দ্ব নজির গড়েছিল। ভোটে ভরাডুবির পর তা সর্বাত্মক আকার নেয়। শুরু হয়েছিল নেতৃত্ব নিয়ে খেয়োখেয়ি। এখন পেট্রপণ্যের লাগাতার মূল্যবৃদ্ধিতে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে জেলা থেকে মণ্ডলে। কর্মীরা বলছেন, পার্টি করি বলে মুখ বুজে থাকব না। নিচুতলায় ক্ষোভ এতটাই তীব্র যে, কর্মীদের মুখোমুখি হতেই ভয় পাচ্ছেন নেতারা।

রবিবার সকালে দলের একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে এনিয়ে মোদি সরকারের ভূমিকার প্রবল সমালোচনা করেছেন নিমাই গুড়িয়া। তিনি পূর্ব মেদিনীপুরে বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলা সম্পাদক। গ্রুপে ওই নেতার পোস্ট, ‘আমরা পার্টি করি মানে কি আমাদের সত্যের চোখটা নষ্ট হয়ে যাবে? পেট্রল, ডিজেলের দামবৃদ্ধি নিয়ে কিছু বলার নেই? এতবড় দেশে পেট্রল-ডিজেলের দামবৃদ্ধি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের কোনও নিয়ন্ত্রণ থাকবে না, এটা হতে পারে না।’ পোস্ট হওয়ামাত্র এই মন্তব্য ঘিরে শোরগোল পড়ে যায়। তবে নিমাইবাবু জানান, ‘বিষয়টি অভ্যন্তরীণ। মন্তব্য করব না।’

পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বিজেপির মহিলা মোর্চার প্রাক্তন সহ সভাপতি কাবেরী মণ্ডল অবশ্য প্রকাশ্যেই মুখ খুলেছেন। তিনি বলেন, ‘পেট্রপণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে সাধারণ মানুষ যে কষ্ট পাচ্ছেন, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। সরকার কেন দাম বাড়াচ্ছে বুঝতে পারছি না।’

পূর্ব বর্ধমানের আদি বিজেপি গ্রুপের মুখপাত্র কেশব কোনার আবার বলছেন, ‘কেন্দ্রের উচিত বিষয়টির উপর নজর দেওয়া। অনেকেই বলছে, রাজ্য ট্যাক্স ছাড় দিলে কিছুটা স্বস্তি মিলবে। কিন্তু বিভিন্ন জনমুখী প্রকল্প চলছে। রাজ্যের শাসকদল সেই যুক্তি দিচ্ছে। মানুষ বিশ্বাসও করছে। কিন্তু আমরা কী বলব?’ বর্ধমানের ভারতীয় জনতা যুব মোর্চার প্রাক্তন সভাপতি শুভম নিয়োগীও বিষয়টি মানছেন। তাঁর কথায়, ‘বিশ্ববাজারে তেলের দামবৃদ্ধি কথা বলছি। কিন্তু মানুষ কতটা বিশ্বাস করছে বলতে পারব না।’ বিজেপি নদীয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলার প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ ঘোষ সরাসরিই বলছেন, ‘বহু মানুষ প্রশ্ন করছেন, কেন বিজেপির সঙ্গে থাকব? আমরা যুদ্ধ পরিস্থিতির দোহাই দিতে বাধ্য হচ্ছি।’

রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য অবশ্য সেকথা মানছেন না। এদিন এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘আমার ঠিক জানা নেই, কোন জেলা সভাপতি এই প্রশ্ন তুলেছেন। তবে তাঁদের জানা উচিত, পেট্রপণ্যের মূল্য কেন্দ্র কিংবা বিজেপি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত নয়। যুদ্ধের জেরে আন্তর্জাতিক বাজারে ক্রুড অয়েলের মূল্যবৃদ্ধিই এর জন্য দায়ী।’ বিজেপির অন্যতম সর্বভারতীয় মুখপাত্র গোপালকৃষ্ণ আগরওয়াল কিংবা সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা বাংলার দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়র সাফাই, রাজ্যের ভ্যাটের জন্য অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে দাম। যদিও কেন্দ্রীয় শুল্ক নিয়ে তাঁরা উচ্চবাচ্য করেননি।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#bjp, #price hike, #petrol diesel

আরো দেখুন