ইউক্রেনের হামলায় কৃষ্ণ সাগরে সলিল সমাধি রুশ রণতরী মস্কভার
কৃষ্ণ সাগরে রাশিয়ার কড়া নজরদার ছিল যুদ্ধ জাহাজ মস্কভা। মাস খানেক আগেই ইউক্রেনের ১৩ জন সীমান্তরক্ষীর উপর গোলা বর্ষণ করে হত্যা করেছিল এই রুশ গাইডডেড মিসাইল ক্রুজার। সেই মস্কভা এখন কৃষ্ণ সাগরের অতলে।
বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ইউক্রেন জানিয়েছে, তাদের বাহিনীর রকেট হামলাতে ধ্বংস হয়ে গিয়েছে রাশিয়ার যুদ্ধ জাহাজ মস্কভা। সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টেওডেসা-র আঞ্চলিক প্রধান ম্যাক্সিম মারচেঙ্কো দাবি করেছেন, তাঁদের দু’টি ক্ষেপণাস্ত্র আছড়ে পড়েছে ওই রুশ যুদ্ধজাহাজে। এর বেশি কিছু খোলসা করেননি মারচেঙ্কো। তবে শোনা যাচ্ছে সে দু’টি ছিল অতিশক্তিশালী নেপচুন ক্ষেপণাস্ত্র। জাহাজটির ধ্বংস হওয়ার ভিডিয়োও প্রকাশ্যে এসেছে। যদিও রাশিয়া এই হামলার কথা স্বীকার করেনি। মস্কোভা ধ্বংস হওয়ার ঘটনা স্বীকার করে একটি বিবৃতি দিয়ে ক্রেমলিন জানিয়েছে, ভিতরে মজুত অস্ত্রে আগুন লেগেই বিস্ফোরণ হয় জাহাজে। তাতেই ধ্বংস হয়ে যায় রুশ রণতরী।
ঘটনাচক্রে এই কৃষ্ণ সাগরেই ফেব্রুয়ারির শেষে রুশ রণতরীটির সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়েছিল ইউক্রেনের সেনার। স্নেক আইল্যান্ডের দখল নিতে আসা দু’টি রুশ যুদ্ধ জাহাজ সেদিন ইউক্রেনীয় সীমান্তরক্ষীদের অস্ত্র ত্যাগ করে আত্মসমর্পণ করতে বলেছিল। কিন্তু মাথা নোয়াননি ইউক্রেন সেনারা। নির্দেশ না মানায় ১৩ জন সীমান্ত রক্ষীর উপর ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছিল মস্কভা এবং আরও একটি রুশ যুদ্ধ জাহাজ। মস্কভার ধ্বংস হওয়ার খবর তাই বেশ ফলাও করেই প্রকাশ করেছে ইউক্রেন।
বিপুল অস্ত্র ভান্ডার মজুত করার পাশাপাশি শত্রুশিবিরকে ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে গুঁড়িয়ে দেওয়ার ক্ষমতা ছিল মস্কোভার। ৬১০ ফুট দীর্ঘ রণতরীটির উপর বৃহস্পতিবার রকেটের সাহায্যে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইউক্রেনের সেনাবাহিনী। তবে রাশিয়া হামলার কথা স্বীকার করেনি। রুশ রণতরীর জলে তলিয়ে যাওয়ার খবর স্বীকার করে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রক বিবৃতি দিয়ে বলেছে, ‘‘মস্কভা মিসাইল ক্রুজ়ার-এ আগুন লেগেছিল। তাতে জাহাজে মজুত বোমায় বিস্ফোরণ ঘটে।’’ মস্কো জানিয়েছে, ভিতরে চালক এবং রুশ নৌবাহিনীর যে সদস্যরা ছিলেন, তাঁদের প্রত্যেককেই সময় থাকতে উদ্ধার করা গিয়েছে।
প্রসঙ্গত, সোভিয়েত যুগের জাহাজ মস্কভা। সে সময়ে ইউক্রেনের মিকোলিভে তৈরি করা হয়েছিল জাহাজটি। ১৯৮০ থেকে কাজ করছে এটি। এর আগে সিরিয়ার যুদ্ধে গিয়েছিল মস্কভা। জাহাজটিতে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধী ব্যবস্থা রয়েছে। তা ছাড়া, মাইন-টর্পেডো প্রতিরোধী ব্যবস্থা, অ্যান্টি-সাবমেরিন ব্যবস্থাও রয়েছে।