ফের অমর্ত্য সেনের বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ, বিতর্কে বিশ্বভারতীর উপাচার্য
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের নামে ফের বিশ্বভারতীর জমি কব্জা করার অভিযোগ তুলে বিতর্কিত মন্তব্য করলেন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। তাঁর বক্তব্যের সমালোচনা করছে বিশ্বভারতীর অধ্যাপক সংগঠন। উপাচার্যসুলভ নয়, রাজনীতিকের মতো তিনি কথাবার্তা বলছেন বলে কটাক্ষ করেছেন বিশ্বভারতীর প্রাক্তনী ও আশ্রমিকরা।
গত ২১ এপ্রিল পাঠভবনের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র অসীম দাসের রহস্যমৃত্যু ঘিরে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয় শান্তিনিকেতনে। তাকে খুনের অভিযোগ তোলেন মৃতের বাবা সঞ্জীব দাস। মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে ইতিমধ্যেই সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছেন তিনি। ওই ছাত্রের মৃতদেহ নিয়ে উপাচার্যের বাসভবনে তালা ভেঙে পরিবারের সদস্য ও বিশ্বভারতী ছাত্রছাত্রীর একাংশ ঢোকে বলে অভিযোগ। তবে উপাচার্য মৃতের পরিবারের লোকজনের সঙ্গে দেখা না করায় বিতর্ক বাড়ে। এব্যাপারে একটি বেসরকারি চ্যানেলকে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে উপাচার্য বলেন, বিশ্বভারতী হচ্ছে ভ্রষ্টাচারের আঁতুড়ঘর। আমার কাছে তথ্য আছে। বিশ্বভারতীর জমি উদ্ধারের প্রসঙ্গে উপাচার্য বলেন, ওঁকে(অমর্ত্য সেন) অপমান করার আমার কোনও ইচ্ছে নেই। আমি ওঁকে শ্রদ্ধা করি। কিন্তু কাগজপত্রে উনি আমাদের বেশি জমি নিয়ে নিয়েছেন। সবার সামনে অভিযোগ তুলছি, মিস্টার সেন বিখ্যাত অর্থনীতিবিদ হতে পারেন। কিন্তু উনি বিশ্বভারতীর জমি কব্জা করেছেন। ভূমি সংস্কার বিভাগকে খতিয়ে দেখতে বলুন। অমর্ত্য সেন প্রয়োজন মনে করলে আদালতে যেতে পারেন। কিন্তু আমার কাছে তথ্যপ্রমাণ আছে।
উপাচার্যের এই বক্তব্য ঘিরে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে শান্তিনিকেতনে। বিশ্বভারতীর অধ্যাপক সংগঠন ভিবিইউএএর সম্পাদক কৌশিক ভট্টাচার্য বলেন, যে ব্যক্তি নির্দ্বিধায় একের পর এক মিথ্যা কথা বলেন তাতে তাঁর অপরাধপ্রবণ মানসিকতা মজ্জাগত, এব্যাপারে কোনও সন্দেহ নেই। অমর্ত্য সেন সম্পর্কে যে অভিযোগ এনেছেন তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিদ্যুৎবাবু অমর্ত্য সেন সম্পর্কে মিথ্যা অভিযোগ করেছেন। এব্যাপারে প্রবীণ আশ্রমিক সুপ্রিয় ঠাকুর বলেন, অমর্ত্য সেন সম্পর্কে যে ব্যক্তি এরকম ঔদ্ধত্যপূর্ণ কথা বলতে পারেন তাঁর সম্পর্কে কথা বলতে ইচ্ছে করে না। এদিকে সোমবার বিশ্বভারতীর পরিস্থিতি নিয়ে হস্তক্ষেপের দাবিতে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন আইনজীবী রমাপ্রসাদ সরকার।