দেশ বিভাগে ফিরে যান

রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে অ-কংগ্রেসী বিরোধীদের বাজি শরদ পাওয়ার?

May 5, 2022 | 2 min read

জুলাইতেই রাষ্ট্রপতি নির্বাচন। আসন্ন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে সর্বসম্মত প্রার্থী হিসাবে অকংগ্রেসি কোনও নেতাকে প্রার্থী করতে সক্রিয় তৃণমূল কংগ্রেস, আম আদমি পার্টির মতো দল। রাজনৈতিক সূত্রে এমনটাই জানা গিয়েছে। এখনও প্রকাশ্যে না এলেও রাষ্ট্রপতি নির্বাচন ঘিরে বিরোধী শিবিরের রাজনৈতিক অঙ্ক কষা ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে। সর্বসম্মত প্রার্থী বাছাই করে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই দেওয়াটাই সব বিরোধী দলের উদ্দেশ্য। কিন্তু এক্ষেত্রে কংগ্রেসের প্রার্থীতে নিমরাজি তৃণমূল, আপ।

বিগত রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে কংগ্রেসের প্রার্থীকে দাঁড় করানো হয়েছিল। বিরোধীদের পক্ষে উপরাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থী ছিলেন অকংগ্রেসি গোপাল গান্ধী। সূত্রের খবর, এবারেও একই ভাবে কংগ্রেসের প্রার্থীকেই সর্বসম্মত ভাবে বিরোধীরা বেছে নিন তা, তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব চান না। সূত্রের খবর, প্রার্থী বাছাইয়ের এই রণনীতিতে তৃণমূল এবং আপ পাশে পাবে টিআরএস, এসপি-র মতো দলগুলিকেও। 

সম্প্রতি বিচারপতিদের আলোচনাসভায় যোগ দিতে এক দিনের দিল্লি সফরে এসেছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্য কোনও রাজনৈতিক নেতার সঙ্গে বৈঠক না করলেও দীর্ঘদিন পরে আপ নেতা তথা দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সঙ্গে আলোচনা হয় মমতার। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ওই বৈঠকেই উঠে এসেছে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের সম্ভাব্য কৌশল।

এই মুহূর্তে দেশে কংগ্রেসের প্রবল প্রতিপক্ষ বলতে কংগ্রেস ও আপ। তৃণমূলের সঙ্গে যে কংগ্রেসের সুসম্পর্ক নেই, তা সুবিদিত। পশ্চিমবঙ্গে বিপুলভাবে বিজেপিকে পরাজিত করার পরে, তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জাতীয় স্তরে বিজেপি বিরোধিতা মুখে পরিণত হয়েছেন। গোয়ার ভোটে কংগ্রেসকে তীব্র নিশানা করেছেন মমতা। গোয়ায় একাধিক কংগ্রেস নেতা যোগ দিয়েছেন তৃণমূল শিবিরে। পাশাপাশি মেঘালয়ের ১২ জন বিধায়ককে সঙ্গে নিয়ে মুকুল সাংমা কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে এসেছেন। সুস্মিতা দেব, রিপুন বোরার মতো নেতারা মমতার ডাকে কংগ্রেস ত্যাগ করেছেন। স্বাভাবিকভাবেই কংগ্রেস ও তৃণমূলের দূরত্ব বেড়েছে।

তৃণমূল, আপ বা এসপি চাইলেও রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিরোধীদের সর্বসম্মত প্রার্থী হিসেবে কোনও অ-কংগ্রেসি প্রার্থীকে ডিএমকে, শিবসেনা বা এনসিপির মতো দল কি সমর্থন করবে? কারণ ওই দলগুলো রাজ্য সরকার চালাচ্ছে কংগ্রেসের সমর্থনে। কংগ্রেসও হাত গুটিয়ে বসে থাকবে না। সূত্রের বক্তব্য, এনসিপি প্রধান শরদ পওয়ার যদি প্রার্থী হতে রাজি থাকেন, তা হলে কোনও বিরোধী দলেরই আপত্তি করার প্রশ্ন উঠবে না। প্রবীণ এই নেতার রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা এবং উচ্চতার কথা বিবেচনা করে তৃণমূল থেকে কংগ্রেস সবাই সমর্থন করবে।

কিন্তু হারের সম্ভাবনা প্রায় নিশ্চিত জেনেও কেন লড়বেন পওয়ার? এক্ষেত্রে রাজনৈতিক শিবিরের একাংশ বলছে, পরাজয় জেনেও সমস্ত বিরোধী দলের সমর্থন পাওয়াটাই এখানে লক্ষ্য। রাষ্ট্রপতি ভোটের মঞ্চে পওয়ার যদি সমস্ত বিরোধী দলের সমর্থন পান, ২০২৪-এর ভোটে তাঁর বিজেপি বিরোধী জোটে বড় ভূমিকা নিতে সুবিধা হবে। যদি পওয়ার না দাঁড়ান, সেই ক্ষেত্রেও কংগ্রেস শিবিরের বাইরের কোনও রাজনৈতিক নেতা বা অরাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে প্রার্থী হিসাবে সামনে নিয়ে আসার চেষ্টা থাকবে তৃণমূলের। সম্প্রতি ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেডি নেতা নবীন পট্টনায়েক স্পষ্ট করে দিয়েছেন, তিনি বিরোধীদের সঙ্গে জোট বেঁধে রাষ্ট্রপতি ভোটে লড়বেন না।

রাজনৈতিক সূত্রে আরও একটি সম্ভাবনার কথা জানা যাচ্ছে, নবীনের বিজেডি এবং জগন্মোহন রেড্ডির ওয়াইএসআর; এই দুটি দল বিজেপির প্রার্থীকেই ভোট দেবে। তাই এদের বাদ দিয়েই রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের হিসেবনিকেশ সারছেন বিরোধীরা।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Oppositions, #President election, #India, #sharad pawar, #politics

আরো দেখুন