তৃণমূলের স্মারকলিপি দেওয়ার পরই প্রয়াগরাজ হত্যাকাণ্ডে মামলা দায়ের মানবাধিকার কমিশনের
প্রয়াগরাজ হত্যাকাণ্ডে মামলা দায়ের করল জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। শুক্রবার প্রয়াগরাজের ঘটনার প্রেক্ষিতে মানবাদিকার কমিশনের চেয়ারপার্সনের সঙ্গে দেখা করে তৃণমূলের প্রতিনিধি দল। দলের রাজ্যসভার সাংসদ দোলা সেন, তৃণমূল নেতা সাকেত গোখলে, জ্যোৎস্না মাণ্ডি ও উত্তরপ্রদেশের তৃণমূল নেতা ললিতেশ ত্রিপাঠী কমিশনে স্মারকলিপিও দেন। তৃণমূলের স্মারকলিপি দেওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যে প্রয়াগরাজ হত্যাকাণ্ডে মামলা দায়ের করল কমিশন।
স্মারকলিপিতে তৃণমূল কংগ্রেস লিখেছে, ‘প্রয়াগরাজে নিহতদের পরিবারের সদস্য সুনীল যাদব যে সমস্ত অভিযোগ করেছেন, তার অধিকাংশই এফআইআর থেকে বাদ দিয়েছে পুলিস। সুনীলের স্ত্রী ও বোনের বিবস্ত্র রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়। পরিবারের অনুমান, ওই দু’জনকে ধর্ষণ করে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু এফআইআরে এই ধর্ষণের বিষয়টিরও উল্লেখ নেই। নিহতদের পরিবারের অভিযোগ, এই বিষয়টি বারবার উল্লেখ করা হলেও পুলিস তা এফআইআরে রাখেনি।’
প্রয়াগরাজে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের তরফে একটি ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম পাঠানোর দাবিও জানায় তৃণমূল। স্মারকলিপিতে লেখা হয়েছে, ‘নিহতদের পরিবারের সদস্যদের জন্য প্রয়োজনীয় নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যসচিব, পুলিসের ডিজি এবং প্রয়াগরাজ জেলার সিনিয়র সুপারিনটেনডেন্ট অফ পুলিসকে প্রয়োজনীয় নোটিস দিতে হবে। মামলাটি সিবিআইকে হস্তান্তর করতে হবে।’ এফআইআরে ধর্ষণের বিষয়টিও উল্লেখ করার দাবি জানায় তৃণমূল।
সম্প্রতি প্রয়াগরাজে একই পরিবারের পাঁচজনকে খুনের পর বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে৷ মর্মান্তিক ওই ঘটনায় মৃত্যু হয় দু’বছরের এক শিশুরও৷ নিহতরা হলেন, রাম কুমার যাদব (৫৫), তাঁর স্ত্রী কুসুম দেবী (৫২), মেয়ে মণীষা (২৫), পুত্রবধূ সবিতা (২৭) এবং নাতনি মীনাক্ষী (২)৷ ছেলে সুনীল এবং নাতনি সাক্ষী সেই সময় বাড়িতে ছিলেন না৷ তাঁরা বেঁচে যান৷ মৃতদেহগুলিতে ক্ষতের চিহ্ন মেলে। সিনিয়র পুলিস অফিসার অজয় কুমার জানিয়েছিলেন, প্রত্যেকের মাথায় ভারী কিছু দিয়ে আঘাত করা হয়েছে৷
প্রয়াগরাজের ঘটনায় তপ্ত দেশের রাজনীতি। হত্যাকাণ্ডের তদন্তে তদন্তকারী দল গঠন করা হয়েছে৷ স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছিলেন, তাঁরা রাম যাদবের বাড়িতে আগুন দেখতে পেয়ে পুলিসকে খবর দেন৷ পুলিস ও দমকল পৌঁছে ঘর থেকে পাঁচজনের দেহ উদ্ধার করে৷ বিষয়টি নিয়ে প্রথম থেকেই সুর চড়িয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস ও দেশের প্রতিটি বিরোধী দল। চাপে পরে এই হত্যাকাণ্ডের দ্রুত তদন্তের আশ্বাস দিয়েছে উত্তরপ্রদেশ সরকার। দোষীদের কোনও ভাবেই ছাড়া হবে না বলে পুলিস এবং প্রশাসনের তরফে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।