লেন্সবন্দি করেছিলেন ভারতে করোনার ভয়াবহতাকে, মরণোত্তর সম্মান পেলেন দানিশ সিদ্দিকি
তিনি আর নেই, কিন্তু তাঁর কাজ আজও সারা বিশ্ববাসীকে চমকে দিচ্ছে। ২০২২ সালে পুলিৎজার পুরস্কার বিজয়ীদের তালিকায় ফের একবার নিজের নাম করে নিলেন ভারতীয় চিত্রসাংবাদিক দানিশ সিদ্দিকি। রয়টার্সের সাংবাদিক দানিশ আফগানিস্তানে তালিবানদের হামলায় প্রয়াত হয়েছেন। কিন্তু তাঁর লেন্সবন্দি ছবিতে আজও তিনি মানুষের হৃদয়ে রয়েছেন।
বিজয়ীদের তালিকায় রয়েছেন আরও তিন ভারতীয়। তাঁরা হলেন দ্য ওয়াশিংটন পোস্টের আদনান আবিদি, সান্না ইরশাদ মাট্টু ও অমিত দাভে। প্রত্যেকেই কোভিড-১৯এর মৃত্যু সংক্রান্ত ছবি তুলে সেরার তালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন। সোমবারই সাংবাদিকতা, বই, নাটক ও সঙ্গীতে পুলিৎজার পুরস্কার বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে।
রয়টার্সের সাংবাদিক দানিশ সিদ্দিকি ও তাঁর তিন সহকর্মী ওয়াশিংটন পোস্টের সাংবাদিক আদনান আবিদি, সান্না ইরশাদ মাট্টু ও অমিত দাভে – প্রত্যেকেই দেশের কোভিড মহামারি ও মহামারির ক্ষয়ক্ষতির ছবি তোলার জন্য পুলিৎজার পুরস্কার পেয়েছেন।
দানিশ গতবছরই আফগানিস্তানে তালিবানদের যুদ্ধের ভয়ঙ্কর ছবি তোলার সময় হামলায় প্রাণ হারিয়েছিলেন। ব্রেকিং ফোটোগ্রাফি বিভাগে তাঁদের তোলা ছবিগুলি মনোনীত হয়েছিল। সেখানে থেকেই বিচারকরা তাঁদের ছবিগুলিতে সেরা বলে চিহ্নিত করেন।
বিচারকদের কথায় ভারসাম্যপূর্ণ, অন্তরঙ্গতা ও ধ্বংসাত্মকতা– এই তিনটি কারণে তাঁদের ছবিগুলি দর্শকদের মতে একটি বিশেষ অনুভূতি তৈরি করেছিল। দাবি পুলিৎজার কমিটির।
গত বছর জুলাইতে কান্দাহারে স্পিন বলডাক জেলায় সেই অশান্ত পরিস্থিতির ছবি তুলতে গিয়েছিলেন দানিশ সিদ্দিকি৷ কিন্তু মুহুর্তকে বন্দী করার আগেই জীবনের গুলি করে তালিবানরা তাঁকে খুন করে বলে জানা গিয়েছে।
৪০-এর যুবকের বাড়ি মুম্বইয়ে। জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া থেকে অর্থনীতিতে স্নাতকের পাঠ শেষে মাস কমিউনিকেশনের একটি কোর্স করেন। টেলিভিশন সাংবাদিক হিসেবে কেরিয়ার শুরু করেছিলেন দানিশ সিদ্দিকি। যদিও পরবর্তীতে চিত্র সাংবাদিকতাকেই পেশা হিসেবে বেছে নেন তিনি। ২০১০ সালে আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্সে শিক্ষানবীশ চিত্র সাংবাদিক হিসেবে যোগ দেন। কর্মদক্ষতা দিয়ে অনায়াসেই সংস্থার প্রধান চিত্র সাংবাদিকের পদ পান দানিশ।
ইরাকের মসুলের যুদ্ধ, ২০১৫ সালে নেপালের ভূমিকম্পের ছবি, ২০১৯-২০ এ হংকং প্রোটেস্ট, ২০২০ সালে দিল্লির দাঙ্গায় দানিশ সিদ্দিকির তোলা সেই সব ছবি বিশ্ববাসীর চোখে বন্দিত হয়েছিল। ২০১৮ সালে সহকর্মী আদনান আবিদির সঙ্গে ফিচার ফোটোগ্রাফিতে পুলিৎজার পুরস্কার পেয়েছিলেন দানিশ। ফের পেলেন ২০২২ সালে, তবে এবার মরণোত্তর।