জাল ওষুধের রমরমা রুখতে প্রতিটি জেলা সদরে নতুন ড্রাগ অফিস খুলবে রাজ্য
ভেজাল ওষুধে বাজার ছেয়ে যাওয়ার প্রসঙ্গ তুলে কিছুদিন আগেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওষুধের গুণাগুণ পরীক্ষা করে দেখার জন্য নতুন ড্রাগ ল্যাবরেটরি তৈরি এবং এই সংক্রান্ত পরিকাঠামো উন্নয়নের ঘোষণাও করেছিলেন তিনি। এর জন্য প্রয়োজন আঞ্চলিক ড্রাগ অফিসের। সেই লক্ষ্যে এবার প্রতিটি জেলা সদরে নতুন ড্রাগ অফিস খোলার উদ্যোগ নিল রাজ্য সরকার।
মঙ্গলবার, এই সংক্রান্ত এক নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, উন্নত স্বাস্থ্য পরিষেবা নিশ্চিত করতে ওষুধের গুণাগুণ পরীক্ষা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। পশ্চিমবঙ্গে ড্রাগ ডাইরেক্টরেটের অধীন পাঁচটি আঞ্চলিক ও ১৮ টি জেলা অফিস রয়েছে। আঞ্চলিক অফিসগুলি রয়েছে কলকাতা, বাঁকুড়া, বর্ধমান, বহরমপুর এবং শিলিগুড়িতে। আবার সেন্ট্রাল ড্রাগ ডাইরেক্টরেটের অফিসে অবস্থিত সেন্ট্রাল ড্রাগ টেস্টিং ল্যাবরেটরির পরিকাঠামোর উন্নয়ন হবে। নতুন যন্ত্র বসানো হবে। পাশাপাশি, এর অধীনে থাকা আঞ্চলিক এবং জেলা অফিসগুলিরও পরিকাঠামোর উন্নয়ন হবে। সে কারণে বাঁকুড়া, বর্ধমান, বহরমপুর এবং শিলিগুড়িতে উন্নত পরিকাঠামো যুক্ত অফিসের প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করছেন সরকারি আধিকারিকরা। এই জায়গাগুলিতে কম করে চার হাজার বর্গফুটের আঞ্চলিক ড্রাগ অফিস গড়ে তোলা হবে। পাশাপাশি, প্রতিটি জেলা সদরেও গড়ে উঠবে একটি করে ড্রাগ অফিস। জেলা সদরের অফিসগুলির জন্য এক থেকে দু’হাজার বর্গফুট জায়গায় প্রয়োজন হবে বলে মনে করা হচ্ছে। সামগ্রিক প্রকল্পটির জন্য খরচ হবে ১০০ কোটি টাকারও বেশি।
এই অফিসগুলি দ্রুত শুরু করতে চায় রাজ্য সরকার। জেলা আধিকারিকদের অফিস খোলার উপযুক্ত পরিকাঠামো চিহ্নিত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকদের সঙ্গে এই সংক্রান্ত বিষয় বিস্তারিত আলোচনা করতে হবে। এর ফলে জেলায় জেলায় ওষুধ বিক্রেতাদের নথিপত্র যাচাইয়ের কাজ সাবলীলভাবে করা যাবে বলে মনে করছেন আধিকারিকরা। পাশাপাশি স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে পর্যাপ্ত ওষুধ মজুত আছে কি না এবং তা নির্দিষ্ট মূল্যে বিক্রি হচ্ছে কি না তারও নজরদারি আরও মজবুত হবে।
প্রসঙ্গত, ৭ এপ্রিল নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, দু’নম্বরি ওষুধে ছেয়ে গিয়েছে। তাই আমরা ড্রাগ ল্যাবরেটরি করব।’ তিনি আরও জানিয়েছিলেন, ওষুধ পরীক্ষার জন্য ল্যাবরেটরি হবে। এজন্য এবারের বাজেটে টাকা বরাদ্দ রয়েছে। যে ওষুধগুলি বাজারে বিক্রি হচ্ছে তা আসল না নকল তার নমুনা সংগ্রহ করে যাচাই করা হবে এই পরীক্ষাগারে। প্রসঙ্গত কাঁথি হাসপাতালে বাংলাদেশে তৈরি ওষুধ দেওয়া নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। এই বিষয়ে তদন্তও শুরু হয়েছিল।