চরণ সিংহের মৃত্যুবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে বিজেপি বিরোধী জোটের মহড়া
সামনেই ২০২৪-এর লড়াই। বিজেপিকে পরাজিত করে সমমনস্ক দলগুলোকে এক ছাতার তলায় আসতে হবে, এ কথা বেশ উপলব্ধি করেছে অবিজেপি দলগুলো। বিগত এক বছর ধরেই সে কাজ শুরু করেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী চৌধুরী চরণ সিংহের ৩৫তম মৃত্যুবার্ষিকীর অনুষ্ঠান থেকে বিরোধী ঐক্যের দানা বাঁধার কাজ শুরু হল। জোটের সলতে পাকানোর ক্ষেত্রে কান্ডারির ভূমিকা পালন করল তৃণমূল কংগ্রেস। কংগ্রেস ছাড়াই শুরু হল এ কাজ। রবিবার ২৯ মে থেকেই কংগ্রেসকে বাইরে রেখেই বিজেপি বিরোধী জোটের কাজ শুরু করল অন্যদলগুলো।
চরণ সিংহের মৃত্যুবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে রাজ্যসভার সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, মোদী সরকার মুখে যতই সব কা বিকাশ বলে ঢাক পেটাক, আসলে বিজেপি সরকার সব কা সর্বনাশ করে তবেই ছাড়বে। তাঁর কথায়, দেশে ধনী ও দরিদ্রের মধ্যে অর্থনৈতিক পার্থক্যের কারণে ভারতবর্ষ ক্রমশ গৃহযুদ্ধের পথে এগচ্ছে। কিন্তু বিজেপির এ নিয়ে কোন মাথা ব্যথা নেই! মানুষের কী প্রয়োজন তা না ভেবেই বিজেপি ধর্মীয় মিথ্যাচার ছড়াতে ব্যস্ত।
কর্মসংস্থান, বেকারত্ব, মূল্যবৃদ্ধির মতো সমস্যাগুলোকে আড়াল করতে অযোধ্যা, কাশী, মথুরার মতো ধর্মীয়উস্কানিমূলক জিনিসকে হাতিয়ার করছে বিজেপি। দেশকে অশান্ত করার চেষ্টা চলছে, দেশবাসীকে আঁধারে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। এরই নাম মোদীর বিকাশ।
সুখেন্দুবাবু কথায়, ১০ শতাংশ দেশবাসীর কাছে দেশের ৬৪ শতাংশ সম্পদ কুক্ষিগত রয়েছে। অপরদিকে, ৫০ শতাংশ মানুষের হাতে মাত্র ৫.২ শতাংশ সম্পদ রয়েছে। এই বৈষম্য দূর মোদী সরকারের আর্থিক নীতি পরিবর্তন করা অবশ্যক। সেই কারণে জাতিগত জনগণনা করা প্রয়োজন। কোনও জাতির জনসংখ্যা বেশি, তাহলেই তা স্পষ্ট হয়ে যাবে। যে জাতির জনসংখ্যা কম তাও জানা যাবে। রাজনাথ সিংহ সংসদে দাঁড়িয়ে জাতিগত গণনা হবে বলেই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, যদিও তা কেবল প্রতিশ্রুতির স্তরেই আটকে রয়েছে। তা নিয়েও সওয়াল করেন তৃণমূল সাংসদ।
এদিনের অনুষ্ঠানে তৃণমূল, আরজেডি, সপা, জেডিইউ, আপ, সিপিএমসহ অকংগ্রেসি-অবিজেপি অধিকাংশ দলগুলো উপস্থিত ছিল। যদিও কংগ্রেস ব্রাত্য ছিল। মোদী তথা বিজেপি সরকারের সমালোচনায় কদিন আগেই সরব হওয়া মেঘালয়ের রাজ্যপাল সত্যপাল মালিককে এই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হলেও তিনি আসেননি। শুভেচ্ছাবার্তা পাঠিয়েছেন। স্পষ্টত বোঝাই যায়, মঞ্চটি ছিলই বিজেপি বিরোধী শক্তির দানা বাঁধার মঞ্চ। ২৮ মে চেন্নাইয়ে ডিএমকে প্রতিষ্ঠাতা করুণানিধির মূর্তি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তৃণমূল প্রতিনিধি হাজির ছিলাম, আবার ২৯ মে আরএলডির অনুষ্ঠানে তৃণমূল কংগ্রেসকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। লোকসভা ও রাজ্যসভায় যথাক্রমে তৃণমূল চতুর্থ ও তৃতীয় বৃহত্তম শক্তিতে উঠে এসেছে।
২০২৪ যত এগিয়ে আসছে, দেশজুড়ে ততই গুরুত্ব বাড়াচ্ছে জোড়াফুলের। আঞ্চলিক দলগুলিও তৃণমূলকে সামনের সারিতে নিয়েই ২৪-এর লড়াইতে নামতে চাইছে।