বাম জমানায় বেআইনি নিয়োগের জের, ৬১৪ জনের চাকরি বাতিল করল SAT
বাম জমানায় বেআইনিভাবে নিয়োগের কারণে বাতিল হল ৬১৪ জনের চাকরি। বাম শাসনকালের একেবারে শেষ লগ্নে ২০১০ সালে সম্পূর্ণ নিয়ম বহির্ভূতভাবে ৬১৪ জনকে খাদ্য দপ্তরে গ্রুপ ডি পদে নিয়োগ করা হয়। এই নিয়োগের বৈধ্যতা নিয়ে অভিযোগ করা হয়েছিল। অভিযোগ সত্য প্রমাণ হতেই ৬১৪ জনের চাকরি খারিজ করল স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনাল (SAT)। মামলায় সরকারপক্ষের আইনজীবী গৌতম পাঠক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, এই মামলায় স্যাটের রায় রাজ্য সরকারকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। মুখ্যসচিবের কাছেও স্যাটের নির্দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এই নিয়োগের সিলেকশন বোর্ডের পাঁচ জন সদস্যসহ নিয়োগ প্রক্রিয়ায় যারা যারা যুক্ত ছিলেন, সকলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করার নির্দেশও দিয়েছে স্যাট। নিয়োগ প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত অর্থাৎ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে খাদ্য দপ্তরকে বিভাগীয় তদন্ত করতে বলা হয়েছে। তদন্তের জন্য স্যাট আট সপ্তাহের চূড়ান্ত সময়সীমাও বেঁধে দিয়েছে। ৮ জুন বিচারপতি সৌমিত্র পাল ও প্রশাসনিক সদস্য সৈয়দ আহমেদ বাবার বেঞ্চ এই মর্মে নির্দেশ দিয়েছে। স্যাটের তরফে বলা হয়েছে, ওই নিয়োগ পক্ষপাতদুষ্ট, গোটা নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বজনপোষণ করা হয়েছে।
২০১৬ -এর ১০ জুন মামলাটি স্যাটের হাতে যায়। কলকাতা হাইকোর্ট সেই সময়ে একদিনে সিলেকশন কমিটির ৮০০ জনের ইন্টারভিউ নেওয়া নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছিল। সিলেকশন বোর্ডের কয়েকজন সদস্যের ঘনিষ্ঠ আত্মীয়রা চাকরিপ্রার্থী ছিলেন বলেও অভিযোগ ওঠে। তা সত্ত্বেও তারা ইন্টারভিউ প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়ে ছিলেন। তথ্য বলছে, কমিটির পাঁচ সদস্যই ২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ওই বছরের মার্চ পর্যন্ত ইন্টারভিউ প্রক্রিয়ায় উপস্থিত নিয়েছিলেন।
কেবল ইন্টারভিউয়ের মাধ্যমেই গ্রুপ ডি কর্মীদের নিয়োগ হয়েছিল, অন্য কোন পরীক্ষা নেওয়া হয়নি। খাদ্যদপ্তর নিজ উদ্যোগেই নিয়োগ প্রক্রিয়া চালিয়েছিল। ২০০৮ সালে খাদ্য দপ্তর নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করে, সেই ভিত্তিতে লক্ষাধিক আবেদন জমা পড়ে। খাদ্যদপ্তর, তাদের কলকাতা ও জেলার বিভিন্ন অফিসে মিলিয়ে কর্মীদের নিযুক্ত করে। হাইকোর্টের নির্দেশেই দ্বিতীয়বারের জন্য মামলাটির তদন্তভার স্যাটকে দেওয়া হয়। মামলায় যুক্ত হওয়ার জন্যে চাকরি প্রাপকদের বারবার জানানো হলেও তারা তা করেননি।