বাংলায় শিল্পস্থাপন করতে দিচ্ছে না মোদী সরকার, সরব মার্কিন বিনিয়োগকারী
মোদী সরকারের লাগাতার বঞ্চনার শিকার বাংলা। রাজ্যের প্রতি মোদী সরকারের বৈষম্যমূলক আচরণের বিরুদ্ধে মার্কিনমুলুকেও সরব বাঙালি বিনিয়োগকারী। আমেরিকা নিবাসী বিনিয়োগকারী ডাঃ দীপক নন্দী বাংলাকে বঞ্চনা নিয়ে মোদীর বিরুদ্ধে সরব হলেন।
লাস ভেগাসের ওই বিনিয়োগকারী মেডিক্যাল ব্যাক অফিস অ্যান্ড প্রসেসিং মেডিক্যাল ডকুমেন্টসের অফিস বাংলাতে চালু করতে আগ্রহী। কিন্তু দীপক বাবুর অভিযোগ, বাংলায় শিল্পস্থাপন করার জন্যে তিনি মোদী সরকারের তরফে কোন সাহায্য পাচ্ছে না। লাস ভেগাসে আয়োজিত নর্থ আমেরিকান বেঙ্গলি কনভেনশনে রাজ্যের আর্থিক উপদেষ্টা তথা বাংলার প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রকে তিনি সরাসরি ওই অভিযোগ জানিয়েছেন।
ডাঃ নন্দী বাংলায় শিল্প স্থাপন করার ফলে রাজ্যে ১,১০০ জনের কর্মসংস্থান হয়েছে। কিন্তু তার স্পষ্ট অভিযোগ, বাংলায় শিল্পস্থাপন করলে মোদী সরকারের তরফে চূড়ান্ত অসহযোগিতা করা হচ্ছে। অথচ নির্দিষ্ট কিছু রাজ্যে শিল্প নিয়ে যেতে অতি উৎসাহ দেখাচ্ছে মোদী সরকার। বলার অপেক্ষা রাখে না, ওই নির্দিষ্ট রাজ্যগুলো আদপে বিজেপি শাসিত ডবল ইঞ্জিন রাজ্য। নিউইয়র্কের ভারতীয় দূতবাসে এবং নয়াদিল্লির মার্কিন দূতাবাসে বিষয়গুলি বিস্তারিত জানাতে দীপক বাবুকে নিদান দেন অর্থমন্ত্রী।
বাণিজ্য সম্মেলনে বিনিয়োগকারীরাসহ সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্র মিলিয়ে পাঁচ হাজারের বেশি বিশিষ্ট ব্যক্তি সামিল হয়েছিলেন। সেখানেই বাংলার শিল্পের বর্তমান ছবি তুলে ধরেন অমিতবাবু। টিসিএস ও কগনিজেন্টের মিলিয়ে বাংলায় ৭৫ হাজার তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী কাজ করছেন, জামশেদপুরের কারখানা বন্ধ করে টাটা-হিতাচির মতো সংস্থা খড়্গপুরে নতুন কারখানা গড়ে তুলেছে। দেউচা-পাচামি কোল ব্লকসহ একাধিক উদাহরণ বাণিজ্য সম্মেলনে তুলে ধরে বাংলায় বিনিয়োগের আহ্বান জানান অমিত বাবু।
অমিত মিত্রের কথায়, শিল্পপতিদের সঙ্গে সঙ্গে মার্কিন মুলুকের ইঞ্জিনিয়ারিং ও তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে নিযুক্ত ব্যক্তিরাও বাংলার সঙ্গে কাজ করতে চান। ইতালি, জার্মানি, দক্ষিণ কোরিয়া, পোল্যান্ড ইত্যাদি দেশগুলি রাজ্যে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে। অতিমারির দাপটে যখন ভারতের জিডিপি ৭.৫ শতাংশ নেমে গিয়েছিল, সেই সময় সকলকে চমকে দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অর্থনীতি দৌলতে বাংলার জিডিপি দেশের হারের চেয়েও ১.০৬ শতাংশ বেশি ছিল। এই ধরণের তথ্যপরিসংখ্যান তুলে ধরে বাণিজ্য সম্মেলনে উপস্থিত বিনিয়োগকারীদের বাংলায় লগ্নি আনার জন্য আহ্বান করেন অমিত মিত্র।