দুর্নীতির অভিযোগ ওঠা বিজেপি নেতা-ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নিয়েছে মোদী সরকার? জানুন
২০১৪ সাল থেকে নরেন্দ্র মোদী সরকার ক্রমাগত বিরোধী দলের নেতাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আনছে। বিশেষ করে কোনও নির্বাচন এলেই সেই দুর্নীতি নিয়ে তদন্তের গতি বাড়িয়ে দিচ্ছে। কিন্তু এটাকে নিছকই দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই বলা চলে না। কারণ, যদি তাই হত তাহলে যে সব বিজেপি নেতাদের বা ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে তাঁদের বিরুদ্ধেও সমান তালে তদন্ত প্রক্রিয়া চলত। একনজরে দেখে নিন কয়েকজন বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ এবং তার পরিনতি-
বি এস ইয়েদুরাপ্পা: দুর্নীতিগ্রস্তের ভাবমূর্তি নিয়েও তিনি ২০১৯-এ ফের কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন। জমি ও খনি কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত, যাঁর কাছ থেকে উদ্ধার হওখয়া ডায়েরিগুলিতে লেখা ছিল কোন কোন শীর্ষ বিজেপি নেতাকে, বিচারক এবং উকিলদের মোটা অঙ্কের অর্থ দিয়েছিলেন তিনি। সেই ইয়েদুরাপ্পা আজ ‘মহান’। যিনি বেশিরভাগ অভিযোগ থেকেই রেহাই পেয়েছেন। যে সিবিআই বছর ধরে তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত চালিয়েছিল, মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পর তারা তাঁর বিরুদ্ধে নাকি কোনও প্রমাণ দিতে পারেনি। সুপ্রিম কোর্ট এখনও তাঁর বিরুদ্ধে জমি কেলেঙ্কারির তদন্তের নির্দেশ দিতে পারে।
বল্লারীর রেড্ডি ভাইয়েরা: ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে, সিবিআই বল্লারীর রেড্ডি ভাইদের বিরুদ্ধে চলা মামলাগুলির ইতি টেনে দেয়। দেশের সম্পদ এরকম বিপুলভাবে চুরি করছিলেন যারা, সেই রেড্ডি ভাইদের ভোটে জেতার জন্য প্রয়োজন ছিল বিজেপি’র। যে বন-আধিকারিক এই বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছিলেন, তাঁকে বরখাস্ত করে দেয় মোদী সরকার।
হিমন্ত বিশ্বশর্মা: তাঁকে বলা হয় উত্তর-পূর্বের অমিত শাহ। একদা কংগ্রেস নেতা বিশ্বশর্মার বিরুদ্ধেও উঠেছিল একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ। গুয়াহাটিতে জল সরবরাহ কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত বলে এক সময় হিমন্ত বিশ্বশর্মার বিরুদ্ধে নির্বাচনে প্রচারও করেছিল বিজেপি। এমনকি একটি পুস্তিকাও প্রকাশ করেছিল। আমেরিকান কনস্ট্রাকশন কোম্পানিকে জড়িয়ে এই দুর্নীতিটি ‘লুইস বার্জার’ কেলেঙ্কারি নামে পরিচিত। এর পর সেই হিমন্ত বিশ্বশর্মাই এখন অসমে বিজেপি’র মুখ্যমন্ত্রী! এবং তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ এখন ঠান্ডা ঘরে চলে গিয়েছে।
আরও পড়ুনঃ অসমে পিপিই কিট দুর্নীতি – নাম জড়ালো হিমন্ত বিশ্বশর্মার স্ত্রীর
শিবরাজ সিং চৌহান: ২০১৭ সালে সিবিআই মধ্যপ্রদেশের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহানকে ব্যাপম কেলেঙ্কারিতে ক্লিন চিট দিয়েছিল। শিবরাজ সিং যদি কংগ্রেস সদস্য হতেন তাহলে কি তাঁকে সিবিআই ক্লিন চিট দিত? একটি প্রবেশিকা পরীক্ষাকে ঘিরে বড় ধরনের একটা কেলেঙ্কারি। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, এই কেলেঙ্কারির বিষয়টি যাঁরা সামনে এনেছিলেন বা সাক্ষী হয়েছিলেন তাঁদের রহস্যজনকভাবে মৃত্যু হয়েছিল। সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী ৪০ জনেরও বেশি মানুষের রহস্যজনকভাবে মৃত্যু হয়েছিল। যা নিয়ে আর কোনও তদন্ত এগোয়নি।