সংশোধনের আড়ালে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা কর্পোরেটদের হাতে তুলে দেবে মোদী সরকার? উঠছে প্রশ্ন
মোদী আমলে ক্রমশ সীমিত হয়ে আসছে ভারতের গণতান্ত্রিক পরিসর। মোদী সরকারের বিরুদ্ধে বারবার দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোয় আঘাত আনার অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু নিরুত্তর মোদী সরকার। বিরোধীরা বিরোধীর মতোই বলুক আর অন্যদিকে, চূড়ান্ত ফ্যাসিবাদের দৃষ্টান্ত স্থাপন করুক মোদী সরকার। সাম্প্রতিক সময়ে ‘বিদ্যুৎ সংশোধনী বিল ২০২২’ আবারও মোদীর ফ্যাসিবাদী দৃষ্টিভঙ্গির উদাহরণ হয়ে রইল।
বিরোধীদের প্রায় সকলেরই দাবি, আদপে এই বিল মোদীর কর্পোরেটপ্রীতির নজির। পাইয়ে দেওয়ার জোগাড় বললেও ভুল হয় না। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, এই নয়া বিদ্যুৎ আইনে রাজ্যের অধিকারে হস্তক্ষেপ করা হবে। অন্যদিকে, দেশের কৃষকদের অভিযোগ, বিদ্যুৎ বণ্টন ব্যবস্থা বেসরকারি নিয়ন্ত্রণাধীন হলে; আর সস্তায় বিদ্যুৎ পাবেন না কৃষকেরা। ৮ আগস্ট সোমবার আজ লোকসভায় ‘বিদ্যুৎ সংশোধনী বিল ২০২২’পেশ হতে চলেছে। তৃণমূলসহ প্রায় সব বিরোধী দলগুলোই এই বিলের বিরোধিতায় নামছে। বিরোধীদের সাফ অভিযোগ, আদপে মোদী সরকার ২০০৩ সালের বিল সংশোধন করে বেসরকারি সংস্থাকে পাইয়ে দেওয়ার ফন্দি এঁটেছে।
বিদ্যুৎকর্মীদের সংগঠন ‘ন্যাশনাল কো-অর্ডিনেশন কমিটি অব ইলেক্ট্রিসিটি এমপ্লয়িজ অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার্স’ দেশজুড়ে এই বিলের বিরুদ্ধে আজ আন্দোলনে নামছে। কৃষকদের সংগঠনও বিলের বিরোধিতায় আন্দোলনে নামতে প্রস্তুত। এই বিলের মাধ্যমে পরিকল্পিতভাবে রাজ্যের ক্ষমতা খর্ব করা হবে। নয়া বিলে বিদ্যুতের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে কমিশন গড়া কথা বলা হচ্ছে। বিদ্যুতের দাম থেকে বিদ্যুৎ বণ্টনকারীর এলাকা নির্ধারণ সব কিছুই ঠিক করবে সংশ্লিষ্ট কমিশন। বিদ্যুতের দাম বদলানোর ক্ষমতাও থাকবে কমিশনের হাতে। ফলে রাজ্যের হাতে কোন ক্ষমতাই থাকবে না।
এখন এক একটি নির্দিষ্ট এলাকায়, একটি নির্দিষ্ট বণ্টনকারী সংস্থা বিদ্যুৎ সরবরাহ করে। কিন্তু সংশোধনী বিলে তা হবে না। মোবাইল অথবা টেলিফোন নেটওয়ার্কের ক্ষেত্রে যেমন হয়, অর্থাৎ একই এলাকায় একাধিক বিদ্যুৎ বণ্টনকারী সংস্থাকে সুযোগ দেওয়া হবে। এতেই শঙ্কার সিঁদুরে মেঘ দেখছেন বিরোধীরা। তাদের অভিযোগ, সংশোধনীর নেপথ্যে মোদী সরকার কর্পোরেট সংস্থার হাতে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা পুরোপুরি তুলে দিতে চাইছে। তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়ের কথায়, বিদ্যুৎ সংশোধনী বিলের ফলে একদিকে যেমন রাজ্যের অধিকার খর্ব হবে, তেমনই কৃষকদের সুবিধাও বন্ধ হয়ে যাবে। তিনি সাফ জানিয়েছেন, এই বিল পেশ হলেই বিরোধিতায় নামবে তৃণমূল কংগ্রেস।