হিজাব বিতর্কে জ্বলছে ইরান, পুলিশের গুলিতে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে প্রায় ৫০
হিজাব জ্বালিয়ে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভে মহিলারা, আর সেই সময়ে হিজাবহীন এক মহিলা সাংবাদিককে সাক্ষাৎকার দিলেন না ইরানের রাষ্ট্রপতি ইব্রাহিম রাইসি। হিজাব আইন লঙ্ঘনের জন্য পুলিশ হেফাজতে মাসা আমিনি নামে এক মহিলার মৃত্যুর পর থেকে উত্তাল গোটা দেশ। বিক্ষোভ-দাঙ্গায় এ পর্যন্ত অন্তত ৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে।
রাষ্ট্রপতি ইব্রাহিম রাইসির সাক্ষাৎকার নেবার কথা ছিল CNN -এর। সাক্ষাৎকারের সময় CNN -এর মুখ্য আন্তর্জাতিক বিষয়ক সঞ্চালিকা ক্রিস্টিন আমনপোরকে হিজাব পরতে বলেন রাইসি। স্বাভাবিকভাবেই সঞ্চালিকা তা অস্বীকার করলে সাক্ষাৎকার দেবেন না বলে রাইসি জানিয়ে দেন।
এই ঘটনার কথা টুইটে জানিয়েছেন ক্রিস্টিন। আমেরিকার মাটিতে এটাই ছিল রাইসির প্রথম সাক্ষাৎকার। ক্রিস্টিন লিখেছেন, দীর্ঘদিন ধরে সব কিছু প্রস্তুতি নিয়েও শেষ পর্যন্ত তিনি আসেননি। তাঁর এক ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি এসে জানান, আমাকে মাথায় কাপড় পরে বসতে হবে। আমি সঙ্গে সঙ্গে বিনীতভাবে তাঁকে না করে দিই। তিনি বলেন, এটা পবিত্র মহরম এবং সফর মাস। তাই কোনও মহিলা মাথায় কাপড় না বাঁধলে তিনি কথা বলবেন না।
এদিকে, ইরানি মহিলাদের আন্দোলনকে দমন করতে পুরোদস্তুর পীড়ন চালাচ্ছে সেদেশের পুলিশ। মাহশা আমিনির মৃত্যুর প্রতিবাদে পথে নেমে পুলিশের গুলিতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০-এ। বিক্ষোভকারীদের রোষের মুখে পড়ে মৃত্যু হয়েছে পাঁচ নিরাপত্তারক্ষীরও। এমনটাই দাবি করা হয়েছে অসলোর স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘ইরান হিউম্যান রাইটস্’-এর পক্ষ থেকে। ইরানের মানবাধিকার সংস্থার প্রধান মাহমুদ আমিরি মোঘাদ্দম বলেছেন, মৌলিক অধিকার ও মানুষের মতো বাঁচার সম্মানের দাবিতে ইরানের মানুষ এখন পথে নেমেছে। তাঁদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে স্তব্ধ করতে সরকার গুলি চালাচ্ছে। দেশের অন্তত ৩০ শহরে এই আন্দোলন চলছে। পুলিশ নির্বিচারে ধরপাকড় চালাচ্ছে। এদিকে রাষ্ট্রপতি ইব্রাহিম রাইসি এই আন্দোলনকে নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টা বলে মন্তব্য করে বলেছেন হিজাব-বিরোধী আন্দোলন গ্রহণযোগ্য নয় ।