দেশ বিভাগে ফিরে যান

দীপাবলির পর ফের বাড়তে চলেছে পেট্রল-ডিজেলের দাম?

October 8, 2022 | 2 min read

বেকারত্ব, মুদ্রাস্ফীতি আর সেই সঙ্গে মাত্রাতিরিক্ত মূল্য বৃদ্ধির দৌলতে নাজেহাল দেশের সাধারণ মানুষ। এরই মধ্যে ফের পেট্রল-ডিজেলের দাম বাড়তে চলেছে। এরকমই আশঙ্কা করা হচ্ছে। সম্ভবত দীপাবলির পরেই বাড়তে পারে পেট্রল-ডিজেলের দাম। কারণ, খোদ উৎপাদক রাষ্ট্রগুলি ১ নভেম্বর থেকে অশোধিত তেল উৎপাদন এবং সরবরাহ কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। হ্রাসের পরিমাণ দিনে প্রায় ২০ লক্ষ ব্যারেল। একে আন্তর্জাতিক বাজারে অশোধিত তেলের দাম কমার সুফল পায়নি ভারতবাসী। তার মধ্যে এই ধাক্কায় জ্বালানির দাম ফের আকাশছোঁয়া হওয়ার জল্পনা চরমে।

আন্তর্জাতিক তেল উৎপাদন রাষ্ট্রগুলির সম্মিলিত মঞ্চ ওপেকের উৎপাদন ও সরবরাহের পরিমাণ কমানোর সিদ্ধান্তে। সেপ্টেম্বর মাসে তারা দৈনিক ১০ লক্ষ ব্যারেল কম উৎপাদনের পথে হাঁটার কথা স্থির করেছিল। কিন্তু এখন সেই লক্ষ্যমাত্রা ছাপিয়ে ২০ লক্ষ ব্যারেল দৈনিক উৎপাদন কমানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।

উৎপাদন ও সরবরাহ কমে যাওয়ার অর্থ একটাই, চাহিদা বৃদ্ধি। আর তার পরিণাম দাম বেড়ে যাওয়া। সেই প্রবণতা ইতিমধ্যেই দেখা যাচ্ছে। কিছুদিন আগেই ব্রেন্ট অয়েল ব্যারেল প্রতি ৮২ ডলারে পর্যন্ত নেমে গিয়েছিল। কিন্তু তা আবার বাড়তে শুরু করে ফের ব্যারেল প্রতি ৯১ ডলারের গণ্ডি পেরচ্ছে। এখন ওপেক রাষ্ট্রগুলি যদি দৈনিক তেল উৎপাদন কমিয়ে দেয়, তাহলে বিশ্বজুড়ে জ্বালানির চাহিদা এক ধাক্কায় বেড়ে যাবে। ফলে অশোধিত তেল ক্রয়ের খরচ বাড়বে ভারতীয় তেল সংস্থাগুলির। পেট্রল-ডিজেল ব্যবহারের ক্ষেত্রে গোটা বিশ্বে তৃতীয় ভারত। বিগত আর্থিক বছরে ৮৬ শতাংশ তেল আমদানি করা হয়েছে। এদিকে রাশিয়ান তেল ক্রয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে আমেরিকা ও ব্রিটেন। কিন্তু ভারত তা গ্রাহ্য করেনি। মে মাস থেকে লাগাতার সস্তায় রাশিয়ান তেল আমদানি করেছে নয়াদিল্লি। আবার ব্রেন্ট অয়েলের দামও কমেছে। মার্চ মাসে ১৩৯ ডলারে পৌঁছে গিয়েছিল ব্যারেল প্রতি অশোধিত তেলের দাম। সম্প্রতি তা ৮২ ডলারে নামলেও আম জনতা কোনও সুরাহা পায়নি।

এমনিতেই দেশের অর্থনীতি নিয়ে দুশ্চিন্তায় অর্থনীতিবিদরা। উদ্বেগের কারণের শেষ নেই। দুঃসংবাদ রয়েছে অর্থনীতির বাজারে। পরিষেবা ক্ষেত্রে দেশের বৃদ্ধির হার গত ছ’মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন অঙ্কে নেমে গিয়েছে সেপ্টেম্বর মাসে। মুদ্রাস্ফীতি (Inflation), প্রতিযোগিতা এবং জনমুখী নয় এমন কিছু নীতির কারণেই বৃদ্ধির গত রোধ হয়েছে বলে বিশেষজ্ঞদের অনুমান। গত মার্চের পর এত নিচে বৃদ্ধির গতি আর আসেনি। গ্লোবাল ইন্ডিয়া সার্ভিস পারচেজ ম্যা নেজার ইনডেক্স-এর সূচকেই এই পরিসংখ্যাান ধরা পড়েছে। গত আগস্টে এই সূচক ছিল ৫৭.২ অঙ্কে। সেপ্টেম্বরে তা নেমে দাঁড়ায় ৫৪.৩-এ। আগস্ট মাসেই দেশে কর্মসংস্থানে জোয়ার আসছে বলে মনে করা হচ্ছিল। কিন্তু পরিষেবা ক্ষেত্রে বৃদ্ধির গতি রোধ হওয়ায় কর্মসংস্থানেও টান পড়েছে।

পাইকারি বাজার দর বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে, পণ্য উৎপাদনকারীরা ধাক্কা খান। পণ্যের দামে বোঝা চাপে। সেই বোঝা খুচরো বাজারে ক্রেতার উপরে বসে। আদপে গোটা শৃঙ্খলটাই ভেঙে পড়ে। যার ফল অর্থনৈতিক দৈনদশা, সেই আঁধারের ক্রমশ ডুবে যাচ্ছে দেশ। সম্প্রতি ফের রেপো রেট বাড়িয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। এক ধাক্কায় ৫০ বেসিস পয়েন্ট। ফলে ব্যাঙ্কঋণে সুদের হার বেড়ে গিয়েছে। সব মিলিয়ে উৎসব মরশুমে সাধারণ মানুষের উপর আর্থিক বোঝা চরমে। আর ঠিক এই সময় হাজির নয়া আশঙ্কা—বাড়তে চলেছে পেট্রল-ডিজেলের দাম।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#price hike, #Diesel Price Hike, #Dipaboli, #Petrol Price Hike, #diwali

আরো দেখুন