লটারির টিকিট কাটেন? জানেন কি লটারি নিয়ে কত রকম জালিয়াতি চলছে?
লটারির টিকিট কাটেন অনেকেই। বাড়িতে বসে বসে টাকা জেতার ইচ্ছা তো অনেকেরই। কিন্তু লটারিতে জেতেন কতজন? ভাগ্য? নাকি অন্য কিছু? কিসের ওপর নির্ভর কর আপনা জেতা-হারা? লটারির টিকিট কাটলেই হবে না। জানতে হবে, কারা আসল, করা নকল, এমন কি কি ভাবে জেতার পরও পিছলে যেতে পারে পুরস্কার।
ভারতে লটারি খেলা নিয়ন্ত্রিত হয় The Lotteries (Regulation) Act, 1998 এবং Lotteries (Regulation) Rules, 2010 অনুযায়ী। অরুণাচল প্রদেশ, অসম, গোয়া, কেরল, মহারাষ্ট্র, মেঘালয়, পাঞ্জাব, সিকিম প্রভৃতি রাজ্যে লটারিকে বৈধতা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বাকি রাজ্যগুলিতে লটারি যে অবৈধ, এরকমটাও নয়। সুতরাং একেক রাজ্যে, নিজ নিজ নিয়মাবলী আছে লটারি নিয়ে। তবে প্রাইভেট লটারি আমাদের দেশে বেআইনি।
জানেন কী, উত্তর পূর্বের রাজ্য মেঘালয়ে, অ্যাডভেঞ্চার গেমগুলির একটি অন্যতম হল শিলং মর্নিং টিয়ার গেমস, যা উত্তর পূর্বের সবচেয়ে বিশিষ্ট লটারিগুলির মধ্যে একটি হিসাবে বিবেচিত হয়। যাইহোক, এটি লটারির বৈধতা (বা তার অভাব) ব্যাপারটাকে প্রচারের আলোয় নিয়ে আসে। শিলং মর্নিং টিয়ার গেমস খাসি হিলস আর্চারি স্পোর্টস ইনস্টিটিউট (খাসি) দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়, এটি একটি তীরন্দাজী-ভিত্তিক লটারি খেলা যেখানে তীরন্দাজরা কিছু দূরে একটি খড়ের বান্ডিলকে লক্ষ্য করে তীর ছোড়েন এবং শেষ পর্যন্ত তীরের সংখ্যার উপর বাজি রাখা হয়।
জানেন কি, কিছুও সংস্থা অসদুপায় প্রচুর পরিমাণে লটারির টিকিট কিনে রাখে। এরপর বেশিরভাগ টিকিটই নিজেদের কাছে রেখে অল্প সংখ্যক টিকিট গ্রাহকদের কাছে বিক্রি করে। ফলে টিকিটের প্রথম এবং বেশি মূল্যের পুরস্কার এরাই হস্তগত করে। সাধারণ মানুষকে পুরস্কারের লোভ দেখিয়ে তাদের থেকে কোটি কোটি টাকা লুট করছে এসব সংস্থা। শুধু তাই নয়, রাজস্ব থেকে বঞ্চিত করছে রাজ্য সরকারকেও।
একটি সাম্প্রতিক লটারি কেলেঙ্কারিতে, প্রতারকরা কৌন বনেগা ক্রোড়পতি অনুষ্ঠানের ভেক ধরে, অমিতভ বচ্চন এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ছবি লাগিয়ে সাধারণ মানুষের কাছে ফোন কল করছিল এবং ই-মেইল, বার্তা পাঠাচ্ছিল যা প্রাপকদের বিশ্বাস করে যে তারা ₹২৫,০০,০০০ জিতেছে। এবং এই ধরনের ক্ষেত্রে, এই ধরনের কল, মেইল এবং বার্তাগুলিতে ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ার না করতে বার্তা দে খোদ কেন্দ্রীয় সরকার।
তবে অন্যরকম কেলেঙ্কারির গন্ধও আছে লটারিকে ঘিরে। গত বছর ডিসেম্বরে তামিলনাড়ু কংগ্রেস কমিটির (টিএনসিসি) সভাপতি কে এস আলাগিরি অভিযোগ করেন যে ‘লটারি কিং’ সান্তিয়াগো মার্টিন রাজ্যের সে বছরের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপিকে ১০০ কোটি টাকা অনুদান দিয়েছিলেন। তিনি নির্বাচনী প্রচারের সময় বিজেপির প্রাপ্ত অনুদানের সিবিআই তদন্তের দাবি করেছিলেন। ২০১১ সালে, সিবিআই মার্টিন এবং তার ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের বিরুদ্ধে ৩০ টি মামলা নথিভুক্ত করে। সিকিম সরকারকে ৪,৫০০ কোটি টাকা প্রতারণার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে একটি মামলা বিচারাধীন রয়েছে।প্রসঙ্গত, সিকিম লটারি দেশের অন্যতম রাজ্য লটারিগুলির একটি।
রাতারাতি রাজা হয়েছেন ভাঙড়ের কাশীপুর সর্দারপাড়ার বাসিন্দা সাদেক। আনাজ বিক্রি করে বাড়ি ফেরার পথে দমদমের কাঠগােলা এলাকা থেকে নাগাল্যান্ড ডিয়ার রাজ্য লটারির ৬ টাকা মূল্যের ৫টি টিকিট কাটেন। পর দিন দমদমে গেলে ওই টিকিট বিক্রেতা তাঁকে জানান, ১ কোটি টাকা জিতেছেন সাদেক। অন্য অনেক লটারি বিজেতার মতো বদলে গেছে তার জীবন। আবার অন্যদিকে এই নেশায় সর্বস্বান্ত হয়েছেন আরও অসংখ্য মানুষ। সুতরাং, বুঝে শুনে যাচাই করেই সব কিছু করা উচিত।