বিশ্বকাপে প্রতিবাদের মাশুল? বড় বিপদে ইরানি ফুটবলারদের পরিবার?
কাতারে ফিফা আয়োজিত ফুটবল বিশ্বকাপ (Qatar World Cup 2022) চলাকালীন মাঠে ইরানি ফুটবলারদের আচরণের উপর নজর রাখছিল ইরান সরকার। এমনকি তাদের পরিবারকেও হুমকি দিচ্ছে সরকার, এমনটাই দাবি সংবাদমাধ্যম সূত্রে। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যে ইরানে ফুটবলারদের পরিবারের সদস্যদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, হিজাব বিরোধী আন্দোলনে সমর্থন করেছিলেন একাধিক ইরানি ফুটবলার। তাতে যারপরনাই ক্ষুব্ধ ছিল ইরানি সরকার। তারউপর গত ২১ নভেম্বর ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ম্যাচে ইরানি ফুটবলাররা দেশের জাতীয় সঙ্গীত গাইতে অস্বীকার করেন। তাঁরা সকলে নীরব থেকে ইরানি সরকারের কট্টর দমনমূলক নীতির প্রতিবাদে সামিল হন।
এর পরের দিন ২২ নভেম্বর দিনই ইরানি সেনার বিশেষ বিভাগের পক্ষ থেকে ফুটবলার ডেকে পাঠানো হয়। সেখানে স্পষ্টভাষায় জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, দেশের নিয়ম মেনে চলতে হবে। নচেৎ ফল ভুগতে হবে তাঁদের পরিবারকে।
সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, ইরানের (Iran) প্রশাসন ফুটবলারের পরিবারের সদস্যদের উপরে নির্মম অত্যাচার চালানোর হুঁশিয়ারি দিয়েছে। দলের কোচ কার্লোস কুইরোজকে লাগাম পরাতে বিশেষ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আগে থেকেই ইরানি ফুটবলারদের উপর বিশেষ নজরদারী চালাচ্ছিল ইরানি সরকার। এবার কাতারেও মোতায়েন করেছে বিশেষ বাহিনী। এছাড়া অনুশীলনকেন্দ্র বা ম্যাচ ছাড়া ফুটবলারদের বাইরে বেরনোর অনুমতি দেওয়া হয়নি। তারা দেশে কোথায় কার সঙ্গে যোগাযোগ করছেন সেই সমস্ত পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্য জোগাড় করছে স্বৈরাচারী ইরানের প্রশাসন। তাই বর্তমানে কার্যত নজরবন্দি করে রাখা হয়ছে ইরানের ফুটবলারদের।
এর মধ্যে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির সঙ্গে খেলোয়ারদের সাক্ষাতের একটি ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে স্বৈরাচারী রাইসির সামনে মাথা নত করে আছেন চেসমিরা। তাঁকে কুর্নিশ জানাচ্ছেন। এই ঘটনা প্রকাশ পেতেই দেশবাসীর সমর্থন হারিয়েছে ইরানের জাতীয় ফুটবল দল। রাইসিপন্থী নিরাপত্তাকর্মীদের গুলিতে নিহত হয়েছে মেহরান সামাক নামে ২৭ বছরের এক ফুটবলপ্রেমী। শাসকবিরোধী বিক্ষোভে প্রাণ যাচ্ছে অসংখ্য সাধারণ নাগরিকদের। ক্ষোভে উগড়ে দেয় ইরানের প্রতিবাদী নাগরিকরা। এহেন পরিস্থিতিতে জাতীয় দলের খেলোয়াররা স্বৈরাচারী সরকারের কাছে কেন মাথা নত করল?