বক্সিং ডে, কী এবং কেন?
আজ বক্সিং ডে। কিন্তু কী করে বক্সিং ডে হল তা জানতে আমাদের পিছিয়ে যেতে হয় প্রায় দুশো বছরেরও বেশি পুরনো ইতিহাসে। প্রচলিত কিংবদন্তি বলে বক্সিং ডে-র জন্ম হয়েছিল রানী ভিক্টোরিয়ার শাসনকালে। কিন্তু আদপে তা নয়, ষোলো শতকেও বক্সিং ডে প্রচলিত ছিল। দিনটি আদ্যন্ত ছুটির দিন। যার সঙ্গে জুড়ে রয়েছে ক্রিসমাস। ব্যাপারটা কেমন? বড়দিন মানেই উপহারের দিন। সেদিন একে অপরকে উপহার দেওয়া চলে। আর পরদিন সেই সব উপহারের মোড়ক খোলা হয়। সেই অর্থে বলা যেতে পারে, ২৬ তারিখের নাম হওয়া উচিত ছিল আন বক্সিং ডে। কিন্তু হয়ে গেল বক্সিং ডে। বড়দিনের পরের উইক ডে-টিই বক্সিং ডে হিসেবে পালিত হয়।
এদিন সমস্ত সরকারি অফিস বন্ধ থাকে, স্কুল কলেজেও ছুটি দেওয়া হয়। ইউরোপ জুড়েই এই দিনটির চল। ব্রিটিশদের হাত ধরেই এই ‘বক্সিং-ডে’ ঢুকে পড়েছিল ওশিয়ানিয়া মহাদেশে। উৎসবের এই দিনটিকে গ্রহণ করেছিলেন অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ডের মানুষেরা। ছুটির দিন মানুষের বিনোদনের জন্যেই চালু হয়েছিল, অস্ট্রেলিয়ার ‘বক্সিং ডে’ টেস্ট। মেলবোর্ন ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ১৮৯২ সালে ভিক্টোরিয়া বনাম নিউ সাউথ ওয়েলসের হাত ধরে শুরু হয়েছিল ‘বক্সিং ডে’ টেস্ট। ১৯৫০ সাল থেকে শেফিল্ড শিল্ডের পরিবর্তে অস্ট্রেলিয়া জাতীয় দল এবং অস্ট্রেলিয়া সফরে থাকা দলের সঙ্গে এই টেস্ট ম্যাচ হয়।
ক্রিকেট হল আবার উপহারে ফিরি, ক্রিসমাসের উপহার স্বরূপ সবাইকে ক্রিসমাস বক্স দেওয়া হত। যার মধ্যে থাকত উপহার। বাড়ির পরিচারকেরা ক্রিসমাসের দিন মনিবের থেকে সেই বাক্সে ভরা উপহার পেত। ক্রিসমাসের পরের দিন অর্থাৎ ২৬ ডিসেম্বর তারা বাড়ি যেত সেই উপহারগুলো নিয়ে। সেই থেকে দিনটা বক্সিং ডে নামে পরিচিত হয়েছে।
অন্য মতে, কেবল ভৃত্যদের উপহারই নয়, ধনীরা ২৬ ডিসেম্বর সাধ্যমতো জিনিস বাক্সবন্দি করে তুলে দিতেন দরিদ্রদের হাতে। সেখান থেকেই দিনটির নামকরণ করা হয় বক্সিং ডে। আবার স্পেন এবং আয়ারল্যান্ডে ২৬ ডিসেম্বর সেন্ট স্টিফেন্স ডে হিসেবে পালিত হয়।