ভিক্টোরিয়ার পরী, কলকাতার ফেয়ারি টেল যাকে ঘিরে, তার গপ্পো জানেন?
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: ১৯০১ সালে গড আর কুইনকে সেভ করতে পারলেন না। চলে গেলেন রানি। কার্জন তখন বাংলায়, রাজকূলকে খুশ করতে ফন্দি আঁটলেন। বেলফাস্ট সিটি হলের আদলে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল বানানো শুরু হল ১৯০৬ সালে। শেষ হল ১৯২০-তে। ভিক্টোরিয়ার মাথায় বসল ঘূর্ণায়মান পরী। জর্জ ম্যানসিনি নামের এক শিল্পীর হাতে গড়া প্রায় সাড়ে ছয় টনের এই ব্রোঞ্জ মূর্তিটি ইংল্যান্ডের শেলটেন্যাম থেকে কলকাতায় এসেছিল ১৯২০ সালে। ভিক্টোরিয়ার চূড়ায় সে বসে ১৯২১ সালে। সে সময় বেশ ভাল গতির বাতাস চলাচল করত কলকাতায়। কারণ গগনচুম্বী অট্টালিকার যুগ শুরু হতে তখনও বহু বাকি। হাওয়ার দৌলতে বলবেয়ারিং প্রযুক্তিতে পরীও ঘুরত। বলা হত, পরী নাকি ভারতসম্রাজ্ঞীরই প্রতীক।
একশো বছর পেরিয়েছে পরীর বয়স, তিনি আজও দন্ডায়মান কিন্তু ঘোরা থামিয়েছেন। হাওয়ার আর সে প্রাবল্য নেই। পরীকে ঘুরতে হলে হাওয়ার গতি অন্তত ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটার হওয়া দরকার। বায়োডেটা অব দি এঞ্জেল অর্থাৎ পরী নিয়ে ভিক্টোরিয়ার পুরনো নথি বলছে, ১৯২১ সালে যখন ভিক্টোরিয়ার মাথায় ওই পরী বসানো হয়েছিল, তখন তার ঘুরতে ঘণ্টায় ১৫ কিলোমিটার গতির হাওয়ার দরকার হত। কিন্তু এখন সেই পরীর ঘুরতে ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটার হাওয়া প্রয়োজন।
কেবল হাওয়ার গতিই নয়, পরীর ঘোরা বা না ঘোরা হাওয়ার অভিমুখের উপরও নির্ভরশীল। হাওয়ার অভিমুখ অনুকূলে হলে তবেই পরী ঘুরবে, না হলে নয়।
পরীকে নিয়ে অজস্র জনশ্রুতি, গুজব রয়েছে। রানি ভিক্টোরিয়ার প্রতিনিধি ওই পরী সারা শহরকে নজরে রাখছে। অনেকে তা বিশ্বাসও করতেন। জনশ্রুতি রয়েছে যে, হাওয়া মোরগের মতো নাকি পরী বনবন করে ঘোরে। পরীর নীচে পারদের পাত্র রয়েছে। সেটিই নাকি ঘূর্ণনে সাহায্য করে। বর্ষাকালে বজ্রপাতের সময়ে ওই পারদ আর্থিংয়ের কাজ করে। এছাড়া অন্য কোনও কাজ নেই। আবার রটে গিয়েছিল পরী ঘুরলে নাকি বাঁশি আওয়াজ হয়, কিন্তু সব নিছকই লোকমুখে প্রচার হয়েছে।
ভাষ্য পাঠ: মধুরিমা রায়
সম্পাদনা: মোঃ রবিউল ইসলাম
তথ্য গবেষণা: সৌভিক রাজ