কলকাতায় ফ্ল্যাগ স্ট্রিট? সেটা আবার কোন রাস্তা?
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: সুদীর্ঘ কাল থেকেই সুরার সঙ্গে কলকাতার দোস্তি। পলাশীর যুদ্ধ জয়ের পরেই ইংরেজরা কলকাতায় জমিয়ে বসেছিল। সেই আমলেই জমে ওঠে মদের কারবার। আরক-পাঞ্চ হাউস-ট্যাভার্ন কালচার কলকাতার রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে গিয়েছিল। সুরার দৌলতেই ফ্ল্যাগ স্ট্রিটের আত্মপ্রকাশ।
সাহেবরা বউবাজার স্ট্রিটের নাম দিয়ে ছিল ফ্ল্যাগ স্ট্রিট। সে’তল্লাট ছিল সুরাপ্রেমীদের স্বর্গরাজ্য। অজস্র শুঁড়ির দোকান ছিল এ চত্বরে, রাস্তার দুপাশে মদের কারবার সাজিয়ে বসেছিলেন ইংরেজ, ফরাসি, ডেনিস, জার্মান, স্প্যানিশ শুঁড়িরা। শুঁড়িদের দোকানের মাথায় টাঙানো থাকতে নিজ নিজ দেশের ‘ফ্ল্যাগ’, যাতে চিনতে সুবিধা হয়। সে সময় সাহেবরাই ছিলেন এ পাড়ার এক নম্বর খোদ্দের, তাদের সুবিধার্থেই এমনটা করা। সে থেকেই ফ্ল্যাগ স্ট্রিটের জন্ম।
এ প্রসঙ্গে একটা জিনিসের অবতারণা না করলেই নয়। সাহেবরা কিন্তু দেদার মদ খেতেন থুড়ি পান করতেন কলকাতায়। পলাশী জেতা হয়ে গিয়েছে, কেউ রোখার নেই! কার্যত রাম রাজত্ব শুরু করেছিল কোম্পানির লোকজন। কলকাতায় তখন বিদেশি মাতালদের ভিড়। আকণ্ঠ মদ্যপান করতেন তারা। মদের নেশায় ডুবে অনেক সাহেবই পরোপারের বাসিন্দা হয়ে গিয়েছিলেন। কেউ কেউ আবার সর্বস্ব খুইয়েছিলেন।
নেশা মত্ত হয়ে তারা এদিক-ওদিকে ঘুরে বেড়াতেন, মদ্যপানের পরিমাণ এতটাই ছিল যে চলার শক্তি থাকত না। এদিক-ওদিক পড়ে থাকতেন কেউ কেউ। রাস্তায় মাতলামো চলত। ভবঘুরের মতো জীবন কাটত। নেশুরে সাহেবদের জন্যই ভবানীপুরে তৈরি হয়েছিল অ্যাসাইলাম, এটা আঠারো শতকের ঘটনা। অ্যাসাইলামটির নাম ছিল দ্য ক্যালকাটা ল্যুনাটিক অ্যাসাইলাম।
ভাষ্য পাঠ: মধুরিমা রায়
সম্পাদনা: মোঃ রবিউল ইসলাম
তথ্য গবেষণা: সৌভিক রাজ