বাংলার দুগ্গা পুজো: চকদিঘি রাজবাড়ির পুজোর সঙ্গে জড়িয়ে এক অজানা ইতিহাস
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: বর্ধমানের জামালপুরে চকদিঘি রাজবাড়ি অবস্থিত। এই বাড়ির অন্যতম আকর্ষণ দুর্গাপুজো। এখানে অষ্টমীতে দেবীর সিঁদুর পুজো হয়। আজও পুজোর কাজকর্ম পর্দার আড়ালেই করেন বাড়ির মহিলারা। দেবীর ঘটের আবাহন থেকে বিসর্জন সবই হয় বাড়ির অন্দরের পুকুরে।
প্রায় ৩৫০ বছর আগে উত্তরপ্রদেশ থেকে পশ্চিমবঙ্গে আসেন সিংহ রায় পরিবার। এই চকদিঘি সিংহ রায় পরিবারের আদি পুরুষ এবং সম্রাট আকবরের সেনাপতি রাজা মান সিংহ মোঘল আমলে দশ হাজারী মানসবদার রূপে এই স্থানে বসবাস বসবাস করতে করেন। এরপরেই প্রতিষ্ঠা হয় সিংহ রায় রাজবাড়ির। ৯৯ বিঘার উপর অবস্থিত এই রাজবাড়ির সঙ্গে জড়িয়ে আছে বহু অজানা ইতিহাস।
জানা যায়, ১৮৭১-৭২ সালে চকদীঘি-জামালপুর-মেমারি রেলস্টেশন পর্যন্ত পথটি চকদিঘির রাজাদের সাহায্যার্থে তৈরি হয়েছিল। চকদিঘি সিংহ রায় পরিবারের বসতবাড়িটি ফরাসী স্থাপত্যে নির্মিত, যা সিংহ রায় পরিবারের বংশধররা সসম্মানে সংরক্ষণ করে রেখেছেন।
শোনা যায়, বিদ্যাসাগর মহাশয় একবার বর্ধমানে এসে অসুস্থ হয়ে পড়ায় কিছুদিন চকদীঘি রাজপরিবারের বাগানবাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন। জানা গিয়েছে, এই পরিবারের এক সদস্য তার বিধবা বিবাহ আন্দোলনে অনেক অর্থ সাহায্য করেছিলেন।
শুধু বিদ্যাসাগর নয়, সত্যজিৎ রায় এই বাড়িতে ঘরে বাইরে সিনেমার শুটিং এর সময় কিছুদিন ছিলেন। এখানে আসতেন লর্ড কার্জন। তার জন্য দোতলার একটি ঘর বরাদ্দ ছিল। এছাড়াও এ বাড়িতে এসেছেন ব্রিটিশ গভর্নর স্যার জন অ্যান্ডারসন, শঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়, রমেশ চন্দ্র মজুমদার, বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্র সহ থেকে শুরু করে সলমন রুশদির মতো স্বনামধন্য ব্যক্তিত্ব।