২০২৪শে মোদীকে হারাতে ‘জিতবে দিদি, জিতবে INDIA’ -শীর্ষক সভা TMCS-র
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: দরজায় কড়া নাড়ছে ২০২৪-র লোকসভা নির্বাচন। তার আগে তৈরি হয়েছে বিজেপি বিরোধী জোট ‘INDIA’। এই জোটে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে, তা ফুটে উঠছে সমাজ মাধ্যমে। ১০ সেপ্টেম্বর রবিবার ‘জিতিবে দিদি, জিতবে ইন্ডিয়া’ নামক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হল কলকাতার মহাজাতি সদনের অ্যানেক্স হলে, সোশ্যাল মিডিয়ায় তৃণমূলের শুভাকাঙ্খি কমিউনিটি TMCS-র উদ্যোগে।
বাম জমানার তৎকালীন শাসকদলের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রচার করার জন্য সোশ্যাল মিডিয়া সাইট অর্কুটে ২০০৬ সালে Trinamool Congress Supporters (TMCS) নাম দিয়ে একটি কমিউনিটি তৈরি করেন দুই তৃণমূল সমর্থক অরূপ চক্রবর্তী ও অমিতাভ রায়। অরূপ চক্রবর্তী বর্তমানে তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র এবং কলকাতা পৌরসংস্থার ৯৮ নম্বার ওয়ার্ডের পৌরপিতা।
মূলত যারা তৎকালীন শাসকদলের ভয়ে মাঠে ময়দানে নেমে রাজনীতি করতে পারতেন না বা কর্মজীবনের ব্যস্ততার জন্য যারা রাস্তায় নেমে মিছিলে হাঁটতে পারতেন না তাদেরকে এক ছত্রছায়ায় এনে ডিজিটাল অস্ত্রে শান দিয়েছিলেন এই দুই যুবক। পরবর্তীতে তাঁরা ফেসবুক ও টুইটারে তাদের প্রচার শুরু করেন। ২০০৭ সালে নন্দীগ্রাম থেকে সিঙ্গুর সর্বক্ষেত্রেই সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিবাদ করত টিএমসিএস কমিউনিটি। এমনকি একসময় বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু বলতে বাধ্য হয়েছিলেন যে “বামেদের নামে ফেসবুকে অপপ্রচার চালাচ্ছে তৃণমূলের একটি দল।“
সোশ্যাল মিডিয়ায় বামেদের বিরুদ্ধে প্রচারের সাথে সাথে তৃণমূলের সমর্থনে প্রচারও চালাত এই কমিউনিটি। ২০০৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের হয়ে অর্কুটে ভোট প্রচার এবং তারপরে আরও তিনটি বিধানসভা নির্বাচনে সোশ্যাল মিডিয়াতে তৃণমূলের হয়ে ভোট প্রচারে অংশগ্রহণ করে টিএমসিএস। সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন ইস্যুতে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ এবং বিভিন্ন সমাজসেবা মূলক কাজেও তারা অংশগ্রহণ করে।
গতকাল ৯ সেপ্টেম্বর TMCS তাদের টুইটার অ্যাকাউন্টে এক লক্ষ ফলোয়ার্সের গন্ডি পার করেছে। তার পরদিনই ১০ সেপ্টেম্বর রবিবার মহাজাতি সদনের অ্যানেক্স হলে ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে এই কমিউনিটি একটি আলোচনা সভার আয়োজন করে, যার নাম দেন ‘জিতিবে দিদি, জিতবে ইন্ডিয়া’। সমাজ মাধ্যমে দলের প্রচার করেন, এমন বিভিন্ন জায়গার তৃণমূল কর্মীরা এই সভায় উপস্থিত ছিলেন। প্রদীপ প্রজ্জ্বলন ও বাংলার রাজ্য সংগীতের মাধ্যমে এদিনের অনুষ্ঠানের শুভারম্ভ হয়।
কীভাবে সোশ্যাল মিডিয়ায় তৃণমূল কংগ্রেসের প্রচার আরও ভাল করতে হবে এবং বিজেপির “হাজার হাজার কোটি টাকার আইটি সেলের ফেক নিউজের বিরুদ্ধে কীভাবে কাউন্টার করতে হবে” তা বলে দেন পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল কংগ্রেসের আইটি ও সোশ্যাল মিডিয়া সেলের রাজ্য সভাপতি দেবাশু ভট্টাচার্য। সম্প্রতি দেবাংশুর নেতৃত্বে রাজ্য আইটি ও সোশ্যাল মিডিয়া সেলের ৩৭ জনের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। আগামীদিনে জেলা ভিত্তিক কমিটি তৈরী করার কথাও জানান দেবাংশু। ১লা ডিসেম্বর আইটি ও সোশ্যাল মিডিয়া সেলের প্রতিষ্ঠা দিবস হিসেবে পালন করার কথাও বলেন তিনি।
দেবাংশু ছাড়াও এই সভায় উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের পরিবহণ দপ্তরের মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী। বজবজ বিধানসভার প্রবীণ বিধায়ক শ্রী অশোক দেব। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য বাইরে থাকার জন্য ফোন কলের মাধমে সংক্ষিপ্ত বক্তৃতা দেন। তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র ও কলকাতা পৌরসংস্থার ৯৮ নং ওয়ার্ডের অরূপ চক্রবর্তী। উত্তর কলকাতা তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা সঞ্জয় বক্সী। মানিকতলা বিধানসভার কনভেনর শ্রেয়া পান্ডে। তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র ঋজু দত্ত , জুঁই বিশ্বাস, মৃত্যুঞ্জয় পাল, প্রদীপ্ত মুখার্জী, পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির রাজ্য সভাপতি প্রীতম কুমার হালদার। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতৃত্ব বিশ্বজিৎ দে, সৃজিত ঘোষ, সৌরদীপ শর্মা, গৌরব দত্ত মুস্তাফী, প্রিয়াঙ্কা দে চ্যাটার্জী।