ই-স্পোর্টসে হাংঝু এশিয়ান গেমসের মঞ্চে মফঃস্বল বাংলার পোস্টম্যান অয়ন
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: যে ভিডিও গেমের কারণে, আট ও নয়ের দশকের ছেলেমেয়েদের পিঠে হাতা, খুন্তি, বেলনার বাড়ি পড়ত, এবার সেই ভিডিও গেমই বীরনগরের অয়ন বিশ্বাসকে পৌঁছে দিল এশিয়ান গেমসের মঞ্চে। এশিয়ান গেমসে ইস্পোর্টসে দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করতে চলেছেন বাংলার অয়ন।
চব্বিশ বছরের অয়নের কথায়, ছোটবেলায় তিনি যখন গেম খেলতে, তখন তাঁর মা বকাবকি করতেন। এখন তিনিই অয়নকে বলেন, “তুমি খেলছ না কেন?” অয়নের বাবা একজন অবসরপ্রাপ্ত রেলকর্মী, মা নার্স। অয়ন নিজে একজন গ্রামীণ ডাক সেবক। দিনে কাজ করে মাত্র তিন-চার ঘন্টা খেলেন তিনি।
প্রতিদিন, সকালে ট্রেন ধরে বেথুয়াডহরিতে অফিসে পৌঁছন অয়ন। সারা দিন থাকে অফিসের কাজ। অয়ন স্ট্রিটফাইটার ফাইভ গেমটি খেলেন। যা একটি জয়স্টিক এবং একটি কম্পিউটার মনিটারের সাহায্যে খেলা হয়। ফলে যখন-তখন এই খেলার অনুশীলন করা যায় না। অফিস যাওয়া-আসার পর ইউটিউব ভিডিও দেখে, গেমটির কৌশলগত কায়দা রপ্ত করেন অয়ন। পাশাপাশি অয়ন নেতাজি সুভাষ মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে বিএসসি পড়ছেন।
স্ট্রিটফাইটার গেমটিই অয়নকে বিশ্বের দরবারে পৌঁছে দিল। তিনি নিজেই বলছেন, এত বড় মঞ্চে তিনি কখনও খেলননি। অ্যাথলিটদের ‘ভিলেজে’ থাকার অভিজ্ঞতা ও পরিবেশকে অনন্য বলছেন অয়ন। প্রসঙ্গত, স্ট্রিটফাইটার; একটি জাপানি ফাইটিং ভিডিও গেম। সবচেয়ে পুরনো গেমগুলির মধ্যে অন্যতম একটি। করোনার সময় গেমের প্রতি আরও আকৃষ্ট হন অয়ন, খেলার লাইভ স্ট্রিমিং শুরু করেন। তাঁর কথায় একটি ইউটিউব ভিডিও তাঁর জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। একটি ভিডিও দেখেই তিনি জানতে পারেন, দেশে ও বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় ভিডিও গেমের টুর্নামেন্ট হয়। তখনই তিনি সিদ্ধান্ত নেন গেমার হওয়ার। তিনি জানিয়েছেন এক সাক্ষাৎকারে, কোনও লক্ষ্য ছাড়াই তিনি শুরু করেছেন। কিন্তু ধীরে ধীরে ধারাবাহিকভাবে এগোতে থাকেন।
অয়ন রাউন্ড অফ ৩২-এ জয় দিয়ে শুরু করেছিলেন, কিন্তু শেষ পর্যন্ত টুর্নামেন্ট টিকে থাকতে পারেননি। তিনি আশাবাদী, এশিয়ান গেমসে তাঁর উপস্থিতি ভারতের আরও গেমারদের প্রভাবিত করবে।