বাংলার দুগ্গা পুজো: ৮০০ বছর ধরে শ্রীখণ্ডে চলছে কাঁথেশ্বরীর আরাধনা
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: স্থানীয় বাসিন্দারা বলে থাকেন, প্রায় ৮০০ বছরের বেশি সময় ধরে কাটোয়ার শ্রীখণ্ড গ্রামে চলে আসছে মা দুর্গার রূপ, দেবী কাঁথেশ্বরীর আরাধনা। গল্পকথা অনুযায়ী দস্যুদের আক্রমণ থেকে নিজেকে রক্ষা করতে দেবী কাঁথেশ্বরী নাকি নিজেই মাটির দেওয়ালের ভিতর ‘আশ্রয়’ নিয়েছিলেন। তারপর থেকে শ্রীখণ্ড গ্রামে ‘কাঁথেশ্বরী’ রূপে পূজিতা হয়ে আসছেন দেবী দুর্গা।
কাটোয়ার প্রাচীন পুজোগুলির মধ্যে মজুমদার বাড়ির কাঁথেশ্বরী প্রতিমা অষ্টধাতুর। শ্রীখণ্ড গ্রামের বনেদি পরিবার বলে পরিচিত এই মজুমদার বাড়ি এবং এটি তাদের পারিবারিক পুজো । এখনও দেবীর পুজোয় যোগ দেন আপামোর গ্রামবাসী।
জনশ্রুতি রয়েছে কাঁথেশ্বরী দেবীর নামকরণের নেপথ্যেও। মজুমদার পরিবারের থেকে জানা গেছে, একুশ পুরুষ আগে তাঁদের বংশের পূর্বপুরুষ নরনাথ দাশশর্মা এই দুর্গা পুজোর সূচনা করেন। তখন মৃন্ময়ীমূর্তির পুজো হত তখন। নরনাথের পাঁচ প্রজন্ম পরে দুর্জয় দাশশর্মা প্রথমে দেবীর অষ্টধাতুর মূর্তি তৈরি করে পুজো শুরু করেন। অষ্টধাতুর মূর্তি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল মাটির মন্দিরে। পুজো শুরুর কয়েকবছর পরে নৈরাজ্য দেখা দেয়। এবং বহিরাগত দস্যুরা লুঠতরাজ শুরু করে। পরিবারের ধনসম্পদ সংরক্ষণ করে রাখার নিরাপদ জায়গা হিসাবে মনে করা হত মন্দির গুলি। তাই মন্দির গুলিও বাদ দেয়নি দস্যুরা।
মজুমদার পরিবারের মন্দিরে হামলা চালাতে এসে দস্যুরা দেখে দেবীমূর্তি নেই। তা দেখে ফিরে যায় দুর্বৃত্তের দল। পরে মন্দিরে মূর্তি না দেখতে পেয়ে সকলেই ভেবে নেন, দেবীমূর্তি লুঠ করে নিয়ে গিয়েছে দস্যুরা। ঘটনার কিছু সময় পর দেবী স্বপ্নাদেশ দেন, মন্দিরের ভিতরের মাটির দেওয়ালে তিনি অধিষ্ঠান করছেন। স্বপ্নাদেশ পেয়ে দেওয়াল ভেঙে বের করে আনা হয় দেবী মূর্তি।