কুমোরটুলি, পাঁচচালা প্রতিমা, নেতাজি এবং কলকাতার প্রথম থিম পুজো
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: কুমোরটুলির মৃৎশিল্পীদের কথা আজ সর্বজনবিদিত, গোটা বাংলা এমনকি দেশ-বিদেশেও প্রতিমা যায় এখান থেকে। কুমোরটুলি ছাড়া দুর্গাপুজো ভাবাই যায় না। রথযাত্রার দিন গণেশ এবং লক্ষ্মীর আরাধনা করেই দুগ্গা ঠাকুর তৈরির কাজ শুরু হয় এখানে। প্রথমে কাঠ দিয়ে মূল কাঠামোটি তৈরি করা হয়। তার উপর বাঁশ, খড় ও সুতলি দিয়ে প্রতিমার আকার দেওয়া হয়। তারপর মাটি আর রঙে সেজে ওঠে মা। যাঁরা সব্বার প্রতিমা গড়েন, তাঁরা পুজো করেন না? করেন, ১৯৩১ সালে শুরু হয় কুমোরটুলি সার্বজনীনের দুর্গাপুজো। কুমোরটুলির শিল্পীরা সকলে মিলে এই পুজো শুরু করে।
১৯৩৮ সালে নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু কুমোরটুলি সর্বজনীন পুজোর সভাপতি হন। দেশের পরাধীনতার যন্ত্রণার ছবিতে পুজো মণ্ডপ সেজে উঠল। সেইসঙ্গে ছিল স্বাধীনতার আহ্বান। দুর্গাপুজোয় সেই প্রথম থিম পুজোর প্রচলন হল।
পঞ্চমীর দিন ঘটে গেল বিপত্তি। প্রতিমার শুধু চক্ষুদান বাকি। হঠাৎ আগুন লেগে গেল। মণ্ডপের তেমন ক্ষতি না হলেও প্রতিমা সম্পূর্ণ পুড়ে গেল। পরদিন বোধন হবে কী করে? তবে কি পুজো বন্ধ? হাল ছাড়তে নারাজ খোদ নেতাজি। দায়িত্ব নিলেন শিল্পী গোপেশ্বর পাল। একরাতের মধ্যে প্রতিমা তৈরি করতে কাজকে ছোটো ছোটো ভাগে ভাগ করে দিলেন গোপেশ্বর পাল। একচালার প্রতিমার পরিবর্তে তৈরি হল পাঁচচালা প্রতিমা। সেই প্রথম। এরপর থেকে কুমারটুলি সর্বজনীনে কখনও একচালা প্রতিমার পুজো হয়নি।