১০০ দিনের প্রকল্পে বাংলাকে বঞ্চনার প্রশ্নে কেন্দ্রকে কড়া বার্তা হাইকোর্টের
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: এক বছরের বেশি সময় কেটে গেলেও ‘১০০ দিনের কাজ’ প্রকল্পে পশ্চিমবঙ্গকে এক টাকাও দেয়নি মোদী সরকার। আর এই প্রাপ্য আদায়ে চেষ্টার কোনও খামতি রাখেনি রাজ্য সরকার। একাধিকবার আলোচনা, চিঠি–পাল্টা চিঠি, শর্ত আরোপ, সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলেও লাভ কিছুই হয়নি! কোনও টাকা পায়নি রাজ্য সরকার।
এবার ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে বাংলাকে বঞ্চনার প্রশ্নে কেন্দ্রীয় সরকারকে কড়া বার্তা দিল কলকাতা হাইকোর্ট। শুধু তাই নয়, এ বিষয়ে কেন্দ্রের তরফে আদালতে যে রিপোর্ট জমা পড়েছে, সেটিকে ‘সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন’ বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম।
২০২১ সালের ডিসেম্বরের পর থেকে এই প্রকল্পে পশ্চিমবঙ্গকে কোনও অর্থ বরাদ্দ করেনি কেন্দ্র। তাদের যুক্তি, রাজ্যে এই প্রকল্পে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। তাই ২০২২ সালের ৯ মার্চ রীতিমতো নির্দেশ জারি করে বরাদ্দ বন্ধ করা হয়েছে। সেই বকেয়া মিটিয়ে দেওয়ার দাবিতে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ খেতমজুর সমিতি নামে এক সংগঠন।
টাকা কেন আটকে রাখা হয়েছে, তা নিয়ে কেন্দ্রের জবাব তলব করেছিল প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম ও বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যর ডিভিশন বেঞ্চ। তখন কেন্দ্রের তরফে হাইকোর্টে বলা হয়, ২০২২ সালের ৯ মার্চের আগে পর্যন্ত এই প্রকল্পে যে টাকা বকেয়া আছে, তা মিটিয়ে দিতে তাদের কোনও অসুবিধা নেই। কিন্তু সোমবার তারা যে হলফনামা জমা করে, সেখানে সেই দুর্নীতির কথা বলে ২০২১-২২ অর্থবর্ষের শেষ তিন মাসের বকেয়াও মেটাতে অস্বীকার করে কেন্দ্র। এই কথা জানার পরই ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে ডিভিশন বেঞ্চ। এজলাসে উপস্থিত কেন্দ্রের ডেপুটি সলিসিটর জেনারেলের উদ্দেশে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘কেন্দ্রের এই রিপোর্ট অস্পষ্ট। সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। আদালত এই রিপোর্ট গ্রহণ করবে না। প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পরও আপনারা কীভাবে এটা বলতে পারেন?’ তিনি আরও বলেন, ‘আপনারা বলছেন দুর্নীতি হয়েছে। তাহলে তদন্ত করুন। প্রয়োজনে সিবিআই ডাকুন। কিন্তু গরিব, নিরপরাধ মানুষকে এভাবে প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত করবেন না। একজনও যোগ্য হয়ে থাকলে টাকা আটকে রাখা যায় না। যাঁরা কাজ করেছেন, তাঁরা টাকা পাবেন না—এটা হতে পারে না।’