কানে কানে কলকাতা কানেকশন বিভাগে ফিরে যান

কীভাবে শুরু হয়েছিল বেতারের বিস্ময় ‘মহিষাসুরমর্দিনী’?

October 15, 2023 | 2 min read

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: পৃথিবীর ইতিহাসের এক বিস্ময় হল মহিষাসুরমর্দিনী। যা দীর্ঘ নয় দশক যাবৎ সম্প্রচারিত হচ্ছে, বেতারের ইতিহাসে এমন নজির দুটো নেই। ‘মহিষাসুরমর্দিনী’ প্রথম প্রচারিত হয় ১৯৩২ সালে ষষ্ঠীর দিন। তবে তার আগের বছর বাণীকুমার (বৈদ্যনাথ ভট্টাচার্য) ‘শ্রীশ্রীচণ্ডী’-র বিষয়বস্তু নিয়ে ‘বসন্তেশ্বরী’ নামে একটি কাব্য রচনা করেছিলেন। সে’বছরই চৈত্র মাসে বাসন্তীপুজোর সময়ে ‘বসন্তেশ্বরী’ সম্প্রচারিত হয়। সুর দিয়েছিলেন পণ্ডিত হরিশচন্দ্র বালী। সঙ্গীত পরিচালনায় ছিলেন রাইচাঁদ বড়াল। হঠাৎই তাঁরা ঠিক করলেন দুর্গাপুজোর ষষ্ঠীর সকালে এমন একটা অনুষ্ঠান করা যেতে পারে; সেই শুরু। বাণীকুমার লিখলেন। সাহায্য করলেন পণ্ডিত অশোকনাথ শাস্ত্রীর। কয়েকটি গানে সুর দিয়েছিলেন পণ্ডিত হরিশচন্দ্র বালী ও রাইচাঁদ বড়াল। বেশির ভাগ গানে সুর দিয়েছিলেন পঙ্কজকুমার মল্লিক।

গোড়ার কথা বলি, ১৯২৭-র ২৬ আগস্ট ইন্ডিয়ান ব্রডকাস্টিং কোম্পানি নামে এক বেসরকারি সংস্থা ১নং গার্স্টিন প্লেসে একটি ভাড়া বাড়িতে রেডিও স্টেশন স্থাপন করল। সংস্থার অধিকর্তা ছিলেন স্টেপলটন সাহেব। পরিকল্পনা হয় ‘ভারতীয়’ ও ‘ইউরোপিয়ান’ এই দুই ভাগে হবে অনুষ্ঠান। ভারতীয় প্রোগ্রামের ডিরেক্টর হিসেবে দায়িত্ব নিলেন নৃপেন্দ্রনাথ মজুমদার। কিছু দিনের মধ্যেই এলেন বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র ও বৈদ্যনাথ ভট্টাচার্য বা বাণীকুমার। যোগ দিলেন রাইচাঁদ বড়াল, হীরেন বসু। ঘোষক ও সংবাদপাঠক হিসেবে মোহনবাগানের ১৯১১ সালের ঐতিহাসিক শিল্ডজয়ী দলের হাফব্যাক রাজেন সেনগুপ্ত ছিলেন। ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে গেলেন পঙ্কজকুমার মল্লিক। বেতারকেন্দ্র থেকে একটি নিজস্ব মুখপত্র প্রকাশিত হবে, সম্পাদনার দায়িত্ব পড়ল প্রেমাঙ্কুর আতর্থীর উপর। ‘বেতার জগৎ’ প্রথম প্রকাশিত হল ১৯২৯-এর সেপ্টেম্বর মাসে। প্রেমাঙ্কুর আতর্থী একদিন বললেন, যা যা অনুষ্ঠান চলছে তার পাশাপাশি কিছু অভিনবত্ব আনাও দরকার। একমাস বাদে দুর্গাপুজো। বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র বললেন, যদি পুজোকে কেন্দ্র করেই কিছু করা হয় তাতে চণ্ডীপাঠ অবশ্যই থাকবে। তৈরি হয়ে গেল বিস্ময়, উস্তাদি যন্ত্রসঙ্গীতের সুরের সঙ্গে মিলে গেল চণ্ডীপাঠের সুর–এক অপূর্ব ধর্মীয় মেলবন্ধন।

১৯৩২ সালে ষষ্ঠীর সকালে ‘প্রত্যুষ প্রোগ্রাম’ শিরোনামে প্রথম সম্প্রচারিত হল মহিষাসুরমর্দিনী। পরের বছর হয় ‘প্রভাতী অনুষ্ঠান’ নামে, ১৯৩৬-এ ‘মহিষাসুর বধ’, ১৯৩৭ সালে শিরোনাম হয় ‘মহিষাসুরমর্দিনী’। প্রথম দু’বছর মানে ১৯৩২ ও ১৯৩৩ সালে অনুষ্ঠানটি ষষ্ঠীর ভোরে সম্প্রচারিত হয়েছিল, ১৯৩৪ সাল থেকে মহালয়া-র ভোরে সম্প্রচারিত হতে থাকে। মাঝে কয়েকবার অদলবদল হলেও, মহালয়ার ভোরেই মহিষাসুরমর্দিনীর সম্প্রচার স্থায়ীভাবে শুরু হয়।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#radio, #Podcast, #Drishtibhongi Podcast, #Durga Puja 2023, #Mahishasuramardini

আরো দেখুন