ভয়ঙ্কর ভূমিকম্পের খাঁড়া’ ঝুলছে ভারতে, আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: ভারতে ভয়ঙ্কর ভূমিকম্পের আশঙ্কা। আগামী দিনে ভারতে ভয়ানক ভূমিকম্প হতে পারে এমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা ৷ তাঁদের মতে, ২টি কন্টিনেন্টাল প্লেটের অবিরাম সংঘাতের কারণে নেপাল সহ গোটা হিমালয় ও আশেপাশের এলাকায় খুব বেশি ভূমিকম্প প্রবণ। এই এলাকায় ভারতীয় উপমহাদেশে বড়সড় ভূমিকম্পগুলির বেশিরভাগই হয়েছে। শুক্রবারের রাতের পর সোমবার বিকেলেও রিখটার স্কেল অনুযায়ী নেপালে বেশি মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পরিস্থিতিতে ভারতের হিমালয় সংযুক্ত অঞ্চল তো বটেই, দেশের বাকি অঞ্চলে ভূমিকম্পের আশঙ্কা। ভারতীয় এবং ইউরেশিয়ান প্লেটের মধ্যে নিরন্তর সংঘাতের কারণে হিমালয় এলাকা বেশি ভূমিকম্প প্রবণ। আবার দেশের অন্যান্য অংশে ভারতীয় প্লেটের মধ্যেই চলমান সংঘাতের কারণে ভূমিকম্পের সম্ভাবনা বাড়ছে।
অতীতে ভূমিকম্পের ঘটনাগুলি বিশ্লেষণ করে দেশকে পাঁচটি ‘সিসমিক জোন’-এ ভাগ করেছে বিশেষজ্ঞরা। পাঁচ নম্বর জোনে উত্তর-পূর্ব ভারত ছাড়াও উত্তরাখণ্ড, বিহার, জম্মু-কাশ্মীর, হিমাচল প্রদেশ, গুজরাতের কিছু অংশ রয়েছে সর্বাধিক ভূমিকম্প প্রবণ। ৪ নম্বর জোনের আওতায় কলকাতা, বিহার, উত্তরপ্রদেশ, দিল্লি, সিকিম, গুজরাত, পাঞ্জাব, লাদাখ, জম্মু ও কাশ্মীর, মহারাষ্ট্র, ছাড়াও উত্তরবঙ্গের প্রায় পুরো অংশ এবং দক্ষিণবঙ্গের কিছু অংশে ভূমিকম্প হওয়ার আশঙ্কা। ৩ নম্বর জোনের মধ্যে দক্ষিণবঙ্গের বাদবাকি এলাকা রয়েছে । আবহাওয়াবিদ ও ভূ-তত্ত্ববিদদের মতে, দক্ষিণবঙ্গে যদি বড়সড় ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল হয় তাহলে বেশি ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা থাকবে নিউটাউন, সল্টলেক অঞ্চলে। কারণ, এসব এলাকায় মাটি খুব ভঙ্গুর। জলাভূমি বোজানোর কারণেই এরকম মাটির চরিত্র হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
প্রসঙ্গত, ১৯৩৪ সালের ভূমিকম্পে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল উত্তরপ্রদেশ এবং বিহারে। যার তীব্রতা ছিল রিখটার স্কেলে ৮.১। ওই ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল বিহার-নেপাল সীমান্ত। GSI-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, সেই সময় কলকাতার মেটিয়াবুরুজ, বালিগঞ্জ, শোভাবাজার এলাকায় ভালোরকম ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। জিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার (GSI) অবসরপ্রাপ্ত ডিরেক্টর শিখেন্দ্র দে আশঙ্কা প্রকাশ করে জানিয়েছেন, ভারতীয় ভূত্বকীয় পাতের মধ্যে হওয়া সংঘর্ষের কারণেও ভূগর্ভে ‘চ্যূতি’ তৈরি হচ্ছে। ফলে প্রচুর পরিমাণে শক্তি নিঃসরণ হবে। এর প্রভাবে যে কোনও সময় ভূমিকম্প ঘটতে পারে। তিনি আরও জানিয়েছেন, কলকাতা থেকে ময়মনসিংহ পর্যন্ত বিস্তৃত সরলরৈখিক এলাকায় ভূমিকম্প হওয়ার বেশি আশঙ্কা রয়েছে।