পুজো স্পেশাল বিভাগে ফিরে যান

দীপান্বিতা কালীপুজোর দিনে শ্যামপুকুর বাটিতে কী লীলা দেখিয়েছিলেন রামকৃষ্ণ?

November 12, 2023 | 2 min read

দিনটা ছিল ১৮৮৫ সালের ৬ নভেম্বর, দীপান্বিতা কালীপুজোর দিন।

নিউজ ডেস্ক,দৃষ্টিভঙ্গি: গলার রোগের চিকিৎসা করানোর জন্য পরমহংসদেবের ভক্তরা, তাঁকে শ্যামপুকুর বাটিতে নিয়ে এসেছিলেন। সেখানেই ঠাকুর তাঁর জীবনে প্রাক অন্তিম লীলাটি দেখান। যা বরাভয় লীলা নামে পরিচিত। রামকৃষ্ণ সঙ্ঘের ভক্তদের মতে, ওই দিন স্বরূপ প্রকাশের মাধ্যমে ভক্তদের বরাভয় দান করেছিলেন পরমহংস দেব।

দিনটা ছিল ১৮৮৫ সালের ৬ নভেম্বর, দীপান্বিতা কালীপুজোর দিন। ৫৫ শ্যামপুকুর স্ট্রিটের ভাড়া বাড়িতে থেকেই রামকৃষ্ণ পরমহংসের চিকিৎসা চলছিল। অসুস্থ শরীরেও দক্ষিণেশ্বরের মা ভাবতারিণীর জন্য মন কাঁদছিল ঠাকুরের। তিনি জেদ ধরলেন অমাবস্যার রাতে কালীপুজো করবেন। সব জোগাড় করা হল। পুজোর দিন সন্ধ্যায় হয়ে গিয়েছে কিন্তু কেমন মূর্তি কেনা হবে, কীভাবে মায়ের পুজো হবে, সে ব্যাপারে ঠাকুর একেবারেই চুপ। সন্ধ্যে থেকে নিজের বিছানাতেই বসে আছেন তিনি। সময় বয়ে যাচ্ছে।

ভক্তরা চিন্তায়। শরৎ, শশী, রাম দত্ত, গিরিশ ঘোষ, চুনিলাল, মাস্টার মহেন্দ্র গুপ্ত, রাখাল, নিরঞ্জন, ছোট নরেন সব্বাই দোটানায়। গিরিশচন্দ্র ঘোষরা ঠিক করলেন ঠাকুরকেই কালীজ্ঞানে পুজো করবেন। ধ্যানস্থ ঠাকুরকে সামনে রেখেই শুরু হল পুজো। কথিত আছে, অঞ্জলি দেওয়ার মুহূর্তে ভাবসমাধি থেকে জেগে উঠেছিলেন শ্রীরামকৃষ্ণ। ভবতারিণীর মতোই তখন তাঁর দু-হাতে বর ও অভয় মুদ্রা। ঠাকুরের সেই রূপ দেখে স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিলেন ভক্তমণ্ডলী। পরমহংসদেবের সেই অলৌকিক রূপ আজও ঠাকুরের ‘বরাভয় লীলা’ নামে পরিচিত।

প্রসঙ্গত, ১৮৮৫ সালের আগস্ট নাগাদ ঠাকুরের গলার রোগ ধরা পড়ে। ডাক্তারি ভাষায় যার নাম ‘ক্লার্জিম্যানস থ্রোট’। ডাক্তার মহেন্দ্রলাল সরকারের পরামর্শেই শিষ্যরা রামকৃষ্ণকে দক্ষিণেশ্বর থেকে কলকাতার বাগবাজারে বলরাম বসুর বাড়িতে নিয়ে আসেন। ২ অক্টোবর সেখান থেকে শ্যামপুকুরের বাড়িতে নিয়ে আসা হয় তাঁকে। ২ অক্টোবর থেকে ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত, ৭০ দিন ধরে শ্যামপুকুরের বাড়িতে তাঁর চিকিৎসা চলে। পরে নিয়ে যাওয়া হয় কাশিপুর উদ্যানবাটিতে। উত্তর কলকাতার শ্যামপুকুর বাটিতে আজও নিয়ম মেনে প্রতিবছর দীপান্বিতা অমাবস্যায় কালীপুজো করেন ভক্তেরা। প্রথা মেনে আজও কালীপুজোর রাতে এখানে কালীজ্ঞানে শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণদেবকেই পুজো করা হয়। বাড়িটি এখন রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের অধীনে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#dipannita kalipujo, #ma kali, #Sri Sri Ram Krishna Paramhansa, #shyampukur bati

আরো দেখুন