আন্তর্জাতিক বিভাগে ফিরে যান

ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি! বিশ্ব তাপমাত্রার রেকর্ড ভেঙে উষ্ণতম বছর কী ২০২৩?

November 20, 2023 | 2 min read

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: ১৯৪০ সালের পর থেকে সবচেয়ে উষ্ণতম হওয়ার পথে রয়েছে ২০২৩? এমনটা‌ই জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কোপার্নিকাস ক্লাইমেট চেঞ্জ সার্ভিস (C3S) সহ বিশ্বের কয়েকটি নামী আবহাওয়া সংস্থা। বিশ্ব উষ্ণায়ণের থাবা কেবল ভারতে নয় গোটা বিশ্বের দেশগুলোতে একেবারে জাঁকিয়েই বসেছে। তাপমাত্রা যত বাড়ছে ততই বিশাল বিশাল হিমবাহে ফাটল ধরছে। ভেঙে যাচ্ছে মেরুপ্রদেশের হিমশৈল। বরফ গলে জল হয়ে সমুদ্রের জলস্তর বাড়াচ্ছে। আগামী দিনে এর প্রভাবে ভারত সহ একাধিক দেশে ভয়ঙ্কর বন্যা হতে পারে বলেও সতর্ক করেছেন বিজ্ঞানীরা। ১ লক্ষ ২৫ হাজার বছরের মধ্যে চলতি বছর সবচেয়ে উষ্ণতম বছর হিসেবে দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ২০২৩ সালের অক্টোবর সবচেয়ে উষ্ণতম ও রুক্ষ মাস। শুধু ভারত নয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অক্টোবর মাসে যেভাবে তাপমাত্রা বেড়েছিল ও ভয়ঙ্কর তাপপ্রবাহ শুরু হয়েছিল তাতে আগামী দিনে আরও বড় বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন বিজ্ঞানীরা।

নাসার রিপোর্ট অনুযায়ী, চলতি বছরে আবহাওয়ার এমন ভোলবদলের জন্য দায়ী ইউরোপে রেকর্ড তাপপ্রবাহ, গোটা সুমেরু ও ইউরেশিয়ার তাপমাত্রা আর পৃথিবীর গড় তাপমাত্রার বৃদ্ধি। ইউরোপের কোপারনিকাস ক্লাইমেট চেঞ্জ সার্ভিসের ডিরেক্টর সামান্থা বার্গেস জানিয়েছেন, চলতি বছর মারাত্মক তাপপ্রবাহ হয়েছে, অতিবৃষ্টি এবং এর ফলে ভয়ঙ্কর বন্যা ভাসিয়ে নিয়ে গেছে সব। ভয়াবহ দাবানল জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছারখার করেছে। বর্ষাকাল এলেও তেমনভাবে বৃষ্টি হয়নি।

১৯৫১-১৯৮০ সাল, এই তিন দশকে পৃথিবীর তাপমাত্রাকে ‘বেসলাইন’ ধরে দেখা গেছে, অক্টোবরে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা যা থাকা উচিত, সে তুলনায় এ বছরের অক্টোবর অনেক বেশি উষ্ণ। ‘কোপারনিকাস ক্লাইমেট চেঞ্জ সার্ভিস’ রিপোর্ট বলছে, অক্টোবরে বিশ্বে বাতাসের গড় তাপমাত্রা ছিল ১৫.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বিশ্বে প্রাক শিল্পায়ন যুগে ১৮৫০-১৯০০ সালের মধ্যে অক্টোবরে যে গড় তাপমাত্রা ছিল এটা তার থেকে ১.৭ ডিগ্রি বেশি। সেই রিপোর্টে আরও জানানো হয়েছে যে, পূর্ব এবং মধ্য প্রশান্ত মহাসাগরের উষ্ণ জলস্রোত এল নিনোর কারণে এ বছরে সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা বেড়েছে। ফলে তাপপ্রবাহ শুরু হয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। ক্যালিফর্নিয়া এবং টেক্সাসে তাপপ্রবাহ চলছে। আগামী দিনে তাপমাত্রা আরও বাড়বে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। চলতি বছর কানাডার কিছু জায়গাতেও দাবানল দেখা গেছে। ক্যালিফর্নিয়ার ভয়ঙ্কর দেখা দিয়েছে।

ইউরোপে গত ৭-৮ বছর ধরে খরা যেভাবে তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে উঠেছে, তা গত ২ হাজার বছরে রেকর্ড। গোটা ইউরোপ মহাদেশে বেড়েছে তাপপ্রবাহের ঘটনা। বিশ্ব উষ্ণায়নের জন্যই এটা হয়েছে। চলতি এপ্রিল থেকেই দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশে তাপমাত্রা রেকর্ড ছুঁয়েছে। রাষ্ট্রসঙ্ঘ স্বীকৃত আবহাওয়া সংস্থা ‘আইপিসিসি’-র তথ্য অনুযায়ী ১ লক্ষ ২৫ হাজার বছরের মধ্যে ২০২৩ উষ্ণতম হতে চলেছে। ১৯৯১-২০২০ সালের মধ্যে অক্টোবর মাসের গড় তাপমাত্রা থেকে এবছরের অক্টোবর ০.৮৫ ডিগ্রি বেশি ছিল।

গত ১২০ বছরের ইতিহাসে ভারতে পঞ্চম উষ্ণতম বছর ২০২৩। ২০২১ সাল ছিল গত ১৫০ বছরে বিশ্বের ষষ্ঠ উষ্ণতম বছর। গোটা বিশ্বে গত এক দশকে উষ্ণতম ছিল ২০১৬ এবং ২০২০। তাকেও ছাপিয়ে গেছে ২০২৩। গত বছরও তাপমাত্রার পারদ চড়েছিল। নোয়া-র পরিসংখ্যান বলছে, গত বছর বিশ্বের গড় তাপমাত্রা ছিল ১৪.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা সাড়ে ৫৮ ডিগ্রি ফারেনহাইট। আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, ২০২৪ সালের শুরুর বেশ কয়েকটি মাস এল নিনো থাকতে চলেছে। তাহলে ২০২৪ সালও কি আরও উষ্ণতম হবে, সেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#2023, #hottest year, #Record heat, #El Niño, #World Meteorological Organization, #Copernicus Climate Change Service

আরো দেখুন