খোলাবাজারে চাল-গম বেচতেই কি রাজ্যের প্রস্তাবে নারাজ মোদী সরকার?
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: বিপুল পরিমাণে চাল-গম মজুত রয়েছে মোদী সরকারের ভাণ্ডারে। খাদ্য সুরক্ষার স্বার্থে যে পরিমাণ খাদ্য মজুত রাখা প্রয়োজন, তার চেয়ে ঢের বেশি খাদ্য মজুত রয়েছে ভাণ্ডারে। সে’জন্য গত কয়েক মাস যাবৎ এফসিআই-র মাধ্যমেই ওপেন মার্কেট সেল স্কিমে ব্যবসায়ীদের গম-চাল বিক্রি করা চলছে। সেগুলি খোলাবাজারেও বিক্রি করা যাবে। তবে রাজ্য সরকারগুলি এই স্কিমের আওতায় খাদ্যশস্য কিনতে চাইলেও, তা দেওয়া হচ্ছে না। অনেকেই মনে করছেন, মোদী সরকার ইচ্ছে করলেই আমজনতার জন্য রেশন বরাদ্দ বাড়াতে পারত। কিন্তু সেদিকে এগোয়নি তারা।
বাংলার সরকার গম কিনতে চেয়েছিল। কিন্তু তাতে রাজি হয়নি মোদী সরকার। গম না পাওয়ায় এক বছরের বেশি সময় ধরে রাজ্যে খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্পের রেশন গ্রাহকদের গম দেওয়া যাচ্ছে না। জানা গিয়েছে, কেন্দ্র জানিয়েছে; ওপেন সেল স্কিমে রাজ্যের চাহিদা অনুযায়ী তারা গম দেবে না। বাংলা ছাড়াও কর্ণাটক সরকার এই স্কিমে চাল কেনার প্রস্তাব দিয়েছিল। তাতেও সাড়া মেলেনি। জানা গিয়েছে, ওপেন সেল স্কিমে ব্যবসায়ীরা গম কিনলেও, চাল কিনছেন না।
সূত্রে খবর, জুলাই মাসে এফসিআই-র মাধ্যমে খোলাবাজারে বিক্রির জন্য ই-অকশনের মাধ্যমে ২৫ লক্ষ টন চাল ব্যবসায়ীদের দেওয়া শুরু হয়। এখনও পর্যন্ত মাত্র ১ লক্ষ টন চাল তাতে বিক্রি হয়েছে। প্রতি কেজি চালের রিজার্ভ প্রাইস ৩১ টাকা থেকে কমিয়ে ২৯ টাকা করা হলেও, সাড়া মেলেনি। অন্যদিকে, মোদী সরকারের চালের ভাণ্ডার উপচে পড়ছে। ভাণ্ডারে এখন ২ কোটি টনের বেশি চাল মজুত রয়েছে। উল্লেখ্য, ন্যূনতম মজুতের পরিমাণ প্রায় ৭৬ লক্ষ টন। খরিফ মরশুম শুরু হতেই মজুত চালের পরিমাণ আরও বাড়ছে। মনে করা হচ্ছে, খরিফ মরশুমে ৫ কোটি টন চাল সরকারের ভাণ্ডারে মজুত হবে।
এখনও নতুন গম সরকারের মজুত ভাণ্ডারে আসেনি। বিগত মরশুমে কেনা গম এখনও ২ কোটি টনের বেশি মজুত রয়েছে। খাদ্য সুরক্ষা দিতে কমপক্ষে ১ কোটি ৪০ লক্ষ টন গম মজুত রাখার কথা সরকারের। গত ফেব্রুয়ারি-মার্চ থেকে এফসিআই ই-অকশনের মাধ্যমে প্রায় ৪০ লক্ষ টন গম ব্যবসায়ীদের বিক্রি করেছে। আগামী মার্চ পর্যন্ত এফসিআই ১ কোটি টন গম খোলাবাজারে ছাড়ার জন্য ব্যবসায়ীদের বিক্রি করার পরিকল্পনা নিয়েছে। সরকারের দাবি, খোলাবাজারের এইভাবে গম বিক্রির আদত উদ্দেশ্য, আটার দাম বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করা। প্রশ্ন উঠছে, সরকারের থেকে কম দামে গম কিনে তা থেকে উৎপাদিত আটা বিক্রি করে ব্যবসায়ীরা যে বেশি লাভ করবেন না; তার কি কোনও নিশ্চয়তা আছে?