পড়াশোনা-খেলাধুলোয় নয়, এখন কৈশোর কাটছে সোশ্যাল মিডিয়ায়! উদ্বেগজনক তথ্য সমীক্ষায়
নিউজ ডেস্ক,দৃষ্টিভঙ্গি: মোবাইল ফোন, আমাদের জীবনের সঙ্গে মিশে যাওয়া এক যন্ত্রের নাম। আমাদের সার্বক্ষণিক সঙ্গী। আর আধুনিক জীবনের নানা হিসেব পালটে দেওয়া মুঠোফোন। নানা কাজে অকাজে মুঠো ফোন ব্যবহার করতে করতে কখন যেন ওই এতটুকু যন্ত্রটাই চালাতে শুরু করেছে আমাদের। বুঝতেই পারিনি। সম্প্রতি এক সমীক্ষা বলছে, দেশের কৈশর এখন বুঁদ হয়ে থাকছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। ‘প্রথম-অসর রিপোর্ট ২০২৩’ গোটা দেশের এই উদ্বেগজনক ছবি সামনে এনেছে।
সমীক্ষার রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, গ্রাম-ভারতের কৈশোর দেদার স্মার্টফোন ব্যবহার করছে। কিন্তু পড়াশোনা বা সেই সংক্রান্ত কোনও কাজের বদলে স্কুলপড়ুয়ারা সোশ্যাল মিডিয়ায় বুঁদ হয়ে থাকছে। রিপোর্টে একদিকে যেমন রয়েছে দেশের শিক্ষাব্যবস্থার বেহাল চিত্র, তেমনই স্পষ্ট বলা হয়েছে, স্মার্টফোনের মতো বৈদ্যুতিন গ্যাজেটের অপব্যবহারে পড়াশোনার মান নেমে যাচ্ছ। দেশের ১৪ থেকে ১৮ বছর বয়সি ৩৪,৭৪৫ জন কিশোর-কিশোরীর মধ্যে সমীক্ষা চালিয়ে রিপোর্টটি তৈরি করেছে ‘প্রথম’ নামক এই সর্বভারতীয় সংস্থা। দেশের ২৬টি রাজ্যের ২৮টি জেলায় সমীক্ষা চালিয়েছে তারা। সবগুলি জেলাই গ্রামপ্রধান। উত্তরপ্রদেশ এবং মধ্যপ্রদেশ বড় রাজ্য হওয়ায় সেখান থেকে দু’টি করে জেলাকে নেওয়া হয়েছে। বাকি রাজ্যগুলির ক্ষেত্রে একটি করে জেলা বেছে নেওয়া হয়। পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে সমীক্ষকরা কোচবিহারকে বেছে নিয়েছিলেন। পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয় ওই জেলার সমীক্ষায় সহযোগিতা করে সংস্থাটিকে।
সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে কোচবিহারে ৮৩.৬ শতাংশ কিশোর-কিশোরীর বাড়িতে স্মার্টফোন রয়েছে। ৯২.১ শতাংশ কিশোর-কিশোরী স্মার্টফোনের ব্যবহারও জানে। কিন্তু সমীক্ষার আগের সপ্তাহে মাত্র ৫৫.১ শতাংশ ছাত্রছাত্রী পড়াশোনার কাজে অন্তত একবার স্মার্টফোন ব্যবহার করেছে। আর ৮৩.৮ শতাংশ স্মার্টফোন ব্যবহার করেছে সোশ্যাল মিডিয়ার জন্য। গুগল ম্যাপ ব্যবহার করতে জানে মাত্র ২২ শতাংশ ছেলেমেয়ে। তবে ৮০.৩ শতাংশই ইউটিউবে পছন্দসই ভিডিও খুঁজে বার করতে পারে। ফোনে অ্যালার্ম দিতে পারে মাত্র ৪৬.৮ শতাংশ ছেলেমেয়ে। আর ইন্টারনেট ঘেঁটে তথ্য সংগ্রহ করতে পারে মাত্র ৪৫.৩ শতাংশ।
সমীক্ষায় আরও উঠে এসেছে, স্মার্টফোন ব্যবহার করে বিল পেমেন্ট, অনলাইন ফর্ম পূরণ, টিকিট বুক করার মতো দরকারি কাজগুলি করতে পারে গ্রামীণ ভারতের ২৫ শতাংশের কিছু বেশি কিশোর-কিশোরী। অথচ, মোবাইলেই বিনোদনের নানা অনুষঙ্গ খুঁজে নিতে তারা এক পায়ে খাড়া।
সমীক্ষাতে আরও একাধিক উদ্বেগের তথ্য় সামনে এসেছে। ১৪-১৮ বছর বয়সিদের মধ্যে অন্তত ৪২.৭ শতাংশ পড়ুয়া ইংরেজিতে একটা বাক্যও পড়তে পারেন না। ১৪-১৮ বছর বয়সি ২৫ শতাংশ পড়ুয়া দ্বিতীয় শ্রেণির পড়াটাও নিজের আঞ্চলিক ভাষাতেও ভালো করে পড়তে পারে না।