Farmers Protest: কৃষকদের আটকাতে দিল্লিতে জারি ১৪৪ ধারা, অনড় ‘অন্নদাতা’রা
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: কৃষকদের কর্মসূচির আগে দিল্লিজুড়ে জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা। আগামী ১২ মার্চ পর্যন্ত টানা একমাস তা চলবে। আজ মঙ্গলবার দিল্লি যাত্রার ডাক দিয়েছেন পঞ্জাব, হরিয়ানার হাজার হাজার কৃষক। তার আগেই তড়িঘড়ি দু’টি বড় স্টেডিয়ামে অস্থায়ী জেল তৈরি করল হরিয়ানা সরকার। সিরসার চৌধুরি দলবীর সিংহ ইন্ডোর স্টেডিয়াম এবং ডাবওয়ালির গুরু গোবিন্দ সিংহ স্টেডিয়াম দু’টিকে অস্থায়ী জেলে রূপান্তরিত করা হয়েছে। কৃষকেরা মিছিল নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার সময় কোনও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হলে তাঁদের আটক করে ওই দু’টি জেলে রাখা হবে বলে সূত্রের খবর।
ট্রাক্টর নিয়ে দিল্লির উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন পাঞ্জাব ও হরিয়ানা সহ অন্যান্য রাজ্যের কৃষকরা। এদিকে সমাধান সূত্র খুঁজতে সোমবার আরও একদফা কৃষক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন তিন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযূষ গোয়েল, অর্জুন মুন্ডা ও নিত্যানন্দ রাই। সোমবার সন্ধ্যা ছ’টায় বৈঠক শুরু হয়। প্রায় সাড়ে পাঁচ ঘণ্টার বৈঠক শেষে আন্দোলনকারীরা জানান, মঙ্গলবার দিল্লি চলো অভিযান হচ্ছেই। সরকারের কাছে নির্দিষ্ট কোনও প্রস্তাব নেই। কৃষকদের আন্দোলন নিয়ে তারা আদতে ‘টাইমপাস’ করতে চাইছে। তাঁরা দাবি করেছেন, কেন্দ্র-কৃষক বৈঠক আবারও ব্যর্থ হয়েছে। সূত্র জানাচ্ছে, বিদ্যুৎ সংশোধনী বিল, ২০২০ প্রত্যাহার করতে রাজি হয়েছে কেন্দ্র। লখিমপুর খেরি কাণ্ডে নিহত কৃষকদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতেও রাজি হয়েছে। সূত্রের খবর, ২০২০ সালের কৃষক আন্দোলনে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে যে মামলা দায়ের করেছিল পুলিস, সেগুলো প্রত্যাহারের আশ্বাস দিয়েছে সরকার। তবে এমএসপিকে আইনের আওতায় নিয়ে আসার ব্যাপারে কোনও ঐকমত্য হয়নি।
আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার সকাল ১০টায় পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে দিল্লির উদ্দেশে রওনা দেবেন তাঁরা। শুরু হবে ট্রাক্টর মিছিল। অন্যদিকে, বৈঠক শেষে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অর্জুন মুন্ডা জানিয়েছেন, কেন্দ্র কৃষকদের যাবতীয় বিষয়ে প্রথম থেকেই সিরিয়াস। কিছু বিষয়ে সহমত হওয়া গিয়েছে। বাকি বিষয় নিয়ে আমরা একটি কমিটি গঠনের প্রস্তাব দিয়েছি। সেই স্থায়ী কমিটিই সবদিক খতিয়ে দেখবে। আলোচনার মাধ্যমেই সমস্যার সমাধান হবে বলে আমাদের বিশ্বাস।
এদিকে বিক্ষোভকারীরা যাতে অন্যান্য জেলা থেকে হরিয়ানায় ঢুকতে না পারেন, সেই উদ্দেশ্যে রাজ্যের সীমানায় নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। অতিরিক্ত ৫০ কোম্পানি পুলিশ মোতায়েন করেছে সে রাজ্যের সরকার। হরিয়ানার মনোহর লাল খট্টর সরকার ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখার কথা জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিও জারি করেছে। সেই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, অশান্তি এড়াতেই অম্বালা, কুরুক্ষেত্র, কইথাল, জিন্দ, হিসার, ফতেহাবাদ এবং সিরসা জেলায় মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত মোবাইলের ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ থাকবে। গ্রাহকেরা শুধুমাত্র ‘ভয়েস কল’ করতে পারবেন।
কৃষকদের মিছিল নিয়ে সতর্ক দিল্লিও। দিল্লির সীমান্তে জায়গায় জায়গায় কংক্রিটের দেওয়াল তৈরি করা হয়েছে। বসানো হয়েছে কাঁটাতারের বেড়া এবং পেরেকের পাটাতন। মোতায়েন রয়েছে বিশাল পুলিশবাহিনী। কৃষকদের দিল্লিতে ঢুকতে বাধা দেওয়ার ব্যবস্থার জন্য কেন্দ্রের পদক্ষেপের সমালোচনা করেছে বিরোধী দল এবং কৃষক সংগঠনগুলি।