সামুদ্রিক চিংড়ি রপ্তানিতে বাধা আমেরিকার, সমস্যার সমাধানে তৎপর মৎস্য দপ্তর
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: আমেরিকা এদেশ থেকে যত চিংড়ি কিনছে, তার পুরোটাই চাষের চিংড়ি। অর্থাৎ পুকুর, খাল-বিলের চিংড়ি। সেই তালিকায় বাদ নেই বাংলাও। সমুদ্র থেকে যে সুস্বাদু ও পেল্লায় চিংড়ি উঠছে, তা পাঁচ বছরের উপর কিনছে না আমেরিকা (America)।
কয়েক বছর আগে আমেরিকার ন্যাশনাল ওশানিক অ্যান্ড অ্যাটমস্ফিয়ারিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ভারতকে জানায়, সমুদ্র থেকে চিংড়ি (shrimps) তোলার সময় ‘টার্টেল এক্সক্লুডার ডিভাইস’ নামে একটি বিশেষ ব্যবস্থা রাখতে হবে জালে। বিশ্বে কচ্ছপের সংখ্যা দ্রুত হারে নামতে থাকায়, জীববৈচিত্র্য ধরে রাখতেই এই সিদ্ধান্তের কথা জানায় আমেরিকা (US)। এই ডিভাইসে মৎস্যজীবীদের জালে শুধু চিংড়িই উঠবে, কচ্ছপ নয়। এর আগে মার্কিন টিম ভারতের এসে হাতকলমে দেখতে চেয়েছিল, সেই পদ্ধতি ঠিকমতো পালন করা হচ্ছে কি না। কিন্তু তাতে তারা সন্তুষ্ট হয়নি।
চিংড়ি ধরার সময় জালে কচ্ছপ ধরা পড়ছে না, এমন গ্যারান্টি দিলে তবেই তারা মাছ আমদানি করবে, এমনই গোঁ ধরেছে আমেরিকা। এরপর মার্কিন সংস্থা বেশ কিছু পরামর্শ দেয় জাল তৈরি-সহ কয়েকটি ব্যাপারে। সেইমতো তৈরি হয়েছে পরিকাঠামো, এমনটাই দাবি। সম্প্রতি কেরলের কোচিতে ফের এসেছে মার্কিন টিম। তারা দেখতে এসেছে এখানে সমুদ্রে কচ্ছপ বাঁচিয়ে চিংড়ি ধরা হচ্ছে কি না। কেরলের পাশাপাশি যেহেতু ওড়িশা, অন্ধ্রপ্রদেশ, তামিলনাড়ু, গোয়া, কেরল, কর্ণাটক, মহারাষ্ট্র এবং গুজরাতের সঙ্গেই পশ্চিমবঙ্গের (West Bengal) বহু মানুষ সমুদ্র থেকে চিংড়ি ধরে জীবিকানির্বাহ করেন, তাই এরাজ্যের মতামত ও পদক্ষেপ সম্পর্কে জানতে চেয়েছে আমেরিকা। সেইমতো রাজ্য মৎস্য দপ্তর কোচিতে উচ্চপদস্থ আধিকারিক পাঠাচ্ছে। দেশীয় মৎস্যজীবীদের পাশে দাঁড়াতে কোচিতে তৈরি থাকছে বাণিজ্য মন্ত্রকের অন্তর্গত মেরিন প্রোডাক্টস এক্সপোর্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটি অব ইন্ডিয়া।
রাজ্যের মৎস্যমন্ত্রী বিপ্লব রায়চৌধুরী (Biplab Roy Chowdhury) বলেন, আমরাও চাই প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় রেখে চিংড়ি রপ্তানি হোক। সেইমতোই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে শুধু সামুদ্রিক চিংড়ি নয়, ঘরোয়া চিংড়ি উৎপাদনও যাতে স্বাস্থ্যসম্মত হয়, তার উপরেও যথেষ্ট জোর দেওয়া হচ্ছে।